• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২০:৫১

ফুটবল রাজার শেষকৃত্য নতুন বছরে

  • ক্রীড়া -ফুটবল       
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২       
  • ৬৯
  •       
  • ৩০-১২-২০২২, ১৯:১৮:২১

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে হেরে গেলেন পেলে। সারা দুনিয়ার ফুটবলপ্রিয় মানুষের জন্য খবরটি বেশ কষ্টের। গতকাল ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনবার বিশ্বকাপ জয়ী এই কিংবদন্তী। ব্রাজিলের সাও পাওলোয় আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 
 
বৃহস্পতিবার রাতে ইনস্টাগ্রাম পোস্টেই পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো জানান, ‘আমাদের সকল কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমরা তোমাকে অসীমের চেয়েও বেশি ভালবাসি। বিদায়।’ গত নভেম্বর মাস থেকেই এই হাসপাতালে চিকিৎসাধিন ছিলেন সর্বকালের সেরা এই ফুটবলার। দীর্ঘদিন কিডনি এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে পেলের মেয়ে কেলি নাসিমেন্তো নিয়মিত তাঁর চিকিৎসার আপডেট জানাতেন। চারদিন আগেও হাসপাতাল থেকে বড়দিন যাপনের ছবি প্রকাশ করেছিলেন কেলি। ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জয় করেছেন তিনি। ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের ২১ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৩৬৩টি ম্যাচ খেলে ১২৮১ গোলের বিরল রেকর্ড রয়েছে পেলের। 
 
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাকোয়েস শহরের এক বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেন ‘এডসন অ্যারান্টিস দো নাসিমেন্তো’। দরিদ্র কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে পরিবারের অভাব অনটন মেটানোর জন্য ছেলেবেলাতেই পেলেকে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়েছিল। এ ছাড়া রেলস্টেশন ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি কিছুদিন জুতা পরিষ্কারের কাজও করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল পেলের। গলির ফুটবলেই প্রতিভার প্রথম দেখা পাওয়া যায় পেলের। যে প্রতিভা চোখে পড়ে সান্তোসের গ্রেট ওয়ালডেমার ডি ব্রিটোর। বস্তির খেলোয়াড় থেকে ফুটবলার হয়ে উঠার শুরু হয় সেখান থেকেই। ১৫ বছর বয়সেই পেলেকে সান্তোসের ‘বি’ দলে যোগ দেয়ান ব্রিটো। এখানেও সহজাত প্রতিভার স্ফূরণে এখান থেকে এক বছরের মধ্যেই জায়গা করে নেন মূল দলে। ১৬ বছর বয়সে পেলে’র সান্তোসের মূল দলে অভিষেক হয়। সেবার ব্রাজিলের পেশাদার ফুটবল লিগে স্যান্টোসের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি। 
 
আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় নি সর্বকালের সেরা এই ফুটবলারকে। ১৯৫৭ সালের ৭ জুলাই ব্রাজিলের হয়ে পেলের আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় চিরপ্রতিদ্বন্ধী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে গেলেও প্রথম ম্যাচেই বিশ্ব রেকর্ডটি করতে ভুল করেনটি পেলে। ১৬ বছর ৯ মাস বয়সে গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে গোলদাতার রেকর্ড করেন ফুটবলের বরপুত্র। ব্রাজিল দলে সুযোগ পাওয়ার পরের বছরই ডাক পান বিশ্বকাপের দলেও। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে পেলের অভিষেক ঘটে। ম্যাচটি ছিল ১৯৫৮ বিশ্বকাপের তৃতীয় খেলা। ১ম রাউন্ডের খেলায় পেলে গোল করতে না পারলেও শেষ মুহূর্তে এসে পেলে ঠিকই জ্বলে উঠেন। কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে পেলের করা গোলে ব্রাজিল সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে ব্রাজিল প্রথম বিশ্বকাপ জয় করে। কোয়ার্টার ফাইনালে করা সেই গোলটিও ছিল রেকর্ডের। 
 
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে করা গোলের রেকর্ড। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জোড়া গোল করে ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বনে যান ১৭ বছর বয়সী পেলে। ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে তিনবার (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) সালে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করেন। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সর্বকালের সেরা দলটির সদস্য হিসেবে পেলে জিতেন তাঁর তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। তিনবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে সেবার জুলে রিমে ট্রফিকে নিজের করে নেয় ব্রাজিল। ব্যক্তিগত জীবনে একাধিক বিয়ে করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। মরণব্যাধি ক্যানসারকে ভালোই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। প্রায় দুই বছর সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল তাঁর ‘ঘরবাড়ি’ হয়ে যাওয়ার কারণ এটাই। সোমবার পেলের শেষকৃত্য। দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত স্থানীয় সময় সকাল ১০টায়, যেটি শেষ হবে পরদিন একই সময়ে। পেলের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে সান্তোসে। 
 
তাঁর বাড়িতে নেওয়া হবে শবদেহ, যেখানে শয্যাশায়ী তাঁর ১০০ বছরের মা। এরপর পেলেকে সমাধিস্থ করা হবে সান্তোসের মেমোরিয়াল নেক্রোপোল একুমেনিকায়। সান্তোসে পেলের একটি বাড়ি আছে, যেখানে তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে। তাঁর স্মৃতিধন্য সান্তোস ফুটবল ক্লাব এক বিবৃতিতে পেলের শেষকৃত্য নিয়ে জানিয়েছে, ‘সর্বকালের সেরা ফুটবলারের শেষকৃত্য হবে আরবানো কালদেইরা স্টেডিয়ামে, যেটি ভিলা বেলমিরো হিসেবে অধিক পরিচিত, যেখানে তিনি মুগ্ধ করেছেন পুরো বিশ্বকে।’ সান্তোসের এই স্টেডিয়ামেই ভক্তরা পেলেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। চোখের জলে কিংবদন্তিকে জানাবেন বিদায়। সেই দিনটা বলা যায় হতাশারই হবে।
দেশকণ্ঠ/আসো
 
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।