• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৩৮

মেয়েদের সাফল্যে প্রাণিত জামালরা

  • ক্রীড়া -ফুটবল       
  • ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২       
  • ৭৪
  •       
  • ২৪-০৯-২০২২, ২০:৫৮:৫৪

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : জনপ্রিয়তায় দেশের এক নাম্বার খেলা ক্রিকেটকে এবার টেক্কা দিয়েছে ফুটবল। ছোট করে বললে মেয়েদের ফুটবল। প্রথমবারের মতো দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় সারাদেশই রীতিমতো বুদ হয়ে রয়েছে তাদেরকে নিয়ে। ব্যস্ততায় জাতীয় দলের পাশাপাশি মেয়েদের দল ও বয়সভিত্তিক মিলিয়ে ফুটবল এখন ক্রীড়াঙ্গনের রোল প্লে করছে। নারীদের জাতীয় দল প্রথমবারের মতো সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জেতার পর এবার অধরা এক জয় পেয়েছে পুরুষ জাতীয় দল। মেয়েদের মতোই বিদেশের মাটিতে দীর্ঘ ১০ মাস পর জয় পেয়েছে জামাল ভুইয়ার দল। মেয়েদের দলের পর ছেলেদের দলের সাফল্য খেলাটির হারানো দিন ফিরে পেতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন খেলাটির সাথে সংশ্লিষ্টরা। যদি বলা হয়, সাফল্যের সোনা রোঁদে বাংলাদেশের ফুটবল তাহলে এখন অন্তত খুব বেশি বাড়িয়ে বলা হবেনা। মহিলা সাফে সাবিনা খাতুনদের সাফল্য অবশ্যই চাপে ফেলে দিয়েছিল জামাল ভূঁইয়াদের। সাথে চাকরি টিকিয়ে রাখার ঝুঁকিতে ছিল কোচ হাভিয়ার কাবরেরারও। গত বছর সাফ এবং শ্রীলঙ্কার চার জাতি ফুটবলে ব্যর্থতার পর নতুন কোচের অধীনে টানা ছয় ম্যাচ খেলে জয়ের দেখা মিলছিলনা। এরই মধ্যে সাবিনা খাতুনের দল জিতে আসেন সাফ ফুটবলের ট্রফি। 
 
যার ফলে ফিফা প্রীতি ম্যাচে জয়ে যে বাধ্যবাধকতা দাঁড়ায় সে মিশনে সফল জামাল ভূঁইয়ারা। গত পরশু ফিফা প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে ১০ মাস পর বিজয়ের হাসি বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের। জাতীয় দল সর্বশেষ গত বছর ১৩ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার চার জাতি ফুটবলে ২-১ গোলে হারিয়ে ছিল মালদ্বীপকে। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ১৭৪ এ অবস্থান কম্বোডিয়ার। অন্যদিকে বাংলাদেশের ১৯২। যদিও র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকার কোনো প্রমাণ রাজধানী নমপেনে বাংলাদেশ দলের সামনে দিতে পারেনি তারা। দূর থেকে কিছু শট আর কয়েকটি হাফ চান্স ছাড়াই ছিল অস্ত্র। বিপরীতে অ্যাওয়ে ম্যাচে যে ঢঙে খেলা উচিত সেই স্টাইলেই কাউন্টার অ্যাটাকে গোল আদায় করে নেয় কাবরেররা দল। বিপক্ষ রক্ষণভাগে সৃষ্ট বিশাল গ্যাপকে পুঁজি করেই ২৩ মিনিটে অতিথি দলটির এগিয়ে যাওয়া। স্ট্রাইকার মতিন মিয়ার আড়াআড়ি পাসে বক্সের বাইরে বল পান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার রাকিব হোসেন। এরপর ডান পায়ের তীব্র শটে পরাস্ত করেন কম্বোডিয়ান গোলরক্ষককে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই প্রতিশ্রতিশীল হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন তিনি। এক মৌসুম আগে চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলার সময়ই নজর কেড়েছিলেন। এবার পেলেন জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোলের দেখা।
 
