• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০০:৪৩

নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে পারবে বাফুফে?

বিশেষ প্রতিবেদন : নানা কারণে বিতর্কিত এখন বাংলাদেশের ফুটবল। বিশেষ করে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রা সংস্থাটির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের দুই বছরের নিষেধজ্ঞার পর থেকেই নানা কারণে উত্তপ্ত জনপ্রিয় খেলাটি। এবার নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত হাই কোর্ট থেকে নতুন করে দেশের ফুটবলের তদন্ত চাওয়ায়। এছাড়া বাফুফে নিজেদের মতো করে তদন্ত শুরু করেছে। সেই তদন্ত নির্ধারিত এক মাসের মধ্যে শেষ হবে কিনা সেই সংশয় রয়েছে। পাশাপাশি এই তদন্তের ফলাফল কি হবে সেই দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বাফুফে সহ সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ। তদন্ত কমিটির প্রথম বৈঠকের পর ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রদান করার কথা রয়েছে। সেই হিসেবে আগামী মাসের মাঝামাঝিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেয়ার কথা। হাতে সময় থাকার কারণে ধীরে ধীরে সব খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন কাজী নাবিল। ফিফা বাফুফের কেনাকাটা সক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলেছে। সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে। সেই সকল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নাবিল জানান, প্রয়োজনে তাদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।
 
সময়ের হিসেবে অনেক বছর ধরেই দেশের ফুটবলের অধঃপতন, অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে সরব ছিল দেশের গণমাধ্যম এবং ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু এগুলোকে মনগড়া, অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক বলে ‘থোড়াই কেয়ার’ করে এসেছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কারণ হিসেবে তারা বরাবরই বলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কোন প্রমাণ নেই। কিন্তু ঝামেলা পাকিয়ে বসে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। সন্দেহের বশবর্তী হয়ে তারা তদন্ত করে বের করে ফেলে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের দুর্নীতি-জালিয়াতি। ফলশ্রুতিতে সোহাগকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং ১২ লাখ টাকা জরিমানা করে। গোটা ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করে এই খবর। ফুটবলবোদ্ধা এবং ফুটবলপ্রেমীরা শুধু সোহাগের শান্তিতেই সন্তুষ্ট নন, তাদের দাবি, বাফুফের আরও অনেক রথী-মহারথীরাই এই দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের এই সন্দেহ আরও গাঢ় হয়, যখন দেখা যায় বাফুফে ফিফার এই রায়কে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করে এবং সোহাগ কোনো দুর্নীতি করেননি বলে দাবি করে।
 
দেশের ফুটবল নিয়ে এই যখন অবস্থা, তখন বাফুফের ওপর নেমে এসেছে আরও প্রগাঢ় অমানিশা। কেননা বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফেডারেশনের সব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। সালাউদ্দিন-মুর্শেদীসহ বাফুফের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে ওই আদেশে। সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শেদী এবং সোহাগসহ বাফুফের সব বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কৃর্তপক্ষের নিষ্কিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সেয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
 
এছাড়া বাফুফের ভুয়া কাগজপত্র যাচাই বাছাই চলছে এখন। তদন্তে অনেক সময় কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরোনোর মতো ঘটনা ঘটে! বাফুফে তেমন কিছু পাবে কিনা, কে জানে। তবে তদন্তে যে অনেক কিছু বেরিয়ে আসছে, সেটা নিশ্চিত। যেমন আভাস দিলেন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তৃতীয় বৈঠক হয়। দীর্ঘ সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কাজী নাবিল। তিনি তদন্তের নানা দিক ও অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন। তা ছাড়া প্রথম দফায় তিনজনের পর এবার আরও চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাফুফের এই কর্মকর্তা। আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত এপ্রিলে ফিফা দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে সে সময়কার সাধারণ সম্পাদক সোহাগকে। ওই কেলেঙ্কারি খতিয়ে দেখতে নাবিলকে চেয়ারম্যান করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে বাফুফে। এর মধ্যে সোহাগ পাঁচতারকা হোটেলে সাংবাদিকদের ডেকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। পাশাপাশি এও বলেছেন, সময়মতো সবকিছু বেরিয়ে আসবে। এদিকে বাফুফেও বসে নেই।
 
তদন্ত কাজটা যাতে সুনিপুণভাবে সম্পন্ন হয়, সেটাই চাইছে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি। যেমনটা বলেছেন ফুটবলের কর্মকর্তা। যদিও এ কয়দিনে তদন্তে অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে ঠিক, কিন্তু কী বেরোল সেসব এখনই বলতে চান না কাজি নাবিল। আপাতত ভেতরের তথ্য পরখ করা হচ্ছে। আর তদন্ত শেষ হলেই সবাই জানতে পারবে কী রেজাল্ট, ‘ফাইন্ডিংস নিয়ে এখন কথা বলতে পারব না। তদন্ত শেষে বলতে পারব। এখন পর্যন্ত
 
যতটুকু পেয়েছি, কাজ করে যাচ্ছি। ফাইন্ডিংসের এখনও আমাদের দেরি আছে। ৩০ কার্যদিবস গণনা করলে, সেটা জুনের মাঝামাঝি হয়, আশা করছি আমরা সে সময়ের কাছাকাছি সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারব’। তবে তদন্ত কমিটি কি রিপোর্ট দেবে আর সেই রিপোর্ট ফুটবলের ইমেজ ফেরাতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
দেশকণ্ঠ/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।