- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
পথরেখা অনলাইন : জাতীয় দলে সাত নাম্বার পজিশন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। এখানে একেকবার একেকজনকে নিয়ে চিন্তা করা হয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে তার কোন সমাধান এসেছে কিনা সেটা বলা যায়নি। আরও ছোট করে বললে বলতে হবে, এই পজিশনের সমাধান কি করতে পেয়েছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। যে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তাকে নিয়ে সাত নাম্বারের চিন্তা করা হয়েছিল। এছাড়া আফিফ হোসেন ধ্রুব, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শামীম হোসেন পাটোয়ারীদের ভাবনায় আনা হয়েছিল। এই সময়ে চার শ্রীলঙ্কানের যেন পুনর্মিলনী হয়ে গেল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মাঝ উইকেটে। গামিনি ডি সিলভা, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, হাসান তিলকারত্নের সঙ্গে চায়িক হাথুরুসিংহে। শেষ নামটি অপরিচিত ঠেকলেও ‘হাথুরুসিংহে’ পদবি দেখে নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে তিনি কে। হাথুরু এবার এসেছেন তাঁর ছেলেকে নিয়ে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই মাঠে এসেছিলেন তিনি। মাঠে চায়িকের হাতে ল্যাপটপ দেখা গেল। হাথুরু-পুত্র ঢাকায় ঘুরতে এলেও তাঁর বাবার এখন ভাবনাজুড়ে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ। বড় দুটি টুর্নামেন্টের আগে দলের এক-দুটি পজিশন ছাড়া বাকিগুলো অনেকটাই নিশ্চিত।
সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকা ৭ নম্বর পজিশন বা ফিনিশারের ভূমিকার প্রার্থীও কমিয়ে এনেছেন নির্বাচকেরা। জাতীয় দলের স্কিল ক্যাম্পে থেকে বাদ পড়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, ইয়াসির আলী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহান। ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার ও শামীম পাটোয়ারি। এঁদের থেকেই আফিফ ও শামীমকে রাখা হয়েছে ১৭ জনের দলে। কাউকে আবার রিজার্ভ বেঞ্চেও রাখার সম্ভাবনা থাকলেও সেটি করা হয়নি। আগের দিন ঢাকায় ফিরে পরদিনই মিরপুরে এলেন হাথুরুসিংহে। মাঠে এসে প্রথম বৈঠক করলেন নির্বাচকদের সঙ্গে। ততক্ষণে আগের দিনের মতো রঙ্গনা হেরাথের স্পট বোলিং ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ-তাইজুল ইসলামরা। তবে এই ক্লাসে যোগ দিলেন মাহমুদউল্লাহ। কয়েক বছর ধরে এই অলরাউন্ডারকে বোলিংয়ে আগের মতো অবদান রাখতে দেখা যায় না। বিসিবির মেডিকেল বিভাগে শারীরিক পরীক্ষা ও ফিটনেস পরীক্ষায় ভালো স্কোর নিয়েই উতরে গেছেন সাবেক অধিনায়ক। ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের অনুশীলনের পাশাপাশি বোলিংয়ে নজর দিয়েছেন তিনি। বোলিং করেছেন বেশ কিছুক্ষণ।
কিন্তু বড় টুর্নামেন্টে তাঁর বোলিংয়ের ভূমিকাও যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজন হতে পারে দলের। তাইজুল-মাহমুদউল্লাহদের পর তিন বাঁহাতি অলরাউন্ডার-আফিফ, সৌম্য ও শামীমকে নিয়ে কাজ করেন হেরাথ। দুই স্পিনারের সঙ্গে সৌম্য ছিলেন পেসার। যদিও পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড ফিরেছেন। তবু হেরাথের কাছ থেকে স্লোয়ার, সুইং ও স্পট বোলিংয়ের দীক্ষা নেন সৌম্য। সাত নম্বর পজিশনের জন্য তাঁকেও প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্বাচকদের