তিন বছর আগে ২০১৯ সালে জাতীয় দলে তাঁর অভিষেক। সেই থেকে ১০/১২টি ম্যাচ খেলেও ফেলেছেন। কিন্তু কখনো জাতীয় দলের জার্সিতে গোলের দেখান পাননি। সেই গোলের দেখা অবশেষে পেলেন রাকিব হোসেন। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশ যে জিতেছে সেটি তাঁর গোলেই। নমপেনের স্টেডিয়াম ছেড়ে হোটেলে ফিরে রাকিব হোসেন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘কম্বোডিয়ার বিপক্ষে জয় পাব এমন প্রত্যাশা আমাদের সবারই ছিল। বলা যায় দলের সবাই বেশিই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল জয় পাওয়ার ব্যপারে। সবাই এই ম্যাচের আগে কঠিন পরিশ্রমও করেছে। কারণ, সবাই চেয়েছে জয় নিয়েই আমরা যেন কম্বোডিয়া থেকে দেশে ফিরতে পারি।’ নদী বেষ্টিত বরিশাল সদর থেকে উঠে আসা রাকিব এখন বাংলাদেশের ফুটবলে অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আবার কারও কারও চোখে রাকিবের চেয়ে ভালো উইঙ্গার এই মুহূর্তে নেই বাংলাদেশে। তাঁর গতি এতটাই ভালো যে, প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে পারেন। মালদ্বীপে সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর খেলা অনেকেরই নজর কেড়েছে। সেই রাকিব এবার দলকে জিতিয়ে বেশ খুশি। 
 
রাকিবের প্রথম গোলের মতো বাংলাদেশের কোচ হিসেবে জাতীয় দলে হাভিয়ের কাবরেরারও এটি প্রথম জয়। তাঁর অধীনে প্রথম ছয় ম্যাচে চার পরাজয়েল বিপরিতে দুই ড্র। সাবিনা-কৃষ্ণাদের সাফ জয়ের রেশ কাটেনি এখনো। এরই মধ্যে জয়ের আনন্দে মাতলেন জামাল ভূঁইয়ারা। নমপেন জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়াকে হারিয়ে অতি প্রয়োজনীয় সময়ে জয় পেয়েছে লাল সবুজ প্রতিনিধিরা। সব মিলিয়ে সাত ম্যাচ আর ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক কোনো ফুটবল ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। হাভিয়ের কাবরেরা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ছয় ম্যাচে জয় পায়নি বাংলাদেশ। খরাটা কাটল এই ম্যাচেই। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবেন জামাল ভূঁইয়ারা। ২০১৯ সালে নমপেনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। তিন বছর পর আবারও নমপেনে দেখা দুই দলের। এবার স্টেডিয়াম বদলালেও ফলটা একই রইল। র‌্যাংকিংয়ে কম্বোডিয়া এগিয়ে থাকলেও তাদের সঙ্গে হারের তেতো স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় চার, ড্র একটি। আর এদিন ছিল কম্বোডিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক জয়।
 
র‌্যাংকিং এ এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে এখনো জয়ের দেখা পায়নি আশিয়ান অঞ্চলের দেশটি। তাইতো যদি বলা হয় এই ম্যাচ দিয়ে চাকুরিটা আগামী কয়েক মাসের জন্য নিশ্চিত করেছেন কাবরেরা তাহলে ভুল কিছু বলা হবেনা। বাংলাদেশের ফুটবলে অতি প্রয়োজনীয় সময়ে এক জয় এসেছে। বড় বড় স্বপ্ন দেখা লাল সবুজ পতাকাধারীরা র‌্যাংকিং এ পেছাতে পেছাতে ১৯২ নাম্বারে নেমে গেছে। শত চেষ্টা করেও র‌্যাংকিং এ খুব বেশি এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তাইতো ফিফা উইন্ডোতে বেশি বেশি ম্যাচ খেলার লক্ষ্য জামাল ভুইয়ার দলের। সামনের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে জয় পেলে ফুটবল নিয়ে যে হতাশা বিরাজ করছে সেটা কিছুটা হলেও কাটানো সম্ভব হবে।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।