• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৯:২০

বাংলাদেশকে ভোলেননি মেসি

  • ক্রীড়া -ফুটবল       
  • ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩       
  • ৭৩
  •       
  • ০৪-০২-২০২৩, ১৯:০১:০৫

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন : বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির ভালবাসার পরিমান কতটা সেটা এবারের কাতার বিশ্বকাপে দেখা গেছে। সেটা নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটির শিরোপা জয়ের পেছনে বাংলাদেশি সমর্থকদের অবদানের কথা দেশটির আপামর মানুষ জানেন। সবশেষ কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে তৈরি হয়েছিল এক অভাবনীয় পরিস্থিতির। আর্জেন্টিনা দলের প্রতি লাল সবুজ দেশের মানুষের ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে আর্জেন্টাইনদের। দলটির খেলার সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বড় পর্দায় হাজার হাজার মানুষের খেলা উপভোগ ও মেসি, ডি মারিয়াদের সমর্থনে গলা ফাটানোর ব্যাপারটি ভালোভাবে নজরে আসে তাদের। দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এই দেশের মানুষের ভালোবাসার বিষয়টি। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থনের গল্প ফলাও করে প্রচার হয় সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে। ব্যাপারটিতে আর্জেন্টাইনরা এতটা আপ্লুত যে দেশটির রাজধানী বুয়েনস আইরেসেও বিশ^জয়ের আয়োজনে ওড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। বাংলাদেশের সমর্থকদের সমর্থনের জন্য বিশ্বকাপের সময় ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনিও। 
 
 
আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের টুইটার হ্যান্ডলেও তখন বাংলাদেশকে নিয়ে পোস্ট দেয়া হয়েছিল। এবার সেই ভালোবাসারই প্রাপ্তিস্বীকার করলেন তাদের অধিনায়ক ও সেরা তারকা লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনা দল ও মেসির ভক্তের অভাব নেই বাংলাদেশে। ২০২২ বিশ্বকাপ চলাকালে আরও একবার প্রমাণ মেলে সেটার। দেশজুড়ে আর্জেন্টিনার পতাকা যেমন শোভা পেয়েছিল, তেমনি অগণিত মানুষের গায়ে জড়ানো ছিল মেসির ‘১০’ নম্বর জার্সি। সেই সঙ্গে দলটির প্রতিটি জয়ে উৎসবের তীব্র জোয়ার বয়ে যায়। এমন উন্মাদনার কথা গণমাধ্যমের কল্যাণে পৌঁছে যায় পিএসজি ফরোয়ার্ড মেসির কাছে। স্বদেশি ক্রীড়া বিষয়ক গণমাধ্যম দিয়ারিও ওলের কাছে ৩৫ বছর বয়সী মেসি বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি বাংলাদেশের দেওয়া সমর্থনের সবকিছুই দেখেছি। ফাইনালের আগে সবখানে জার্সি দেখা যাচ্ছিল। সারা বিশ্বের মানুষের গায়ে আর্জেন্টিনার মেসির “১০” নম্বর জার্সি দেখতে পাওয়াটা খুবই সুন্দর ব্যাপার।’ কাতারের মাটিতে ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। এতে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার জন্য দলটির ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়।
 
লিওনেল মেসিবাহিনীর অর্জনে বাংলাদেশের মানুষও মাতোয়ারা হয় পরম প্রাপ্তির উল্লাসে। এই বিশ্বকাপের আগে মেসি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কাতারেই হয়তো শেষবারের মতো তাকে দেখা যাবে বিশ্ব সেরার মঞ্চে। এরপর দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে জেতেন বিশ্বকাপ। পরে জানান, জাতীয় দলের জার্সিতে ‘তিন তারকা’ সহ খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। যদিও উল্লেখ করেননি যে ঠিক কতদিন খেলবেন। সেই মেসির ক্যারিয়ার এখন সায়াহ্নে। শেষটাও দেখে ফেলেছিলেন কেউ কেউ। বিশেষকরে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর সেই আলোচনা বেড়েছে আরও। আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনির বিশ্বাস, পরের বিশ্বকাপেও খেলতে পারবেন পিএসজি তারকা। তবে রেকর্ড সাতবারের ব্যালন দ’র জয়ী ফুটবলারের কাছে বিষয়টি বেশ কঠিন মনে হচ্ছে। ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে তাই এখনই না ভেবে আর্জেন্টাইন মহাতারকা এখন নিজের খেলাটা কেবল উপভোগ করে যেতে চান। ২০২৬ বিশ্বকাপের সময় মেসির বয়স হবে ৩৯। ওই বয়সে শীর্ষ মঞ্চে পারফর্ম করা স্বাভাবিকভাবেই বেশ কঠিন। মেসি নিজেও তাই নিশ্চিত নন আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে। 
 
