পথরেখা অনলাইন : আমেরিকান ক্লাবের হয়ে ৮ ম্যাচ খেলে ফেললেও, শীর্ষ লিগ এমএলএসে অভিষেক হচ্ছিল না লিওনেল মেসির। সেই অভিষেকের ক্ষণ ঘনিয়ে আসতেই ইন্টার মায়ামি কোচ জানালেন, আর্জেন্টাইন মহাতারকা খেলবেন কিনা নিশ্চিত নন। সেই ধারাবাহিকতায় মেসিকে ছাড়াই মায়ামি প্রথমার্ধে খেলতে নেমেছিল। এরপর মেসি তো খেললেনই, সতীর্থের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় গোল করে এমএলএস অভিষেক রাঙিয়ে দিলেন। সেই গোলে নিউইয়র্ক রেড বুলসকে ২-০ গোলে হারিয়েছে টাটা মার্টিনোর দল। টানা ম্যাচ খেলার ধকল কমাতে মেসিকে বেঞ্চে রেখেই রোববার নিউইয়র্ক রেড বুলসের মাঠে খেলতে নেমেছিল মায়ামি। তবে তিনি ঠিকই ম্যাচ খেলার বিবেচনায় ছিলেন মার্টিনোর। শুরুর একাদশে ছিলেন না বার্সেলোনা কিংবদন্তি সার্জিও বুসকেটসও। মেসি ছাড়া দলের অন্য গোলটি করেছেন ডিয়েগো গোমেজ। বল দখলে এগিয়ে থাকলেও এদিন শুরুতে গোলের দেখা পাচ্ছিল না ফ্লোরিডার ক্লাবটি। সেই তুলনায় বেশি সুযোগ তৈরি করছিল নিউইয়র্ক।
ম্যাচের শুরু থেকে বলের দখলে পিছিয়ে থাকলেও স্বাগতিক নিউইয়র্ক মায়ামি ডিফেন্ডারদের তটস্থ করে রেখেছিল। ফলে ৩০ মিনিট প্রতিপক্ষের গোলবারের লক্ষ্যে কোনো শটই নিতে পারেনি মার্টিনোর শিষ্যরা। তবে এরপরই ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হন সফরকারীরা। যার ফল হিসেবে ৩৬ মিনিটেই মায়ামি লিড পেয়ে যায়। দলটির জার্সিতে অভিষেক গোল করেছেন প্যারাগুয়েন মিডফিল্ডার গোমেজ। নোয়াহ এলিয়েন ডি-বক্সের বেশ বাইরে থেকে দারুণ এক পাসে গোমেজকে খুঁজে নেন। এরপর নিখুঁত ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই তরুণ মিডফিল্ডার। মায়ামির সেই লিড অল্প সময়ের ব্যবধানেই ভেঙে দিতে পারত নিউইয়র্ক। তবে প্রথমে পাওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পরে ভিএআরে বদলে যায়। রিপ্লেতে দেখা যায় ডি-বক্সে থাকাডেভিড রুইজের হাতে নয় কাঁধে লেগেছে বলটি। ফলে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার আশা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত আর হয়ে উঠেনি। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় মায়ামি।
বিরতির পর গা গরম করতে থাকা মেসিকে দেখেই তিনি মাঠে নামছেন- সেই আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। তবে তাকে মাঠে নামাতে মার্টিনো ৬০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। প্রতিপক্ষের ক্রমাগত আধিপত্য দেখে প্রধান তারকা নামলেন মাঠে। কেবল মেসিই নন, তার আমেরিকা অধ্যায়ে নতুন করে সঙ্গী হওয়া বুসকেটসকেও একইসঙ্গে নামানো হয়। হয়তো মায়ামিকে তারা যেকোনো সময় ধরে ফেলার আশঙ্কায় ছিলেন কোচ। এরপরই অবশ্য ম্যাচে ফিরতে শুরু করে মায়ামি। দৃশ্যপটে বদল আনা মেসি মাঠে নেমে দারুণ কিছু সুযোগও তৈরি করেন। যদিও সেগুলো চূড়ান্ত পরিণতি পাচ্ছিল না। ৮৭ মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক আদায় করে নেন মেসি। তবে মেসির ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়ালে বাঁধা পেয়ে ফিরে আসে। এরপর অবশ্য তাকে বেশিক্ষণ নিরাশ থাকতে হয়নি। এর আগে ওপেন কাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কেবল গোলবিহীন ছিলেন মেসি। মায়ামির হয়ে তার আগের সাত ম্যাচেই তিনি টানা জালের দেখা পেয়েছেন।
ম্যাচের ৮৯তম মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এলএমটেন বল বাড়ান বেঞ্জামিন ক্রামাশ্চিকে। পরে ফিরতি বল টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন মেসি। শেষ পর্যন্ত দুই গোলের দারুণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মায়ামি। এই জয়ে ২৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানি থেকে একধাপ উপরে ওঠে এলেন মেসিরা। ১৫ নম্বরে তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে টরন্টো এফসি। তবে আগেই টানা ম্যাচ হারায় মায়ামির প্লে-অফে খেলার আশা শেষ হয়ে যায়। শেষ দল হিসেবে প্লে-অফে উঠে গেছে শিকাগো ফায়ার।
পথরেখা/অআ