সঙ্গে মিটিং শেষে মাঠের মাঝ দিয়ে হাথুরু চলে গেলেন ইনডোরে। বোলিং অনুশীলন শেষে আফিফ-শামীমরাও চলে গেলেন হাথুরুর ক্লাসে। সেখানে সাত থেকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের পরীক্ষা নিলেন এ শ্রীলঙ্কান কোচ। এদিকে বাংলাদেশকে যে কৌশলে তৈরি করছেন হাথুরু, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন তিনি। বৃষ্টির কারণে রুদ্ধদ্বার অনুশীলন ঠিকঠাক করা যাচ্ছেনা। রবিবারের পর সোমবারও বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে। তবে মনোবিদ ডক্টর ফিল জন্সির সঙ্গে ক্রিকেটারদের সেশনটা হলো বেশ। সেই সেশনে মিরাজ, শান্ত, মোস্তাফিজ, শামীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এশিয়া কাপ সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের প্রথম চার দিনের অনুশীলন সেশনে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার সীমিত রাখছে বিসিবি।
এ নিয়ে অবশ্য বেশ আলোচনাও হচ্ছে। অবশ্য বিসিবির এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম। ফুটবলে এ রীতি চালু আগে থেকেই। ক্রিকেটেও এখন অনেক দেশ চালু করেছে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে আসার পর বিসিবিও করছে। বিসিবি জানিয়েছে, কবে কোন অনুশীলন সেশন করবে বাংলাদেশ দল। ১৩ ও ১৪ আগস্ট বেলা আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টার সেশন রাখা হয়েছিল। অনুশীলন পুরোপুরি না হওয়ায় বিসিবির বোর্ড রুমে মনোবিদ ড. ফিল জন্সির সুযোগ হয়েছে বেশ সময় নিয়ে তাঁর সেশন পরিচালনা করতে। ধীরে ধীরে অনুশীলনের ব্যাপ্তি কমে আসবে তাসকিন-মিরাজদের। অনুশীলন সূচিতে ১-২ দিনের বিরতিও রাখা হয়েছে। যেন বড় টুর্নামেন্টের আগে ক্লান্তি কিংবা শরীরে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। এশিয়া কাপে কোন কৌশলে বাংলাদেশ দলকে তৈরি করতে চান হাথুরু, সেটির একটি ধারণা মিলেছিল গত ২৪ জুন তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়। বাংলাদেশ কোচ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমরা যখন অনুশীলন করি, সাধারণত অনুশীলন সেশনের তীব্রতা কেমন থাকে? শুরুতে বোলারদের বোলিং, ফিল্ডিং, ফিটনেসের ভলিউম একটু বেশি থাকে। যখন ম্যাচের কাছাকাছি আমরা এসে যাই, তখন এই ভলিউম কমিয়ে দিই, ইনটেনসিটি বেশি থাকে। ম্যাচের আগে অনেক বেশি অনুশীলন করি না, বড় সেশনে অনুশীলন করি না’।
হাথুরু যেটি বলেছেন, সেটি বিসিবির দেওয়া সূচিতেও পরিষ্কার। শুরুর দুটি সেশন ছয় ঘণ্টার। পরের দুটি চার ঘণ্টা। শেষের পাঁচ সেশন তিন ঘণ্টার। এশিয়া কাপ যত কাছাকাছি আসবে, বাংলাদেশের অনুশীলনের ব্যাপ্তিও কমে আসবে। প্রথম চার দিনের অনুশীলনের ‘ভলিউম’ যে বড়, সেটিও সূচিতে পরিষ্কার। এ সময় তিনটি স্কিল অর্থাৎ ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে থাকবে ফিটনেস ট্রেনিং। এই সেশনগুলোয় হাথুরু কাজ করবেন একেবারে সূক্ষ্ম কৌশলগত বিষয় নিয়ে। ভালো প্রস্তুতি সারতেই এ সময়ে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকারে ‘নিষেধাজ্ঞা’। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট চায় না, তাদের প্রস্তুতি কিংবা কৌশল সংবাদমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাউর হোক। বাংলাদেশও ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এশিয়া সেরা আসরে খেলতে চায়।
পথরেখা/আসো
পথরেখা : আমাদের কথা