• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৭ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৩:৩৪

মণিপুরে নারীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ বিবস্ত্র

পথরেখা অনলাইন : ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ৩ নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং তাদের একজনকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ভুয়া খবরে উত্তেজিত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে এ তথ্য মিলেছে বলে বৃহস্পতিবার মণিপুর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, জনজাতি অধ্যুষিত মণিপুরে সহিংসতার শিকার ওই ৩ নারী এবং তাদের ওপর হামলাকারীরা পরস্পর ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর। গত ৩ মে মণিপুরে দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর হামলা থেকে বাঁচতে তারা রাজধানী থেকে দূরের থৌবল জেলার নংপোক সেংমাই থানার একটি গ্রামে আশ্রয় নেন। থানা থেকে ওই গ্রামটির দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার।
 
কর্মকর্তারা জানান, ঘটনার আগের দিন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, ওই নারীরা যে জনগোষ্ঠীর— সেই গোষ্ঠীর কয়েকজন পুরুষ হামলাকারীদের জনগোষ্ঠীর একাধিক নারীকে ধর্ষণ করেছেন, যা ছিল আসলে গুজব বা ভুয়া সংবাদ। তার প্রতিশোধ নিতেই ওই নারীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতিকারীরা। হামলার শিকার আদিবাসী সেই দলটিতে সদস্য ছিলেন মোট ৫ জন। তারা হলেন, ৫৬ ও ১৯ বছর বয়সী ২ পুরুষ এবং ৩ জন নারী। যাদের বয়স যথাক্রমে ২১, ৪২ এবং ৫২ বছর। এই ৫ জনের মধ্যে ২ পুরুষ ও ২১ বছরের ওই নারী এক পরিবারের সদস্য। ওই তরুণী এবং ১৯ বছরের সেই তরুণ সম্পর্কে ভাইবোন এবং ৫৬ বছর বয়সী পুরুষটি ছিলেন তাদের বাবা।
 
যে গ্রামে তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন, পরের দিন ৪ মে সেখানে দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায় এবং নির্বিচারে হত্যা-লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এ সময় তাদের অনেকের হাতেই একে-৪৭, ইনসাস ও এএলআরসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ছিল। হামলা থেকে বাঁচতে ওই পাঁচজন গ্রামের পাশের একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। পরে নংপোক সেংমাই থানার পুলিশ সদস্যদের একটি দল উদ্ধার করে থানার পথে রওনা হন। কিন্তু মাঝপথে হামলাকারীদের একটি দল পুলিশের গাড়ি ঘিরে ফেলে এবং গতিরোধ করে ওই পাঁচজনকে ছিনিয়ে নেয়। প্রথমেই ৫৬ বছর বয়সী ব্যক্তিকে হত্যা করে, তারপর তারা ওই তিন নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় হাঁটতে বাধ্য করে। এ সময় বোনকে বাঁচাতে ১৯ বছরের তরুণটি এগিয়ে এলে তাকেও হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা।
 
নারীদের হাঁটিয়ে একটি মাঠের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাদের ৩ জনই গণধর্ষণের শিকার হননি। দুষ্কৃতিকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় থাকায় ধর্ষণের হাত থেকে বেঁচে যান ৪২ ও ৫২ বছর বয়সী দুই নারী। কিন্তু ২১ বছরের ওই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। যে মাঠে ঘটনাটি ঘটেছিল, নংপোক সেংমাই থানা থেকে তার দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। ওই নারীদের নগ্ন করে হাঁটতে বাধ্য করা ও মাঠের দিকে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও বুধবার ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দুষ্কৃতিকারীরা চলে যাওয়ার পর কঙ্গলকপি জেলার সাইকুল থানায় ‘জিরো এফআইআর’ দায়ের করেন ওই তরুণী। প্রসঙ্গত, ‘সাধারণ এফআইআর’ বলে, ঘটনাস্থল যে থানা এলাকায়, এফআইআর দায়ের করতে হবে সেখানেই। কিন্তু ‘জিরো এফআইআর’ যে কোনও থানায় দায়ের করা যায়। অপরাধের ঘটনা যে থানার এলাকাতেই ঘটুক, ওই থানা অভিযোগ তখন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে নির্যাতিতা বা তার পরিবারের লোকদের ঘটনাস্থলের থানায় যেতে হয় না।
 
তবে মণিপুর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে— ‘জিরো এফআইআর’ করার পরও গত আড়াই মাসে অপরাধীদের ধরতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। তাদের তৎপরতা শুরু হয়েছে বুধবার থেকে, সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর। ইতোমধ্যে ভয়াবহ সেই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মণিপুরের একটি আদালতে ধর্ষণ-নিগ্রহের শিকার ওই তরুণী জবানবন্দি দিয়েছেন।
পথরেখা/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।