• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:০০
মুখোমুখি সিলেট-কুমিল্লা

বিপিএলের মেগা ফাইনাল

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : নানা নাটকীয়তা শেষে ফাইনালের মঞ্চে সিলেট স্ট্রাইকার্স। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচে জন্ম হয়েছে নানা নাটকীয়তার। হঠাৎই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণে উইকেটকিপিং ছেড়ে দেন মুশফিকুর রহিম। এরপর গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে দাড়াতে হয় আকবর আলীকে। কিপিং পরিবর্তন করতে গিয়ে যে সময়টা লেগে যায় তাতেই নাকি ম্যাচের মোমেন্টাম নষ্ট হয়ে যায়। আর ফাইনালে যেতে না পারায় ম্যাচ শেষে রংপুর কোচ সোহেল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফাইনালে ওঠার পর সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, দলের খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিয়ে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি মেগা ফাইনালে সন্ধা ছয়টায় মুখোমুখি হবে সিলেট-কুমিল্লা। প্রথমবারের ফাইনালে ওঠা মাশরাফির দল শিরোপা জেতার মিশনে মাঠে নামবে ইমরুল কায়েসের কৃমিল্লার বিপক্ষে। শেষ কোয়াটারে ১৬ বলে ৩২ রান দরকার ছিল রংপুরের। তখনই রানআউট রনি তালুকদার (৫২ বলে ৬৬)। ওই ওভারের প্রথম বলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব ফিরিয়ে দেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানকে (২৪ বলে ৩৩)। চার ওভারে তানজিমের শিকার দুই উইকেট, মাত্র ১৯ রানের বিনিময়ে। পরের ওভারে লুক উডের আরও বড় চমক। দুই বলে দুই উইকেট। মেহেদী হাসানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে পরের বলে ডুয়ানে ব্রাভোকে শূন্য রানে ফেরান উড। শেষ ছয় বলে রংপুরের প্রয়োজন হয় ২৮ রান। 
 
বোলার হিসেবে আসের রুবেল হোসেন। প্রথম দুই বলে রংপুরের লংকান ব্যাটার দাসুন শানাকা বাউন্ডারি হাঁকানোর পরের তিন বলে রান হয়নি। শেষ বলে শানাকা বোল্ড। রুবেলের উদ্যাপন ছিল দেখার মতো। মাশরাফি মুর্তজার মুষ্টিবদ্ধ দুই হাতে সংযত উদ্যাপন। ১৯ রানের জয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স চলে গেল ফাইনালে। এদিকে এখন পর্যন্ত ফাইনালে ওঠে হারেনি কুমিল্লা। বিপিএলে এবার নিয়ে চারবারই ফাইনালে দলটি। ফাইনালে কুমিল্লা মানেই হলো চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে বাড়ি ফেরা। এখন পর্যন্ত তিনবার এই দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছে দলটি। নামের শেষেই যাদের বিজয়ী পদবী; চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তো তাদেরই মানিয়ে যায়। ফাইনালে জয়ের এই রেকর্ডকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ আসছে কুমিল্লার সামনে। বৃহস্পতিবার বিপিএলের নবম আসরের ট্রফি জিতলেই নিজেদের রেকর্ডকে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের শীষ্যরা। বৃহস্পতিবার রাতের ফাইনালের আগে দলটির আত্মবিশ্বাসে বাড়তি জ্বালানি জোগাচ্ছে ফাইনালের এই ইতিহাস। 
 
কুমিল্লা ভাল করেই জানে, ফাইনালের মঞ্চে কখনও হারে না তারা! বিপিএলের পথচলা শুরু হয় ২০১২ সাল থেকে। কুমিল্লার অভিষেক তারও দুই আসর আর তিন বছর পরে। এরপর থেকে পেছনের সাত আসরে খেলেছে দলটি, তারমধ্যে এবারেরটা নিয়ে ফাইনালে উঠেছে চারবার। আগের তিন ফাইনালেই চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরেছে তারা। ২০১৫ সালে অভিষেক আসরেই বাজিমাত। আইকন প্লেয়ারের লটারিতে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পেয়েছিল কুমিল্লা। সঙ্গে ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, আবু জায়েদ রাহী, মারলন স্যামুয়েলস, আন্দ্রে রাসেলদের নিয়ে গড়ে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ এক দল। সেই সাফল্য ধরে রাখে তারা। এবার কি হবে সেটা নিয়ে তাই আগামী দুশ্চিন্তা কাজ করছে। ফাইনালে জেতার অভ্যাসটাই ধরে রাখবে কুমিল্লা? সেটা যদি করে দেখাতেই পারে কুমিল্লা, তাহলে দলটির সামনে আছে আরেকটি ইতিহাস ছুঁয়ে ফেলার হাতছানি। বিপিএলের ইতিহাসে টানা দুই শিরোপা জেতার কীর্তি আছে কেবল ঢাকার। প্রায় দশ বছর আগে গড়া এই ইতিহাস কুমিল্লা ছুঁয়ে ফেলবে আজ জিতলেই। ইতিহাস অবশ্য কুমিল্লার বিপক্ষেও কথা বলছে খানিকটা। 
 
