• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:১৯

এশিয়াডে ব্যর্থতার ভিড়ে ক্রিকেটে দুই পদক জয়

পথরেখা অনলাইন : ২০১৮ এশিয়ান গেমসে পদকশুন্যভাবে শেষ করে বাংলাদেশ। সেবার ক্রিকেট ডিসিপ্লিন ছিলনা। এবার ক্রিকেট ফেরায় আর শুন্য হাতে ফিরতে হয়নি বাংলাদেশকে। পুরুষ ও নারী ক্রিকেট দলের কল্যানে দুটি ব্রোঞ্চপদক জিতে আসর শেষ করেছে লাল সবুজ পতাকাধারীরা। চীনকে বিদায় জানিয়ে জাপানকে স্বাগত জানিয়ে শেষ হয়েছে এবারের আসর। এশিয়াডের আয়োজক হিসাবে বিদায় চীনের হাংজুর। গেমসের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়েছে ২০২৬ সালের আয়োজক জাপানের হাতে (আইচি ও নাগোয়া শহর)। ২৩ সেপ্টেম্বর ৪৫ দেশের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ক্রীড়াবিদের অংশগ্রহণে গেমস শুরু হয়েছিল।  স্বাগতিক চীনের ২০১টি স্বর্ণ, ১১১ রৌপ্য ও ৭১টি ব্রোঞ্জসহ ৩৮৩টি পদক জিতে শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে গেমস। ৫২টি স্বর্ণ, ৬৭টি রৌপ্য ও ৬৯টি ব্রোঞ্জসহ ১৮৮টি পদক জিতে দ্বিতীয় হয় আগামী এশিয়ান গেমসের স্বাগতিক দেশ জাপান। উদ্বোধনীর মতো আলাদা আলাদা করে নয়, একসঙ্গে দেশগুলোর ক্রীড়াবিদ এবং কমকর্তা পতাকা হাতে মাঠে নামেন। এদিন বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাইফ হাসান। এশিয়ান গেমসের উচ্ছ্বাস আর উদ্বীপনা কয়েক মিনিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। আনন্দঘন সমাগমের সঙ্গে গেমসের পুরো হাইলাইটস দেখে সবাই মুগ্ধ।
 
আসরে হাসি-কান্না আর একে অপরকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখার চেষ্টার ছবিগুলো ফুটে ওঠে। চোখ ধাঁধানো সব আয়োজনের পর অ্যাথলেটদের মার্চ পাস্ট। ‘আগামীর হৃদয় থেকে হৃদয়ে’ (হার্ট টু হার্ট অ্যাট ফিউচার) স্লোগানে চীন এবার দারুণ আয়োজন করেছে। হাংজু অলিম্পিক স্পোর্টস সেন্টারে বর্ণিল উদ্বোধনের পর সুন্দর সমাপনী অনুষ্ঠানও বেশ রঙিন হয়েছে। ভলান্টিয়ারদের সম্মান দিতে ভুলেননি আয়োজকরা। ভলান্টিয়ারদের আন্তরিকতার দৃশ্যগুলো যখন ভেসে ওঠে ৮০ হাজার দর্শকের করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে অলিম্পিক স্পোর্টস সেন্টার। অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়ার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজা রনদ্বীর সিং ‘সমাপনী’ উল্লেখ করেন, তখনেই গ্যালারিতে নীরবতে নেমে আসে। বেজে ওঠে বিদায়ের সুর। হাংজুর সমাপ্তির সঙ্গে আগামী গেমসের আয়োজক জাপানের পতাকা উত্তোলিত হওয়ার সঙ্গে বেজে ওঠে দেশটির জাতীয় সঙ্গীত। একটু পর নিভে যায় পুরো স্টেডিয়ামের আলো। গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের মোবাইলের আলোগুলো ‘জোনাকির’ মতো জ¦লে উঠে।
 
