• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:৩৪

বাফুফের কাঠাগড়ায় কোচ হ্যাবিয়ের কাবরেরা

পথরেখা অনলাইন : পাঁচদিনের ব্যবধানে দুইবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফিলিস্তিনের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিনে খেলা হওয়ায় এক পয়েন্ট পাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু যোগ করা সময়ে গোল হজম করে ১-০ গোলে হারতে হয়েছে। বিশেষ করে এই ম্যাচে বদলি গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবনের ভুলেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন মাঠে উপস্থিত দর্শক থেকে শুরু করে, কোচ, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, সংবাদকর্মীরা। কারণ দলে আনিসুর রহমান জিকো থাকলেও তাকে নামানোর প্রয়োজন বোধ করেননি কোচ হ্যাবিয়ের কাবরেরা। শেষ মুহুর্তের গোলে পরাজয়েল পর ভীষন চটেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। পারফরম্যান্সের বিচারে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো এখন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের তৃতীয় গোলরক্ষক! সাম্প্রতিক সময়ে মাঠ এবং মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় তার এই অবনমন। দেশের ফুটবলাঙ্গনে বেশ কিছুদিন ধরেই জিকোকে নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। তবে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হোম ম্যাচ শেষে আলোচনায় এসেছেন জিকো। গত মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাছাইয়ে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ দিকে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল মারমা আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন।
 
শাস্তি কাটিয়ে ফিরলেও রিজার্ভ বেঞ্চে তখন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক জিকো থাকলেও, স্বাগতিক দলের স্প্যানিশ প্রধান কোচ হ্যাবিয়ের ক্যাবরেরা মাত্র এক ম্যাচ খেলা মেহেদী হাসান শ্রাবণকে মাঠে নামান। মিতুল যখন মাঠ ছাড়েন তখন ম্যাচের বয়স ৮৩ মিনিট। স্কোরলাইন ছিল ০-০। র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে এক পয়েন্ট হাতের মুঠোয় ছিল বাংলাদেশের। অথচ স্বাগতিকরা যোগকরা সময়ের চতুর্থ মিনিটে রক্ষণের এক ভুলে গোল হজম করে ফিলিস্তিনের কাছে ৩ পয়েন্ট জমা রেখেই মাঠ ছেড়েছে। এই গোলের জন্য বদলি গোলরক্ষক নির্বাচনকে ভুল বলছেন জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক ছাইদ হাসান কানন। ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘গোলরক্ষক হিসেবে শ্রাবণ একেবারেই নবীন। তার পক্ষে এত চাপের মুহূর্তে খেলা দুরূহ ছিল। সে মাঠে নামার পরপরই একটি সাধারণ ফ্লাইট মিস করেছে। সেখান থেকেই বাংলাদেশের রক্ষণে অতিরিক্ত চাপ ও নড়বড়ে ভাব এসেছে। গোলপোস্টের নিচে অভিজ্ঞ ও ভালো গোলরক্ষক থাকলে রক্ষণভাগও খানিকটা নির্ভার থাকতে পারে। ভুল গোলরক্ষক নির্বাচন ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হোম ম্যাচে হারের অন্যতম কারণ।’
 
জাতীয় দলের আরেক সাবেক গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য্য কিছুদিন আগেও জাতীয় দলের গোলরক্ষক কোচ ছিলেন। জিকোর পরিবর্তে শ্রাবণকে নামানোর যৌক্তিকতা না দেখে তিনি বলেন, ‘ম্যাচের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অভিজ্ঞ জিকোকেই বদলি হিসেবে মাঠে নামানো উচিৎ ছিল। গোলকিপিং শুধু গোল ঠেকানো নয়, দলকে নেতৃত্ব দেওয়াও। গোলরক্ষক পেছন থেকে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের অবস্থান দেখে সতর্ক করতে পারেন। জিকো থাকলে হয়তো এমন পরিস্থিতি নাও হতে পারতো।’ মূলত দলের একাদশ গঠন ও খেলোয়াড় পরিবর্তনের দায়িত্ব প্রধান কোচের। তবে গোলরক্ষক নির্বাচন বা বদলের ক্ষেত্রে গোলরক্ষক কোচের বড় ভূমিকা সব সময়ই থাকে। তাই সাবেক গোলরক্ষক ছাইদ হাসানের কাঠগড়ায় জাতীয় দলের বর্তমান গোলরক্ষক কোচও, ‘একাদশে কোন গোলরক্ষক খেলবে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে গোলরক্ষক পরিবর্তন করতে হলে সেটা গোলরক্ষক কোচের মাধ্যম হয়েই প্রধান কোচের কাছে যাওয়ার নিয়ম। জানি না জাতীয় দলে কি অনুসরণ করা হয়!’
 
শ্রাবণকে মিতুল মারমার বদলি হিসেবে নামানো নিয়ে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই ব্যাখায় ক্যাবরেরা প্রকারান্তরে বুঝিয়েছেন জিকো এখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের তিন নম্বর গোলরক্ষক। কোচের এমন মন্তব্যে ব্যথিত জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক কোচ বিপ্লব, ‘জিকো একদিনে তৈরি হয়নি। জিকো এই বয়সে যদি তৃতীয় গোলরক্ষক হয়ে যায়, তাহলে কিছুদিন পর হারিয়ে যাবে। যা আমাদের দেশের ফুটবলের জন্য বড়ই ক্ষতিকর।’ জাতীয় দল ও বসুন্ধরা কিংসের নিয়মিত গোলরক্ষক ছিলেন আনিসুর রহমান জিকো। গত বছর সেপ্টেম্বরে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে এএফসি কাপ খেলে মালদ্বীপ থেকে ফেরার পথে মদকান্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ওই অপরাধে বসুন্ধরা কিংস ৩১ মার্চ পর্যন্ত তাকে নিষিদ্ধ করে। এজন্য জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অক্টোবর ও নভেম্বরের ম্যাচ মিস করেন জিকো। গত ডিসেম্বরে বসুন্ধরা কিংস নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে মার্চ উইন্ডোতে জিকো ফের জাতীয় দলে ফিরেন। মিতুল মারমা লেবাননের বিপক্ষে ভালো করায় তিনি চলতি মার্চ উইন্ডোতে প্রথম একাদশে ছিলেন।
 
কিন্তু মিতুলের ইনজুরিতে জিকোর পরিবর্তে শ্রাবণকে নামিয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কোচ ক্যাবরেরা। সেই পুরোনো রোগ, শেষ মুহূর্তের গোলে ফিলিস্তিনের কাছে বাংলাদেশের হার। পাঁচদিন আগেই এই ফিলিস্তিনের কাছে পাঁচ গোল হজম করেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। এবার বসুন্ধরার কিংস এরেনায় নিজেদের চেয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটিকে প্রায় আটকেই দিয়েছিলেন কাবরেরার শিষ্যরা। কিন্তু হৃদয় ভেঙেছে ম্যাচের যোগ করা সময়ে। সেই পুরোনো রোগ, শেষ মুহূর্তে গোল খাওয়ার চিরকালীন অভ্যাস আরেকবার হতাশায় ডোবালো বাংলাদেশকে। সুযোগ পেয়েও গোল করতে না পারার পাশাপাশি শেষ সময়ে এসে গোল হজমের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবার আহবান জানিয়েছেন সাবেক খেলোয়াড়রা।
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।