• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২১:৩৮

বঙ্গবন্ধু কাবাডিতে বাংলাদেশের হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : টানা দুই আসরে শিরোপা জেতার পর এবারের তৃতীয় আসরে শিরোপা জেতার লক্ষ্য ছিল। পাশাপাশি বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমসে খেলার একটা বিষয় তো ছিলই। বলা যায় শিরোপা জয় করার মধ্যদিয়ে সব প্রত্যাশাই পূরণ হয়েছে। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ কাবাডিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন তুহিন তরফদারের দল। ফাইনালে চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতার চিত্তসুখই আলাদা। আর সেটা যদি হয়, টানা তিন বার, তাহলে তো সেটার মাহাত্ম্যই আলাদা হয়ে যায়। বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দল মঙ্গলবার সেই দৃষ্টান্তই স্থাপন করলো। বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৩ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টে তারা হয়েছে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। ঢাকার পল্টনের শহীদ নুর হোসেন ভলিবল জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা চাইনিজ তাইপেকে ৪২-২৮ পয়েন্টে (৩টি লোনাসহ) হারায়। বিজয়ী দল খেলার প্রথমার্ধে এগিয়েছিল ২০-১৪ পয়েন্টে। 
 
শিরোপা জয়ী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তুহিন তরফদার টুর্নামেন্টের বেস্ট ক্যাচার ও ম্যান অব দ্য ফাইনাল হন। একই দলের মিজানুর রহমান ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ও বেস্ট রেইডারের পুরস্কার লাভ করেন। এই টুর্নামেন্টে ২০২১ এবং ২০২২ সালের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল কেনিয়া। ওই দুই আসরে কেনিয়াকে যথাক্রমে ৩৪-২৮ এবং ৩৪-৩১ পয়েন্টে হারিয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী। তৃতীয় আসরের ফাইনালে ওঠার সময়ই বিশ^কাপ কাবাডিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনের সুখবর পেয়েছিল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডির শিরোপা জিতে দেশবাসীর জন্য আরেক সুখবর দেয় সাজুরাম গয়াতের শিষ্যরা। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত তুহিন তরফদারদের অকুণ্ঠ সমর্থন জোগাতে স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। দু’দলই ধীরস্থির-সর্তক ভঙ্গিতে শুরু করে। বোনাস পয়েন্ট পাওয়ার মাধ্যমে পয়েন্টের খাতা খোলে বাংলাদেশ। এরপর সংগ্রহ করে আরেকটি পয়েন্ট। তবে টানা ২ পয়েন্ট পেয়ে দ্রুতই সমতায় ফেরে চাইনিজ তাইপে। 
 
মিজানুর রহমান রেইড দিয়ে সফল হলে আবারও লিড নেয় স্বাগতিকরা (৩-২)। তবে পিছিয়ে থাকেনি প্রতিপক্ষ তাইপেও। সমানতালে খেলতে থেকে কখনও সমতায় ফেরে, কখনও আবার এগিয়েও যায় তারা (৫-৪)। একপর্যায়ে ১০-৯ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকার পর ১০-১০ এ সমতা আনে স্বাগতিকরা। এররেই ১৪ মিনিটের সময় তাইপেকে প্রথমবারের মতো অলআউট করে বাংলাদেশ। ১৪-১০ পয়েন্টে এগিয়ে যায় তারা। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। বাংলাদেশ এই ম্যাচে রেইডের চেয়ে সফল ক্যাচারের ভূমিকায় বেশি সফল হয়। মূলত তাদের অভিজ্ঞতার কাছেই হার মানে চাইনিজ তাইপে। প্রথমার্ধে ২০-১৪ পয়েন্টে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ আরও ২২ ও তাইপে ১৪ পয়েন্ট স্কোর করে। তুহিনের রেইডে লোনা ও বোনাস পয়েন্ট মিলিয়ে ৪ পয়েন্ট পেয়ে বাংলাদেশ স্কোরলাইন ২৪-১৪ করে ফেলে। মিজানুর, আরদুজ্জামান ও তুহিনের একের পর এক সফল রেইড ও দলগত নৈপুণ্যে নিজেদের পয়েন্ট আরও বাড়িয়ে নিতে থাকে লাল-সবুজ বাহিনী। এক পর্যায়ে তুহিনের রেইডে তৃতীয় লোনা পেয়ে যায় বাংলাদেশ (৩৭-২১)। 
 
আর তখনই মোটামুটি বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে একটু যেন হাল্কা মুডে খেলতে থাকে তারা। এটাকে কাজে লাগিয়ে তাইপে দ্রুত কিছু পয়েন্ট আদায় করে নেয়। শেষ আড়াই মিনিট। শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ রেইড দিতে গিয়ে কোন চাপ নেয়নি। বরং কৌশলগত কারণে ধীরগতিতে খেলে সময় পার করতে থাকে। বাকি সময়ে তাইপে দুটো লোনার পয়েন্ট দিয়েও লিড নিতে পারতো না বা সমতায় ফিরতে পারতো না। তবে তাইপে এই সময়ে কিছু পয়েন্ট আদায় করে। ম্যাচের শেষ রেইড দেন তুহিন। খেলা শেষ হবার বাঁশি বাজতেই দর্শক উল্লাস শুরু হয়। শিরোপাজয়ের আতিশয্যে তুহিন দর্শনীয়ভাবে ডিগবাজি খান। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন। লাউড স্পিকারে গান বেজে ওঠে, “জয় বাংলা, বাংলার জয় ...”। চারটি জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দৌড়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন তুহিনরা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। উপস্থিত ছিলেন কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বিশ্ব কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি সত্যশিভম মুনিস্বামী, এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ সারোয়ার, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ, কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান ও কাবাডি ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক ও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল হক।
 
এর আগে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ৩টি লোনাসহ ৪৫-২৬ পয়েন্টে জিতে স্বাগতিকরা। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল ১৭-১১ পয়েন্টে এগিয়েছিল। বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হওয়ার পর দারুণ খুশি হয়েছেন অধিনায়ক তুহিন তরফদার। এদিকে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমস নিশ্চিত হওয়ায় দারুন তৃপ্ত ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডির সেমিফাইনালে শক্তিশালী থাইল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে অনেক অর্জনের খাতা পূর্ণ তুহিন তরফদার, আরদুজ্জামান, মিজানরা। আন্তর্জাতিক কাবাডি আগেই ঘোষণা করেছিল বঙ্গবন্ধু কাপে যে দুই দল ফাইনালে উঠবে তারা এশিয়ান গেমস এবং বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পাবে। সেই হিসাবে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠার মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমসের মেগা ইভেন্ট দুটিতে খেলার টিকিট নিশ্চিত করল লাল-সবুজের বাংলাদেশ। আর এ কথা অফিসিয়ালি ঘোষণা করেছেন কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি হাবিবুর রহমান। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান গেমসের টিকিট নিশ্চিত করতে পেরে খুশি হাবিবুর রহমান। 
দেশকন্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।