এদিকে ফাইনাল নিয়ে খুব বেশিকিছু ভাবছে না সিলেট সিলেট। বিপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজার ছোঁয়ায় এ যেন বদলে যাওয়া এক সিলেট। আগের আসরগুলোতে যেখানে তলানিতে ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি, এবার মাশরাফি নামক এক জাদুকরের স্পর্শে বাইশগজে দ্যুতি ছড়াচ্ছে তারা। আসরের শুরু থেকে দারুণ দাপট দেখিয়ে শিরোপা থেকে এখন নিঃশ্বাস দূরত্বে সিলেট স্ট্রাইকার্স। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তেমন আলোচনাতেই ছিল না সিলেটের নাম। প্লে-অফের লড়াইয়ে কুমিল্লার কাছে হারের পর রংপুরের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়। সেই সঙ্গে ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে সেই কুমিল্লাকেই পেল সিলেট। ফাইনাল ম্যাচে কোন প্লানে এগোবে দল। এছাড়া দলের বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন সিলেটের কোচিং প্যানেলের সদস্যরা। সিলেটের প্রধান কোচ রাজিন সালেহ ফাইনাল প্রসঙ্গে বলেন, ’কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে শিরোপা জেতার কথা না ভাবাটা বোকামি। আমরা বৃহস্পতিবার শিরোপা জেতার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব। প্রথম শিরোপা জিততে চাই এবার’।
 
এদিকে বিপিএল ফাইনালের আগে দেশি ব্যান্ড দলকে নিয়ে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। বিপিএলে এবার কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তেমন কিছু ছিল না। তবে সমাপনী দিনে থাকছে কিছু আয়োজন। ফাইনালের আগে দেশি কয়েকটি ব্যান্ড নিয়ে কনসার্ট আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য নিজাম উদ্দিন চৌধুরি সুজন। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে ফাইনাল ম্যাচ। তার আগে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে কনসার্ট ছাড়াও ম্যাচের পর আতশবাজি ও বিম শো করা হবে। জেমস (নগরবাউল), ওয়ারফেজ, মাকসুদ (মাকসুদ ও ঢাকা) ফাইনাল ম্যাচের আগে গান গাইবে বলে জানা গেছে। এলিমেনেটরের পর এবার ফাইনালে টিকিেিটর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে আয়োজকরা। সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা রাখা হয়েছে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের টিকিট।
 
বিপিএল এর শুরুটা ছিল খুবই সাধারণ, নিতান্তই সাদাসিধে। তবে শেষটা রাঙাতে চায় বিসিবি। সর্বনিম্ন ৩০০ টাকায় বিপিএল ফাইনাল ও কনসার্ট মাঠে বসে উপভোগ করতে উপভোগ করতে পারবে দর্শকরা। গত পরশু এক বিবৃতিতে বিপিএলের শেষ পর্বের জন্য নতুন মূল্য তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এতে বলা হয়, ফাইনাল ম্যাচে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার টিকিটের মাধ্যমে ইস্টার্ন স্ট্যান্ডে এবং সর্বোচ্চ ২০০০ টাকার খরচায় গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসে খেলা দেখা যাবে। নর্থ ও সাউথ স্ট্যান্ডের টিকিটের দাম ৪০০ টাকা এবং ক্লাব হাউজের জন্য খরচ করতে হবে ৮০০ টাকা। ১৫০০ টাকা ধরা হয়েছে ভিআইপি স্ট্যান্ডের টিকিট মূল্য। 
দেশকন্ঠ/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।