• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৭ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:১৫

লো-কার্ব ডায়েট শুরুকরার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

পথরেখা অনলাইন : প্রতিদিন দুপুরে অফিসে অল্প ভাত খাচ্ছেন, বিকালের নাস্তায় স্ন্যাকস। ভাবছেন, কম খাবারই তো খাচ্ছেন। এদিকে শরীরে যে ফ্যাট জমছে সেটা নিয়েও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। তার মানে যে ধরনের খাবার অফিসে বসে খাচ্ছেন সেটাই দিন দিন আপনাকে অসুস্থতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে! আবার বাড়িতে থেকে কম খাবার খেয়েও অনেকের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। যদি এমন হয়ে থাকে, তার মানে সময় হয়েছে ব্যালেন্সড ডায়েট রুটিন মেনে চলার। বডি ফিটনেস আনার জন্য অনেকেই লো-কার্ব ডায়েট ফলো করতে চান। কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন অথবা শুরু করার পর কী কী বিষয় জানা উচিত সেগুলো নিয়ে অনেকেই কনফিউশনে থাকেন। আজকের আর্টিকেলে জানাবো লো-কার্ব ডায়েট শুরু করার আগে যেসব বিষয় জানা উচিত সেগুলো নিয়ে।
 
লো-কার্ব ডায়েট কী?
লো-কার্ব ডায়েট হচ্ছে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া। একে কিটো ডায়েটও বলা হয়। তবে সব লো-কার্ব ডায়েটের রেজাল্ট কিটো ডায়েটের মতো নয়। এই ডায়েটের অনেকগুলো ধরন আছে। প্রতিটি ডায়েটে আলাদা আলাদা নিয়ম ফলো করা হয়। সাথে কতটুকু পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট আপনি খেতে পারবেন সেটা নির্ধারিত করা থাকে আলাদা আলাদা ডায়েটে।
 
লো-কার্ব ডায়েট 
কী খাবো, কী খাবো না?
ডায়েট শুরুর আগে বেশিরভাগ মানুষের প্রথম প্রশ্ন, আমি ডায়েট করতে চাই, কী কী বাদ দিতে হবে? এর উত্তর সহজ। চিনি! শরীরে অতিরিক্ত চিনি হয়ে গেলে সেগুলো শরীরে জমে থাকতে শুরু করে। যেখান থেকেই মূলত মেদ বা বাড়তি ওজনের শুরু হয়। তাই খাবার তালিকা থেকে চিনি যত দ্রুত সম্ভব বাদ দিয়ে দিতে হবে। এর সঙ্গে শর্করাজাতীয় খাবার, যেমন পাউরুটি, ভাত, আলু, পাস্তা, নুডলস খাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে ফেলতে হবে। এসব খাবারের বিপরীতে খেতে পারেন মাংস, মাছ, ডিম, সবুজ শাকসবজি, বাটার, ওটস, মিষ্টি আলু, ব্রাউন রাইস, বাদাম ও শস্যবীজ, অলিভ অয়েল,ফল আপেল, স্ট্রবেরি। মিষ্টি জাতীয় ফল যত কম হবে তত ভালো।খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে। শরীরে জমে থাকা চর্বি কমাতে সাহায্য করে পানি। চা-কফিও পান করতে পারেন, তবে সেটিও হতে হবে সুগার ফ্রি। বাজারে যেসব জিরো ক্যালরি বা লেস সুগার নামে ডায়েট কোক পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
 
কতটুকু খাবার খাবো?
ডায়েট করার শুরুতে কখন আর কতটুকু খেতে হবে তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। খাবারের সময়টা হচ্ছে, যখন ক্ষুধা পাচ্ছে তখনই খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই পরিমাণে অল্প। যখন মনে হবে, ক্ষুধা মিটেছে, তখনই খাওয়া বন্ধ করুন। প্রয়োজনের বেশি না খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে ডায়েটের ফলাফল খুব দ্রুত নজরে আসবে।
 
কোন খাবারে কতটুকু কার্ব আছে?
বেশিরভাগ লো-কার্ব ডায়েটে ২০-৫০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই এমনভাবে খাবার বেছে নিতে হবে যেন তাতে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি থাকে। আমি কয়েকটি খাবারের কথা বলছি যেগুলোতে ১৫ গ্রাম পরিমাণ কার্ব থাকে।
 
