• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০০:৪৩
মেজর চাকলাদার অব

কমে যাচ্ছে দেশীয় হকির পরিচিতি

হকির সব থেকে বড় সমস্যা টাকা। টাকা জোগাড় করতে স্পন্সর দরকার। গ্রিণ ডেল্টা প্রয়োজনীয় সাহায্য করছে। এ সাহায্য অনেকটা নিত্য দিনের খরচ বহন করা, ঈদ পার্বণে আলাদা জৌলুসের টাকা; দল বাইরে খেলতে গেলে যে অতিরিক্ত টাকা দরকার সেটা হয় না তাই এবার মমিনুল হক সাইদ সাহেব ফেডেরেশনের ‘ফিকস্ড ডিপোজিট’ভেংগে বিদেশগামী হকি দলকে দেন। এভাবে তহবিল ভেংগে টাকা নেওয়া এই প্রথম ঘটল। উনি ক্যাসিনো সাইদ নামেই পরিচিত। টাকার জন্য তহবিল ভাংগা এটা আশ্চর্যজনক। সেক্রেটারি জেনারেলের হকির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সচল রাখতে টাকা-সরবরাহের প্রতিশ্রুতির নিশ্চয়তা থাকতেই হবে। তহবিল ভেংগে দল পাঠাতে হকি ফেডারেশনের যেকোনো কর্মচারীই পারতেন এতে এত বড় বড় কর্তার মূল্যবান সময় নষ্ট না করলেও চলত। হকিকে সচল রাখতে বেশ কিছু স্পন্সর হাতের মুঠোয় রাখাই কর্তাদের প্রথম দায়িত্ব হওয়া উচিত।
 
হকির দরকার প্রথমত 'কোচ' প্রাধান্য দেখা। ঢাকাতে হকি খেলা এসেছে সেই ১৯০৭ সালে। কোচ সব সময়ই হাতে কলমে খেলা বুঝিয়েছে। আমি নিজে মরহুম সালাম ভাইর কথা বলব, তিনি জালের নেটের ভিতর ১৫ থেকে কুড়িটা বল নিয়ে মাঠে আসতেন । সকালের অনুশীলনের পর তিনি যে কোন একজনকে ডাকতেন, তার থেকে তিরিশ গজ দূরে দাড় করিয়ে ওই খেলোয়াড়ের বামে বা ডাইনোসর বা ডাইনে দেখিয়ে বায়ে বা বায়ে দেখিয়ে ডান দিকে বল ছুড়তেন। ডান বা বাম এর সীমানা পঁচিশ গজ এই বাম ডান দৌড়ে বল ফিরত দিতে দম শেষ। সালাম ভাইকে দেখলে আমরা যে যেখানে পারি লুকাতাম। আব্দুস সাদেক, ইব্রাহীম সাবের এই হকির কিংবদন্তিরা হাতে কলমে শেখাতেন, সেই আমরা আজ হাপিত্যেষ হয়ে বিদেশী কোচ নির্ভর। ক্রমান্বয়ে কর্তাদের বিদেশী কোচ নির্ভরতা আমাদের দেশী কোচদের দক্ষতা উপেক্ষা এবং অবজ্ঞার প্রকাশই প্রমান করছে। আমরা যতবার ভাল করেছি তা দেশী কোচদের তদারকিতেই। একজন ইউরোপীয় কোচ আনলে তার থাকা খাওয়া ২৪ ঘণ্টা গাড়িসহ বিভিন্ন খরচে তহবিল দুর্বল হকির যায় যায় অবস্থা। আজ পর্যন্ত বিদেশী কোচ কোনো আহামরি রেজাল্ট দিতে পারে নাই। 
 
মনে রাখতে হবে প্রচারে প্রসার। দৈনিক পত্রিকাগুলো এক চক্ষু হরিনের মতন ক্রিকেট নিয়ে অন্ধ। ক্রিকেটের পর যতটুকু ক্রীড়া পাতাতে যায়গা থাকে তা ফুটবল খেলা আর সালাহউদ্দিন-কিরণ এই খবর ভরে থাকে। দেশের তৃতীয় নামী খেলা হকি তবে এখন হকির থেকে আর্চারির খবর পত্রিকার পাতাতেই বেশী দেখা যায়। পত্রিকার পাতাতে ছোট্ট একটু খবর কত যে একজন খেলোয়াড়কে উজ্জীবিত করে তার প্রমান আমি। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকাতে একটি হকি ক্যাম্পে তিরিশ জনের নাম এসেছে। সেখানে শাহাব উদ্দিন নামও আছে। এই শাহাব উদ্দিন আমি কিনা সে টা জানতে আমি রামপুরা থেকে ওয়ারি ক্লাবে মমিন ভাইর কাছে যাই, মমিন ভাই বললেন, এই শাহাব উদ্দিন তুইই ভাল খেলছিস; তাই ডাকা হয়েছে। ভাল করার চেষ্টা কর যাতে যখন ছাঁটাই করে বিশ জন রাখব তাতে থাকতে পারিস।ঐ যে পত্রিকাতে নাম দেখা এটাও একটা প্রেরণা। তাই পত্রিকার উচিত সব খেলার উপর প্রাধান্য দেখা।
 
আমার নাম শাহাব উদ্দিন থেকে চাকলাদার হয়ে গেল বিএমএতে গিয়ে। শাহাব উদ্দিন আর একজনও ছিল। ডাইরেক্টিং স্টাফ যখন শাহাব উদ্দিন বলে কল করত; তখন হন্তদন্ত হয়ে হাজির হতাম দুজনেই। যাকে ডেকেছেন তার বাইরের জনকে সাথে সাথেই বিভিন্ন মাত্রায় শাস্তি দেওয়া হতো। হয়ত বলত রাত দুটার সময় অমুক অফিসারের কাছে রিপোর্ট করবে। শীতের রাত দলের সময় দরজাতে নক করা মানে দোযক ঘাড়ে পরা। কত ধরনের শাস্তিই ওঁত পেতে থেকে ঘাড়ে পরত। তাই নামের মর্যাদা পত্রিকা থেকেও হকি খেলোয়াড়রা চায়। তাদের নিতে পাতার আট ‘কলাম’ এর অন্তত এক ‘কলাম’ এই হকি বিষয়ে  বরাদ্দ রাখা হোক। পাঠককে উদ্বুদ্ধ করার জন্য  ক্রীড়া সম্পাদকের মর্জি সব থেকে বেশী প্রয়োজন।
 
হকি ৭১ প্রবর্তিত সময়ে দেশকে বারংবার উজ্জ্বল করেছে। সেই হকি আজ মাঠ থেকে ফেডারেশনে শক্তিশালী। আগামীতে মাঠ আর খেলোয়াড় যাতে ক্রীড়া পাতাতে আলোচিত হয় সে আশা করব।
 
লেখক : সাবেক অধিনায়ক জাতীয় ও সেনাবাহিনী হকিদল এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরুস্কারপ্রাপ্ত
এডিট/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।