• মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৯ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২১:২৭
মাতুয়াইলে বাসে আগুন আটক নাটক গয়েশ্বর-আমানের

ঢাকায় বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপির তাণ্ডব

  • জাতীয়       
  • ২৯ জুলাই, ২০২৩       
  • ৪১
  •       
  • ২৯-০৭-২০২৩, ১৭:১৬:৫৪

পথরেখা অনলাইন : লাঠিসোঁটা হাতে ঢাকার চার প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন, প্রাইভেট কার ভাঙচুর করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে জড়াচ্ছেন সংঘর্ষে তারা। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে আরও একটি বাসে আগুন দেন বিএনপি কর্মীরা।
 
২৯ জুলাই সরেজমিনে রাজধানীর প্রবেশ পথ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত দুপাশের রাস্তায় পুলিশের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। এ সময় বিভিন্ন পয়েন্টে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।  পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির কর্মসূচির কারণে যাত্রাবাড়ীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া জলকামানসহ পুলিশের বেশ কিছু সাঁজোয়া যান বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা রয়েছে। বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির কারণে যাত্রাবাড়ীতে যানচলাচল করছে। তবে অন্য স্বাভাবিক দিনের তুলনায় যান চলাচল কিছুটা কম।  
 
 
রাজধানীর মাতুয়াইলে একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যখন পুলিশের ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল সে সময় এ ঘটনা ঘটে। সকাল ১১টার পর থেকে যাত্রাবাড়ী শনির আখড়া মাতুয়াইল এলাকায় দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। চলে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী। বন্ধ থাকে যান চলাচল। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শনির আখড়া যাত্রাবাড়ী এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ঠিক দেড়টায় আরো একটি বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপি।
 
বিএনপি নেতা আমান গয়েশ্বর আটক নাটক 
 
 
রাজধানীর গাবতলীর আমিনবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমানকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় আরও চার জনকে আটক করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাবতলী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে আমানউল্লাহ আমান রাস্তায় নামেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয় রাস্তা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য যেহেতু ডিএমপির পক্ষ থেকে কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। এর কিছুক্ষণ পর মাজার রোডের নাবিল পরিবহনের সামনে এসে আমানউল্লাহ আমান রাস্তায় শুয়ে পড়েন। পরে তাকে পুলিশ ভ্যান তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
 
এদিকে নয়া বাজারে পুলিশ অবস্থান নেওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধোলাইখালের দিকে জড়ো হন। সেখানে গয়েশ্বর ও সালাম ছাড়াও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছিলেন। সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপিকর্মীদের লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ, কাঁদুনে গ্যাসও ছাড়ে। পুলিশ গুলিও ছোড়ে বলে বিএনপিকর্মীদের অভিযোগ। আহত অবস্থায় গয়েশ্বর একটি দোকানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী জানিয়েছেন, ধোলাইখাল এলাকায় মিছিল বের করে দুর্ভোগ সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সেজন্য তাকে আটক করা হয়েছে।
 
 
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। জবাবে ইট-পাটকেল ছোড়েন অবস্থানকারীরা। এতে পিছু হটেছে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা চলছে। পুলিশ বলছে, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, একই গাড়িতে করে আব্দুস সালাম আজাদকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। জানা গেছে, সোনারগাঁও হোটেল থেকে উন্নতমানের খাবার এনে ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বরকে আপ্যায়ন করা হয়। এরপর তাকে ডিবির একটি গাড়িতে করে ছেড়ে দেয়া হয়। ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, রাজধানীর ধোলাইখাল মোড়ে বিএনপি ও পুলিশের মাঝে পড়ে যান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বিএনপি কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। তাকে সেভ করতেই মূলত ডিবিতে নিয়ে আসে হয়।
 
গাবতলীতে সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় কর্মীদের বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়া ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের জন্য হাসপাতালে খাবার পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তার সহকারি একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু) জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমানকে দেখতে যান। এসময় তিনি বিএনপি নেতাকে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো দুপুরের খাবার, বিভিন্ন প্রকার মৌসুমী ফল ও জুসের এক বুকেট তুলে দেন।
 
আমানউল্লাহ আমানকে গাজী হাফিজুর রহমান জানান, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার জন্য এসকল খাবার, ফল ও জুস পাঠিয়েছেন এবং আপনার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর জানতে চেয়েছেন। তিনি আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।’ লিকু আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য দেশের ভেতরে অন্য যে কোনো হাসপাতালে আমানউল্লাহ আমান যেতে চাইলে তারও সুব্যবস্থা করে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এসব উপহার গ্রহণ করে আমানউল্লাহ আমান মানবতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
 
এর আগে পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে বেলা ১১টার দিকে গাবতলীতে আমানের নেতৃত্বে জড়ো হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে যান আমান উল্লাহ আমান। তখন পুলিশের এক কর্মকর্তা আমানকে নেতাকর্মী নিয়ে সেখান থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে সরে যেতে বলেন। অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি নেই বলে জানান তিনি। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তখন আওয়ামী লীগ এবং দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা চারপাশ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘিরে ফেলে। তখনই দুই দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়।
 
 
আটকের আগে আমান উল্লাহ আমানকে উচ্চস্বরে বলতে শোনা যায়, ‘আমি এ দেশের ৪ বারের এমপি (সংসদ সদস্য) ছিলাম, দুবারের মন্ত্রী ছিলাম।’ পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা (পুলিশ) প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। আপনারা আমাকে নিরাপত্তা দেবেন।’ পুলিশের সঙ্গে যাওয়ার সময় রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়েন আমান। প্রায় দু-তিন মিনিট তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। তখন পুলিশ তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গাড়িতে করে শেরে বাংলা নগরের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে যায়
 
এদিকে, রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎই বেশ কয়েকজন এসে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ভাঙচুর করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে যায় এ ঘটনা।
 
গাবতলী মাজার রোডের মুখে গণতন্ত্র মঞ্চের আজকের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে গেলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক, গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের ড. ইউসুফ সেলিমকে আটক করে দারুস সালাম থানায় নিয়ে গেছে। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আব্দুর রাজ্জাককেও আটক করেছে পুলিশ।  ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পুলিশ কোনো ‘অ্যাকশনে’ যায়নি।  
পথরেখা/আসো
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।