পথরেখা অনলাইন : লেবাননের বিপক্ষে জাতীয় দলের ম্যাচ খেলার ঠিত এক সপ্তাহ পর আবারও মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এবার বাংলাদেশের জার্সিতে নয় মাঠে নামতে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা এএফসি কাপে মাজিয়া এফসির বিপক্ষে খেলবে কিংস অ্যারেনায়। সোমবার সন্ধা ৬.০০ টায় ম্যাচটি শুরু হবে। যদিও এই ম্যাচে মাজিয়ার বিপক্ষে অনিশ্চিত কিংস অধিনায়ক রবসন। এএফসি কাপে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ওঠার দারুণ এক সম্ভাবনার সামনে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি। চার ম্যাচের দুটি জিতে ও একটি ড্র করে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে বাংলাদেশের ক্লাবটি। বাকি দুই ম্যাচ জিতলেই ইন্টার জোন সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হবে অস্কার ব্রুজনের দলের। বাকি দুই ম্যাচের একটি ঘরের মাঠে মালদ্বীপের দল মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিরুদ্ধে। যে দলটির কাছে মালেতে ৩-১ গোলে হারিয়ে এবারের মিশন শুরু করেছিল বিপিএল ফুটবলের চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। ভারতের মোহনবাগানকে তাদের মাঠে রুখে দিয়ে এসে ঘরে ২-১ গোলে হারিয়েছে কিংস।
এই চারটি পয়েন্টই বিশ্বনাথ ঘোষ-রাকিব হোসেনদের তুলে দিয়েছে গ্রুপের শীর্ষে। এবার ঘরের মাঠে প্রতিশোধ নেওয়ার পালা মালদ্বীপের ক্লাবটির বিপক্ষে। মাজিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে কিংসের কোচ অস্কারের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক রবসন রবিনহোকে নিয়ে। বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে অর্ধশতাধিক গোল করা এই ব্রাজিলিয়ান চোটের কারণে এ ম্যাচে খেলা অনিশ্চিত। সর্বশেষ ম্যাচে মোহনবাগানের বিপক্ষে কিংসের ২-১ ব্যবধানের জয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন রবসন। কেবল গোল করেননি, করিয়েছেনও। এককথায় কিংসের দুর্দান্ত জয়ে বিশাল ভূমিকা ছিল তার। দলের সেরা পারফরমারকে না পেলে সেটা হবে কিংসের জন্য একটা ধাক্কা। বর্তমানে দেশের ফুটবলে স্বস্তির হাওয়া বইছে। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসছে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলেও বসুন্ধরা কিংস আলো ছড়াচ্ছে। যার প্রমাণ ঘরের মাঠে পিছিয়ে থেকেও ভারত সেরা মোহনবাগান জায়ান্টকে হারাল। এফসি কাপে ডি গ্রুপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের এখনো দুটি ম্যাচ বাকি আছে, একটি কিংস অ্যারিনায় মালদ্বীপের মাজিয়ার বিপক্ষে আরেকটি ১১ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে ওড়িশা এফসির বিপক্ষে। যদি কিংস এ দুটি ম্যাচ জিততে সক্ষম হয়, তাহলে তারা গ্রুপের শীর্ষে থাকবে অর্থাৎ তারাই একমাত্র দল হবে যারা দক্ষিণ অঞ্চল থেকে এএফসি কাপ ২০২৩-২০২৪-এর ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। উয়েফার তিনটি প্রতিযোগিতা রয়েছে- উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা ইউরোপা লিগ এবং উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগ তাদের ৫৫টি দেশের ক্লাবের জন্য। একইভাবে, এএফসির দুটি প্রতিযোগিতা রয়েছে- এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (যেখানে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো খেলেন) এবং এএফসি কাপ (যেখানে কিংস খেলে) তাদের ৪৭টি দেশের জন্য। কিন্তু ২০২৪-২০২৫ সাল থেকে এএফসি এই কাঠামো পরিবর্তন করছে।
তারা উয়েফার মতো একটি নতুন প্রতিযোগিতা যোগ করেছে এবং এটিকে তিন স্থরের ক্লাব প্রতিযোগিতায় পরিণত করছে। সুতরাং, প্রতিযোগিতার নাম হবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এলিট (টায়ার-১), এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ (টায়ার-২) এবং সবশেষে নতুন একটি এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ (টায়ার-৩)। বর্তমান পয়েন্ট, নিয়ম ও বাইলজের ভিত্তিতে, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার জন্য দুটি ম্লট পায়, একটি এএফসি কাপের নিশ্চিত গ্রুপ পর্বে এবং অন্যটি কোয়ালিফাইং রাউন্ডে। কিন্তু নতুন নিয়মে, ২০২৪-২০২৫ এ বাংলাদেশ এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে (টায়ার-৩) মাত্র একটি স্লট পাবে এবং সেটিও কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে, নিশ্চিত গ্রুপ পর্বে নয়। এর মানে বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর জন্য কম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। এএফসির পয়েন্ট ভিত্তিক পদ্ধতিতে এএফসি তার ৪৭টি দেশকে দুটি অঞ্চলে ভাগ করে- পূর্ব এবং পশ্চিম। পূর্বে ২২টি দেশ রয়েছে এবং পশ্চিমে ২৫টি।
ম্যাচের একদিন আগে অনুশীলন শেষে মাজিয়ার কোচ মিলোমির শেসলিয়া বলছিলেন, ‘ঘরের মাঠে অবশ্যই তারা এগিয়ে থাকবে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু আমরা ভয় পাচ্ছি না। আমরা নিজেদের প্রস্তুত করছি এবং একে অপরকে সাহস জোগাচ্ছি। কিভাবে জিতে ফিরতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করছি।’ এএফসি কাপে প্রথম ম্যাচেই নিজেদের মাঠে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল মাজিয়া স্পোর্টস। কিন্তু পরের তিন ম্যাচ হেরে সেই দলই কিনা এখন ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে আছে। এর ঠিক উল্টো রথে আছে বসুন্ধরা কিংস। প্রথম ম্যাচ হারের ধকল কাটিয়ে পরের তিন ম্যাচে জিতেছে দুটি, ড্র একটি। এতে ‘ডি’ গ্রুপের চূড়ায় বসেছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে কিংস অ্যারেনায় হারের রেকর্ড নেই অস্কার ব্রুজোনের দলের।
পথরেখা/আসো