পথরেখা অনলাইন : ফেভারিট ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী ফুটবল বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করল স্পেন। ইতিহাস গড়ার এই ম্যাচে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়েছে স্পেন । ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত ফাইনালে বিজয়ীদের পক্ষে জয়সুচক একমাত্র গোলটি করেছেন অধিনায়ক ওলগা কারমোনা। সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৭৬ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইংলিশদের সামনে দুর্দান্ত ছিল স্প্যানিশরা। দ্বিতীয়ার্ধে পাওয়া পেনাল্টিসহ আরো কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছে দলটি।
বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগেই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল স্প্যানিশদের। কারণ টুর্নামেন্টের জন্য তাদের প্রস্তুতি ছিল বিশৃংখলায় ভরা। দলের ১৫জন খেলোয়াড় স্পেন ফুটবল ফেডারশেনকে ইমেইল করে তাদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না রাখার জন্য বলেছিল। তাদের ওই প্রতিবাদ ছিল কোচ হোর্হে ভিলদার বিপক্ষে। তাদের অভিযোগ, তিনি বেশ কঠোর। তরপরও ভিলদা তার দায়িত্ব ধরে রেখেছেন এবং দলটিকে স্থির রেখেছেন। শেষ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে তার দল রচনা করেছে নতুন এক ইতিহাস।
অপরদিকে বিশ্বকাপের ফাইনালে পরপর দুইবার পরাজয়ের শিকার হলেন ইংল্যান্ডের কোচ সারিনা উইগম্যান।
এই নিয়ে পঞ্চম কোন দেশ নারী বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করল। এর আগে ১৯৯১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, নরওয়ে ও জাপান। স্পেনের রানী লেতিজিয়ার উপস্থিতিতে ম্যাচের ২৯ মিনিটে নীচু শটে জয়সুচক গোলটি করেন লেফট ব্যাক ও অধিনায়ক কারমোনা। এই হার দিয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠা চেলসি স্ট্রাইকার লরেন জেমসেক দলে না ফেরানোর মাসুল দিয়েছেন ইংলিশ কোচ উইগম্যান। ফাইনালে তিনি আস্থা রেখেছিলেন আগের সেমিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দেয়া দলের উপর।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু লরেন হেম্পের নেয়া দূর্বল শটের বলটি সহজেই গ্রীবে নেন স্প্যানিশ গোল রক্ষক ক্যাটা কোল। পাল্টা আক্রমন চালিয়ে এরপর ব্যর্থ হয় স্পেন। সালমা প্যারালুয়েলোর পাঠানো বলটি বক্সের ছয়গজ দূর থেকেই জালে জড়াতে পারেননি অ্যালেক্সিয়া পুটেলাস। শেষ পর্যন্ত ইংলিশ গোল রক্ষক মেরি ইয়ার্পস এর পরীক্ষা নিতে সক্ষম হন আলবা রেডন্ডো। দলগত আরো একটি প্রচেস্টা থেকে ২৪তম মিনিটে গোল করতে ব্যর্থ হন হেম্প। পরের মিনিটেই একজন দর্শক নিরাপত্তা বেস্টনি পেড়িয়ে মাঠে প্রবেশ করলে ম্যাচে বিঘ্ন ঘটে। তবে দ্রুতই তাকে সরিয়ে নেয় নিরাপত্তা কর্মীরা।
এর ৫ মিনিট পরেই স্প্যানিশদের সামনে আসে ম্যাচের সেরা মুহুর্তটি। ২৯ মিনিটে কারমোনা গোল করে এগিয়ে দেয় বিশ্বকাপে আগের কোন আসরে নকউইট পর্বে জয় না পাওয়া দল স্পেনকে। এই আসরেও গ্রুপ পর্বে জাপানের কাছে ৪-০ গোলে হেরেছিল তারা। মারিওনা ক্যালডেন্টের নিখুঁত পাসের বল ঝাপিয়ে পড়ে জালে জড়িয়ে দেন কারমোনা। ম্যাচে ইংল্যান্ডের বার্সেলোনা স্ট্রাইকার ১৯ বছর বয়সি প্যারালুয়েলোর পারফর্মেন্স ছিল চোখে পড়ার মতো। বিরতির পর গোল পরিশোধের প্রানপন চেস্টা করেও ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। উল্টো শেষ বাঁশি বাজার ২০ মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়ে যায় স্পেন। বক্সের ভেতর কেইরা ওয়ালসের হ্যান্ডবলে পেনাল্টি পায় স্প্যানিশরা। কিন্তু জেনিফার হার্মসোর দূর্বল শটের বল দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন ইংলিশ গোল রক্ষক। ম্যাচে ১৩ মিনিটের ইনজুরি টাইমেও গোল পরিশোধ করতে পারেনি ইংল্যান্ড। ভেঙ্গে যায় তাদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।
পথরেখা/আসো