পথরেখা অনলাইন : ঢাকার দুই সিটির বাসিন্দাদের জন্মনিবন্ধনের সনদ পেতে সীমাহীন ভোগান্তির কথা নতুন নয়। প্রায়ই কার্যকর থাকে না নিবন্ধনের সার্ভার, সনদ হাতে পেতে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় একজন অভিভাবককে। জন্মনিবন্ধনের আবেদন থেকে শুরু করে সনদ হাতে পাওয়া পর্যন্ত কয়েক ধাপের বিড়ম্বনা ও ভোগান্তিতে পেরিয়ে যায় দীর্ঘ সময়। এছাড়া রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। সবমিলিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়ার জন্য তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় রাজধানীর বাসিন্দাদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরিতে যোগদান, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সেবার ১৯টি ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় জন্মসনদের। বলতে গেলে, জন্মনিবন্ধন বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। যা সবার ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে প্রয়োজন।
ঢাকার এমন কোনো মানুষকে খুঁজে পাওয়া কঠিন যিনি তার সন্তানের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে ভোগান্তিতে পড়েননি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে পুঁজি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দালাল চক্র। ‘দ্রুত সময়ে, কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই জন্মসনদ দেওয়া হবে’— এমন প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। টাকা দিলেও হয় না সমাধান। সার্ভার নেই, বাবা-মায়ের নামের বানান ভুল, অনলাইন কপিতে সমস্যাসহ নানা জটিলতার অজুহাতে মাসের পর মাস ঝুলিয়ে রাখা হয় আবেদন।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করলে তার মা-বাবাকে প্রথমে ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের মাধ্যমে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যেতে হয় সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে। সেখান থেকে দেওয়া হয় জন্মসনদ। কিন্তু কোনো ভুল সংশোধন করতে হলে সেটি আর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে করা যাবে না। সেক্ষেত্রে যেতে হবে সদরঘাটে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। এছাড়া জন্মসনদ নিতে প্রথমে অনলাইনে আবেদন করে যেতে হয় সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে। সেখানে জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তথ্য ইনপুট দেন। পরে সেটি ভেরিফায়েড হয়ে আসে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় থেকে। জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হননি— এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যেন দুষ্কর। তবে, দালাল ধরে দুই/চার হাজার টাকা খরচ করলে ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে আসে। তারপরও তাদের (দালাল) মাধ্যমে কাজ করানোর পরও সার্ভার সমস্যায় জন্মনিবন্ধন নেওয়ার কাজ ঝুলে থাকে মাসের পর মাস।
পথরেখা/অআ