ডায়েটের খাবার 
১৫ গ্রাম পরিমাণের খাবারঃ মাঝারি সাইজের আপেল অথবা মালটা, ১ কাপ তরমুজের টুকরো, একটি মিডিয়াম সাইজের কলার অর্ধেক, ২ চা চামচ কিসমিস, ৮ আউন্স দুধ, ৬ আউন্স টকদই, ১/২ কাপ ভুট্টা, ১/২ কাপ শিমের বিচি, ১/২ কাপ মটরশুঁটি, ১টি আলু (বেক করা), ১টি রুটি, ১/৩ কাপ ভাত। এই খাবারগুলো প্রতিদিনের তালিকায় আপনি রাখতে পারেন। এছাড়া আপনি যে খাবারটি খেতে চাচ্ছেন সেটিতে কতটুকু পরিমাণ কার্ব আছে জেনে নিয়ে তবেই খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন। লো-কার্ব মানে খাদ্যতালিকা থেকে শর্করা একবারেই বাদ এমন নয়। তবে একেকজনের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী, শর্করা গ্রহণের মান ভিন্ন ভিন্ন হবে। গড় হিসেবে, লো-কার্ব ডায়েটে প্রতিদিন ৫০ গ্রাম বা এর কম পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করা যায়।
 
সপ্তাহে কতটুকু ওজন কমবে?
লো-কার্বে সপ্তাহে ঠিক কতটুকু ওজন কমানো যায় সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। কখন থেকে ডায়েট শুরু হচ্ছে আর প্রতিদিন ঠিক কতখানি ক্যালরি খরচ হচ্ছে সেটার উপরেই মূলত ওজন কমানোর বিষয়টি নির্ভর করে। যদিও গড় হিসেবে, যথাযথ শারীরিক পরিশ্রম করলে সপ্তাহে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন ঝড়ানো সম্ভব।
 
উপকারিতা
অনেকেই ভাবেন, লো কার্ব ডায়েট মানে শুধু ওজন কমানো। এর অন্য কোনো বেনিফিট নেই। এমন ধারণা কিন্তু সঠিক নয়। কারণ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং এক্সারসাইজ করা- এই ডায়েট প্ল্যানে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এবং মেটাবলিক সিনড্রোমের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওবেসিটির কম্বিনেশন) ঝুঁকি কমায় এই ডায়েট।লো-কার্ব ডায়েট প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার পুষ্টিবিদ ফ্রাঞ্জিসকা স্প্রিটজার বলেন,যদি প্রতিদিনের শর্করা গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়, তবে রক্তে চিনি ও ইনসুলিনের মাত্রা নিজ থেকেই অনেকটা কমে আসবে। এতে মেটাবলিজম বাড়ে, সঙ্গে রক্তে ইনসুলিন মাত্রা কমে আসতে শুরু করে। আর এর সবচেয়ে বড় সুফল ভোগ করবেন যারা টাইপ-টু ডায়াবেটিসে ভুগছেন।
 
এই ডায়েট কাদের ফলো করা উচিত নয়?
লো-কার্ব ডায়েট শরীরের জন্য ভালো হলেও পুষ্টিবিদগণ সাধারণত কয়েক ধরনের ব্যক্তিকে এই ডায়েট ফলো না করার পরামর্শ দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের সাথে অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন এবং ইনসুলিন নিচ্ছেন উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন এমন কেউ
সদ্য মা হয়েছেন এমন নারী যাদের কিডনি সমস্যা আছে টিনেজার
 
দরকারি কিছু পরামর্শ
১) শর্করা কম খাওয়ার পর অনেকেই প্রোটিন বা ফ্যাটজাতীয় খাবার গ্রহণের মাত্রা অতিরিক্ত হারে বাড়িয়ে দেন। এতে সুফল ভোগের চেয়ে অপকারই বাড়তে থাকে। তাই আপনার প্রয়োজন বুঝে খাবার গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
২) নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। প্রতিদিন ভোরে অন্তত ২০ মিনিট হাঁটা অথবা ব্যায়ামের অভ্যাস করুন।
৩) রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। নিয়মিত ঘুম বা বিশ্রাম এই ডায়েট কার্যকর করতে সাহায্য করে।
 
যদি আপনার শারীরিক কোনো সমস্যা থাকে এবং এই ডায়েট শুরু করতে চান, তাহলে শুরুতে একবার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিন। লো-কার্ব ডায়েট মেনে চললে শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনই যেসব অভ্যাস আপনি অনেকদিন ধরে বদলাতে পারছিলেন না সেটাও বদলে ফেলা যায়। সুস্থ থাকতে হলে আপনার শরীরের যত্ন তো আপনাকেই নিতে হবে, তাই না? ডায়েট রুটিন তৈরি করলে সেটি প্রোপারলি মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন।
পথরেখা/অআ
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।