পথরেখা অনলাইন : মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এতে জাপান বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এটি ছাড়াও সোমবার একনেক সভায় আরও তিনটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, সহজ শর্তে বিদেশি ঋণযুক্ত প্রকল্পে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। অনুমোদিত ৪ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা। যার ৬৫ ভাগই হবে বৈদেশিক ঋণে। অপচয় রোধে প্রকল্প বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি করবে সরকার।
বিদায়ী সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় কম গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রকল্প নেয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পরই সেগুলো কাটছাঁটে তালিকা তৈরি শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা রাজনৈতিক প্রকল্প বাদ দেয়া হচ্ছে। কমানো হচ্ছে অন্যান্য প্রকল্পের পরিধি।
একনেকে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকায় কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণের প্রকল্প পাস হয়। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৬ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৯ সাল নাগাদ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এটা আমরা সাহস করে করলাম এ কারণে যে অনেকদিন ধরে চীন করবে, না ভারত করবে এ নিয়ে বহু টানাপড়েন চলছিল। কোনো কিছুই হচ্ছিল না। এটা এ কারণে বললাম যে এটা ভূরাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ একটি বড় প্রকল্প। আমরা ভাবলাম যে, জাপান কিন্তু একটি দেশ, আমি আগেই বলেছি খুব সহজ শর্তে ঋণ দেয়।’
উপদেষ্টা জানান, সরকার বিদেশি মুদ্রার জোগান বাড়াতে সহজ শর্তের ঋণযুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। জানা যায়, দীর্ঘমেয়াদি এসব ঋণে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে নীতিমালাও তৈরি করা হবে। রাজধানী শহরে মানুষের চাপ কমাতে ঢাকার আশেপাশে ও বিভাগীয় শহরের নাগরিক সুবিধা বাড়াতে চায় সরকার। এজন্য একনেকে ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে তারা ওই ৩০ বছর পরও আবার নতুন প্রকল্পে স্থানান্তর করে। কাজেও ওখানে যে ঋণের বোঝা বাড়ছে না, এ ধরনের বিদেশি অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোতেই আমরা আগে হাত দিচ্ছি। কিন্তু যেগুলো আমাদের বেশি জরুরি দরকার বলে মনে করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পে গাড়ি কেনায় ব্যয় কমাতে সারাদেশে সরকারি গাড়ির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এসব গাড়ির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেলে বাজারে মন্দা তৈরির শঙ্কা তুলে ধরেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। ব্যয় না বাড়িয়ে একনেকে ৭ প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় বাড়ানো হয়।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কমে গেছে। শিল্প, ব্যাংকের অনেক উদ্যোক্তা নিরুদ্দেশ। সরকারি বিনিয়োগও জোরে শোরে করা যাচ্ছে না। প্রকল্প যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। কোনো কোনো প্রকল্পের নকশা, পরিধিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সরকারি -বেসরকারি বিনিয়োগ কমে গেলে বাজারে মন্দা তৈরির শঙ্কা দেখা দেয়।’
পথরেখা/এআর