 
তবে এদিনের এই সাক্ষাৎকারে সাবেক বার্সেলোনা তারকা বলেন, তার ক্যারিয়ার সামনে কীভাবে এগোয় তার ওপর নির্ভর করছে পরের ভাবনা, ‘আমার বয়সের কারণে, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা কঠিন হবে। আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি এবং যতক্ষন আমি আমি নিজেকে ভালো অবস্থায় দেখব ও খেলাটা উপভোগ করব, আমি চালিয়ে যাব। পরবর্তী বিশ্বকাপ আসতে অনেক সময় বাকি, কিন্তু (২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা) নির্ভর করবে আমার ক্যারিয়ার কীভাবে এগিয়ে যাবে তার ওপর।’ ফুটবলের মহাযজ্ঞের সবশেষ আসরে মেসি ছিলেন আপন মহিমায় উজ্জ্বল। বিশ্বকাপের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স উপহার দেন তিনি। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জোড়া গোলসহ সাত গোল করেন। পাশাপাশি সতীর্থদের চার গোলে অবদান রাখেন। এমন নৈপুণ্যের কারণে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন তিনি। বাংলাদেশের সঙ্গে আর্জেন্টিনার ভৌগোলিক দূরত্ব প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার। কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে আলবিসেলেস্তাদের নিয়ে বাংলাদেশের উন্মাদনা আর্জেন্টিনা তো বটেই, নজর কেড়েছে সারা বিশ্বের। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের টুইটার পেজে বাংলাদেশকে নিয়ে একাধিক পোস্ট করা হয়। এ ছাড়া অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানান আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালনি। 
 
আর্জেন্টিনা দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির কানেও গিয়েছে বাংলাদেশের উন্মাদনার কথা। এবার বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা এবং নিজের পাগলাটে সমর্থকদের নিয়ে কথা বলেছেন মেসি। বিশ্বকাপের শিরোপা জয় নিয়ে আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম ওলে পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কাতার বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার। বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালনি বাংলাদেশকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রথমে দিয়েগো ম্যারাডোনা, পরে মেসির কারণে আর্জেন্টিনার ফুটবলের সমর্থক বেড়েছে। বাংলাদেশে আমাদের এমন সমর্থন আছে জেনে আমি গর্বিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্য অনেক দেশের মানুষও আমাদের সমর্থন করে।’ আলবিসেলেস্তাদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে আর্জেন্টাইনদের। বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনার ম্যাচের সময় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ আর্জেন্টিনার ম্যাচ উপভোগ করেন এবং মেসি-ডি মারিয়াদের সমর্থনে গলা ফাটান। বিশ্বকাপের শুরু থেকে বিষয়টি আর্জেন্টিনার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
 
বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন লিওনেল মেসি। ২০০৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপে ২৬ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। গত বছর ১৮ ডিসেম্বর লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারে অর্জনের মুকুটে যোগ হয় সবচেয়ে বড় পালক বিশ্বকাপের ট্রফি। এবার মুকুটে যোগ হলো আরও একটি পালক। মঁপেলিয়ের বিপক্ষে অনন্য এক অর্জন যোগ হলো মেসির রেকর্ডে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলে ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। মঁপেলিয়ের বিপক্ষে পিএসজির দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি। ইউরোপীয় ক্লাব ক্যারিয়ারের এটি আর্জেন্টাইন অধিনায়কের ৬৯৭ তম গোল। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মেসি এখন সর্বোচ্চ গোলের মালিক। এই গোলে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন রোনালদোর ৬৯৬ গোলকে। 
দেশকন্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।