পথরেখা অনলাইন : মৌরি খাওয়ার উপকারিতমৌরি অনেকেই চেনন না। বেশির ভাগ মানুষই একে জানে মিষ্টি জিরা হিসেবে। রান্নাকে সুস্বাদু করতে আমরা মৌরি ব্যবহার করি। খাবারের পর কয়েকটা মৌরি মুখে না পুরলে অনেকের মন আবার ভরে না। অনেকে পানের সাথে মৌরি চিবুতে পছন্দ করেন। আর পছন্দ করবেনই না কেন! মৌরির মিষ্টি রসে যে পানের রসও মিষ্টি হয়
মৌরিগাছ দেখতে শুলফা গাছের মতো। অনেকে ওকে শুলফা গাছ বলে ভুলও করেন। মৌরিগাছ লাগাতে হয় বছরে একবার। মৌরিগাছ সাধারণত ৩/৪ ফুট উঁচু হয়ে থাকে। তবে অনেক জায়গায় ৫/৬ ফুটও উঁচু হয়। মৌরিফুল বা বীজ হয় ছাতার মতো থোকা থোকা। যে ডাঁটায় ফুল ফোটে তা’ হয় ফাঁপা। তাতে বিশেষ পাতা থাকে না। বসন্তের শেষ দিকে বীজ পাকে। বীজ পাকলেই মৌরিগাছ মরে যায়। কাঁচা অবস্থায় এই বীজের রং থাকে সবুজ। পাকলে হয় হালকা হলুদ। আবার পুরনো হলে এর রঙ ও থাকে না। অনেক দেশে মৌরির পাতা রান্নার উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
স্বাস্থ্য সমস্যায় মৌরি খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ারর নিয়ম
মৌরিতে আছে অসাধারণ ঔষুধি গুণ, যা আমাদের নানা অসুখ-বিসুখে কাজে লাগে। ঠিক এমনই কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন মৌরি।
১. অজীর্ণ ও পেট ফাঁপাঃ অনেক সময় খাবার হজম হয় না। পেট ফেঁপে যায়। এ অবস্থায় ৫ গ্রাম পরিমাণ মৌরি ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এক কাপ থাকতে নামিয়ে সেটাকে ছেঁকে সকালে ও বিকালে দু বেলা খেতে হবে।অন্যভাবেও হতে পারে। প্রথমে অল্প ভাজা ৫ গ্রাম পরিমাণ মৌরি নিয়ে একটু থেঁতো করে নিতে হবে। এরপর ১ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে আধা কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর দিনে দু বার খেলে অজীর্ণ কমে যাবে, ক্ষুধা হবে এবং পেটের বায়ুও কমে যাবে।
২. কৃমিঃ কৃমির যন্ত্রণা বড়ই বিরক্তিকর। আর গুঁড়া কৃমি হলে তো কথাই নেই। গুঁড়া কৃমি শুধু পায়খানার রাস্তায় চুলকায়। এ জাতীয় কৃমি হয় আমাশয়ে। এগুলো হলে বমি বমি ভাব হয়। কৃমি থেকে রেহাই পেতে হলে, অল্প পরিমাণে মৌরি ভেজে গুঁড়া করতে হবে ১ গ্রাম পরিমাণে। এগুলো সকালে ও বিকালে দু’বার পানিসহ খেতে হবে। এভাবে ৭ দিন খেলে কৃমি সেরে যাবে।
৩. পিত্তশূলঃ পিত্তশূল হলে ৫ গ্রাম মৌরি থেঁতো করে নিতে হবে। তারপর ১ গ্লাস বা ২ কাপ গরম পানিতে কমপক্ষে দু’ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর এটি ছেঁকে আধা কাপ পরিমাণ একটু পর পর দিনে ৩/৪ বার খেতে হবে। এভাবে ৫ দিন খেলে দেখা যাবে শূলের ব্যথাটা কমে যাচ্ছে।
৪. অনিয়ম মাসিকঃ মেয়েদের মাসিক অনেক সময় নিয়মিতভাবে হয় না। হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ৫ গ্রাম মৌরিকে ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এরপর ১ কাপ থাকতে নামিয়ে তা দিনে ২/৩ বার খেলে মাসিক নিয়মিত হবে।
৫. গর্ভকালীন বমিঃ গর্ভবতী মায়ের অনেক সময় বমি হয়। এই সময় ৫ গ্রাম মৌরি ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। তারপর এক কাপ থাকতে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে ছেঁকে দু বার খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
৬. মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেঃ মা হলে কখনো কখনো বুকে দুধ ঠিকমতো আসে না। এরকম হলে ৫ গ্রাম মৌরি ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ করে নামাতে হবে। তারপর ছেঁকে ঠাণ্ডা হলে ৩/৪ দিন খেলে বুকে দুধ আসবে
।পথরেখা/অআ