• সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
    ২৭ কার্তিক ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২৩:৪৩

স্বাস্থ্য সেবায় বিশ্বনন্দিত কর্মসূচি কমিউনিটি ক্লিনিক

পথরেখা অনলাইন : প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় এক অনন্য মডেল হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক আজ বিশ্বনন্দিত। ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশ যখন এক বিপুল জনসংখ্যার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়ার কথা, সেই সময়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার এই মডেলকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আসিফ ইকবাল  বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত একটি উদ্যোগ। বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ রোগিদের দেয়া হয়। তিনি জানান, স্থানীয় জনগণের জমিতে সরকারের টাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় জনগণই এই ক্লিনিক পরিচালনা করেন। এতে করে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা সম্পর্কে এলাকাবাসীর মধ্যে যেমন সচেতনতা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে সেবার গুণগত মান বজায় রাখতেও তারা ভূমিকা রাখেন।

সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় দেশের গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁচেছে দেয়ার লক্ষে সরকার ২০১৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা  ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করেছে। ডা. আসিফ বলেন, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার এই মডেলটিই আজ বিশ্বব্যাপি সুনাম অর্জন করেছে। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি ও স্বাস্থ্য শিক্ষা দিয়ে থাকে। আবার এটি নারীর ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৬ মে ২০২৩ মঙ্গলবার জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনের ২২তম এজেন্ডায় প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এদিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত  মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এই রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজুলেশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মো. মনোয়ার হোসেন।

‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের এই ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। জনগণের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সেবায় সাম্য প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করেছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বিশেষ দশটি উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম কমিউনিটি ক্লিনিক। এর মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিটি মানুষ বিনামূল্যে মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। যার ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমেছে। স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি শ্রমজীবী নারীদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র স্থাপন করায় প্রান্তিক নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পথ সুগম হয়েছে। এমনকি কভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় সারাবিশ্ব যখন দিশেহারা তখনও বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো স্বাস্থ্য সেবায় এক অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কভিড-১৯-এর টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করে তুলেছে এই কমিউনিটি ক্লিনিক। ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে।

এসব ক্লিনিকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ২৭ রকম ওষুধ দেয়া হয়। ডা. আসিফ জানান, সারাদেশে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ২৫৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ হাজার ২০০টি সেবা দিচ্ছে। অবশিষ্ট ৫৩টি ক্লিনিকে সেবাদানের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি চলছে।তিনি আরো জানান, সরকার ২০১৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা  ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করেছে। যা ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’ নামে পরিচিত। সরকারের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট’ কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য পুরোপুরি প্রস্তত হবে। পরবর্তীতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এই ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হবে।গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা,গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষে প্রয়োজনীয় সামাজিক সহযোগিতা গ্রহণ, ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সম্পদ অথবা অনুদান সংগ্রহ এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য  কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি কার্যকর  রেফারেল পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা এই ট্রাস্টের লক্ষ্য।
পথরেখা/আসো

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।