মেজর (অব.) চাকলাদার : ক্রীড়াঙ্গনের শ্রেষ্ঠতম অর্জন হলো জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্তি। মাঠের পরিশ্রমের শ্রেষ্ঠতম স্বীকৃতিও। ঘাম ঝড়ানো সকাল সন্ধ্যা অনুশীলনে বছর পার করে দিয়ে ক্রীড়ারাজ্যে সফলতা আনলেও দৈনন্দিন কাজে পিছিয়ে পরতেই হয়। আমি দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ান গেমসে হকিতে দেশের অধিনায়ক ছিলাম। সিজিএস জেনারেল সামাদ বললেন ওডব্লিউ -জেটিসি করতে হবে। হকি সভাপতি জেনারেল মতিন বললেন চাকলাদার এশিয়ান গেমস করে এসে পরের কোর্সে যাবে। সকাল সন্ধ্যা অনুশীলনে ব্যস্ত থাকাতে এই ‘কেরিয়ার’ কোর্সের জন্য ওরতো পড়া শোনাও হয়নি। কোর্স শুরু আর চারদিন পরেই। জেনারেল সামাদ বললেন কোর্স করে সময় যদি থাকে তবেই এশিয়ান গেমসে যাবে। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী তখন শেখ শহীদ, হকি সভাপতি জেনারেল মতিন, হকি সেক্রেটারি শামসুল বারি অনুরোধ করলেন। কিন্ত জেনারেল সামাদ ‘গোল’ দিয়েই ছাড়বেন এবং দিলেনই। কোর্সে গেলাম এবং কোর্সে ‘বি’ পেয়েছিলাম। ‘এ’ কেউই পায় নি। এশিয়া কাপে আমার নেতৃত্বে যে দল ছিল; তা বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছিল ‘এমার্জিং টাইগার’ বলে। অথচ সেই দলটিই কোরিয়ার এশিয়ান গেমসে সর্বনিন্ম স্থান পায়।
আমি কোর্স শেষ করার পর ঠিক করলাম আর হকিই খেলবো না। বিএ (অনার্স) এমএ তে স্টান্ড করে ছিলাম। সাথে রিটায়ার্ড মেজর তাই সিভিল চাকুরি পেতে অসুবিধা হয় নাই। ৮০ ভাগ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্তদের জীবন মসৃন নয়। হকি অন্যতম শ্রেষ্ঠ তারকা জামাল হায়দার এ বয়সেও বিভিন্ন আর্মি ইউনিটে কোচিং করে সংসার চালায়। জাতি এদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়কে ব্যবহার করেছে আজ দেশেরও দায়িত্ব এদের পাশে দাঁড়ানোর।
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর কাছে দাবি থাকবে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করার। তাদের জন্য কার্ড চালু করার; যেখানে তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার উল্লেখ থাকবে। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্তদের কেন সুবিধাদি পাবার জন্য চাইতে হবে? যে ক্লাবে তারা খেলেছেন; আশা করব তারা এদের পাশে দাঁড়াক। একই দাবি ক্রীড়া মন্ত্রণলয়ের প্রতি, তাদের অবশ্যই দায়িত্বনিতে হবে।
লেখক : সাবেক অধিনায়ক, জাতীয় ও সেনাবাহিনী হকি দল এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত
দেশকণ্ঠ/আসো