সময়েল হিসেবে ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নিয়মিত অংশ নিয়ে এখনো এশিয়াডে ব্যক্তিগত পদক মাত্র একটি।  জাতীয় খেলা কাবাডি এক সময় এশিয়াডে আশার আলো ছিল। গত এশিয়াড থেকে তাও নেই। একমাত্র ক্রিকেটই এখন গেমসে বাংলাদেশের পদকের সম্বল। ১৯ তম এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ ১৭ ডিসিপ্লিনে অংশগ্রহণ করেছে। ১৭ ডিসিপ্লিনের সাফল্য-ব্যর্থতার হিসেবে কষ্টই পেতে হয়েছে। জাতীয় খেলা কাবাডি এবার এশিয়ান গেমস চরম হতাশ করেছে। নারী ও পুরুষ উভয় দলের সেমিফাইনালে খেলার দারুণ সুযোগ ছিল। কাবাডিতে সেমিফাইনালে উঠলেই ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হতো। নারী ও পুরুষ দুই দলই চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ এশিয়াডের মঞ্চে আরো দু’টি ব্রোঞ্জ থেকে বঞ্চিত হয়। অনুশীলনেও ফল নেই আর্চারি-শুটিংয়ে। দেশের অনেক ফেডারেশনেই নিয়মিত অনুশীলন করানোর সামর্থ্য রাখে না। আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও নানা সংকটে অনুশীলন স্থগিত থাকে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আরচ্যারি ও শুটিং নিয়মিত অনুশীলন এবং আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। নিশানাভিত্তিক খেলা হওয়ায় বিওএর প্রত্যাশা ছিল এই দুই ডিসিপ্লিনকে ঘিরে।
 
হকিতে চরম ভরাডুবি হয়েছে এবার। এশিয়ান গেমসে ব্যর্থতার খাতায় অন্যতম বড় নাম হকি। হকি গত এশিয়াডের ষষ্ঠ স্থান হারিয়েছে। ষষ্ঠ স্থান অর্জন করাই যেখানে কঠিন ছিল সেখানে হকির দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ গণমাধ্যমে সেমিফাইনালে প্রত্যাশা করেছেন বেশ কয়েকবার। মাঠে অবশ্য এর ছিটেফোটাও দেখা যায়নি। দুর্বল সিঙ্গাপুর ও উজবেকিস্তান ছাড়া কাউকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ১২ গোলের লজ্জার পর ওমানের বিপক্ষে হেরে অস্টম হয়ে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে। অ্যাথলেটিক্স ছিল ইমরান নির্ভর। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেমিফাইনাল পর্যন্তই গিয়েছে। সাঁতার যেন শুধুই অংশগ্রহণ। গেমসের অন্যতম আকর্ষণ সাঁতার হলেও এশিয়াডে বাংলাদেশের সাঁতার মানে যেন শুধুই অংশগ্রহণের জন্য অংশগ্রহণ। কয়েকটি ইভেন্টে বাংলাদেশের তিন সাঁতারু অংশ নিয়ে তিন জনই শেষের দিক থেকে প্রথম পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন। বক্সিংয়ে সেলিমে ঝলক যেখানে একদিকে প্রবাসীতে হতাশা দেখিয়েছে।
 
হাংজু এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের প্রকৃত প্রাপ্তি বলতে বক্সার সেলিম হোসেন। এবার আশার আলো ছিল আমেরিকান প্রবাসী জিনাত ফেরদৌসের উপর। পদক জেতার স্বপ্ন দেখা জিনাত দ্বিতীয় রাউন্ডে বিদায় নিয়েছেন। ফুটবলে চীন ড্র-ই প্রাপ্তি বাংলাদেশের। প্রথমে বাদ পড়া নারী ফুটবল পরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আবার প্রাথমিক তালিকায় থাকা পুরুষ ফুটবল বাদ পড়ে আবার ঢুকেছে। পুরুষ ফুটবল তিন ম্যাচের মধ্যে দুটি হারলেও ভালো ম্যাচ খেলেছে। বিশেষ করে তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক চীনের সঙ্গে ড্র বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক প্রাপ্তি বলা চলে। কারাতে ম্যানেজার ও কোচের বিলম্বের জন্য বাস মিস করেন খেলোয়াড় হাসান খান সান। আসরে আলোচনাহীন জিমন্যাস্টিকস ও গলফ আসর। এবার এশিয়ান গেমসে জিমন্যাস্টিকস তাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেও অন্য খেলার সাফল্য-ব্যর্থতার ভিড়ে তেমন আলোচনায় আসেনি। ব্রিজ অপ্রচলিত খেলা হলেও চীন, ভারতকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। সঠিক পরিচর্যা পেলে ব্রিজ ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে পদক জয়ের সম্ভাবনা থাকা ডিসিপ্লিনগুলোতে অংশ নেওয়ার তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
পথরেখা/আসো 
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।