৫২ বছর বয়স বাংলাদেশের। কোন খেলাতেই ভূবন জয়ের মতন আভিজাত্য দেখাতে পারি নাই। তবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ক্রিকেট ফুটবল। আব্দুস সাদেক যখন হকি খেলতেন তখন আমার মতন বহু জন হকি মাঠে যেত তার হকি ষ্টিকের উপর কর্তৃত্ব দেখতে। আব্দুস সাদেক এখন মাঠে আসেন না পড়ন্ত বিকেলকে মধুময় করার হকি-গীতিকার এখন দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হয়।
আব্দুস সাদেক আমাদের শৈশবের হকি-জগত পাকিস্তান দলের নিয়মিত, এই তারকা বাদে পাকিস্তান দলে বশির ভাই খেলেছেন, তবে অনিয়মিত। এশিয়ান গেমসে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে হকি শুরু হয়েছে। মহাদেশের ১২টি দল দুই ভাগে, পুল এ : ভারত, জাপান, পাকিস্তান , বাংলাদেশ, সিংগাপুর আর উজবেকিস্তান। পুল বি : কোরিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, ওমান আর ইন্দোনেশিয়া। ভারত ১০-২ গোলের ব্যবধানে হারাল পাকিস্তানকে। হারতে হবে, খেলাতে স্বাভাবিক তাই বলে চির প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে এ ভাবে। ১৯৫৮ সন থেকে এশিয়ান গেমসে হকি অন্তর্ভূক্ত। এর পর প্রতি আসরেই হকি হচ্ছে। পাকিস্তান গোল্ড পেয়েছে আট বার, কোরিয়া পাঁচ বার আর ভারত তিনবার।
হংজুতে জাপানও আছে তাঁরাই এখন চ্যাম্পিয়ন, ২০১৮ র গেমসে মালয়েশিয়াকে ফাইনালে পরাজিত করে তাদের এ অর্জন। কি বুঝা গেল, ভারত - পাকিস্তানের হকির এক চেটিয়া ব্যবসা শ্যাষ। পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশ হেরেছে ৫-২ তে। হকিতে বাংলাদেশ মনে হয়না ৬/৭ এর উপর উঠবে। আমাদের সংবাদ পত্র এমন ভাবে ‘ফুলায়’ তাতে মনে হয় এবার গল্ড আসবেই। কে আনবে? ক্যান জিন্নাত ফেরদস, বক্সিং এ নিউইয়র্কে ৫০ কেজি ওয়েট ক্যাটাগিরিতে তিনি বি-রা-ট। প্রথম রাউন্ডে মংগলিয়ার বক্সারের কাছেই নাথিং হয়ে গেল।
১০০ মিটারে ইমানানুর তিনি যুক্তরাজ্য কাপায়, এখানে হিটে আট জনে ষষ্ঠ হয়ে বাদ। হারার পর তিনি কেন হারলেন তার বিশ্লেষণ করবেন। আমাদের ডন নামে এক স্প্রিন্টার ছিলেন, তাকে অলিম্পিকে পাঠান হয়েছিল। মনে রাখতে হবে ডনের যোগ্যতা নয় , ডন অলিম্পিকে গেলে কিছু কর্তা ‘ফ্রি’তে অলিম্পিক দেখতে পারেন। তবে ডনের পিঠে ছাপ পরল তিনি অলিম্পিয়ান। যে সে কথা। নেপালে এক স্পর্টস মিটে ডন গিয়ে ছিল, সবার শেষে ১০০ মিটার শেষ করাতে সবাই অবাক। কারণ জানতে চাইলে ডন বল্ল এই ট্রাকের জন্য উপযুক্ত রানিং স্যুটা ভুলে আনেন নাই। মারহাবা অলিম্পিয়ান বলে কথা।
ইমানানুর স্প্রিন্টে কিছু করবেই। যেখানে ইমানানুর সেখানেই অ্যাথলিটুকস এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মিন্টু। মেডেল ত আনবেই। তারপর, তার আর পর নাই। আব্দুর রকিব মিন্টু সাহেব অদৃশ্য। এই সব ফার্মের মুরগির দিকে তাকিয়ে না থেকে একাডেমি করুন। কেমনে মান সম্পন্ন একাডেমি গড়তে হয় তা বসুন্ধরাতে এসে দেখে যান।
শুরুতে বলেছিলাম ৫২ বছর,
‘দুরন্ত ঘূর্ণির এই দিয়েছে ডাক
এই দুনিয়া ঘুরে ছন্দে ছন্দে
কত রং বদলায় ।’
শুধু আমাদের ক্রীড়াংগনের রং বদলায় না। এবার ২৪০ জনের কন্টিন্জেন্ট, সাকুল্যে একটা বা দুইটা মেডে । আগের দিনে জমিদার শ্রেনিরা মৃগয়াতে যেতেন। মারত ২/৩ টা মাত্র হরিন তবে লোক লস্কর পেয়াদা বাইজি আলোর রোশনাই , কি নাই। আমরাই বা কম কিসে ওরা মারে ২/৩ টা হরিন, আমরা আনি ২/৩ টা মেডেল। কেয়া বাত! কেয়া বাত! ক্রীড়াঙ্গন, একটা চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া।’
লেখক : সাবেক অধিনায়ক জাতীয় ও সেনাবাহিনী হকি দল এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত ।
পথরেখা/আসো