• সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৮ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৭:২৭

৯ মাসে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ৩১৮ মামলা

  • জাতীয়       
  • ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩       
  • ৪৮
  •       
  • ২৪-১২-২০২৩, ১০:৪৯:০৫

পথরেখা অনলাইন : অপরাধ নির্মূল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব। কিন্তু সেই বাহিনীরই কিছু সদস্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। যদিও এর আগে সেসব সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়তো পুলিশ সদর দপ্তরে, কিন্তু এখন অভিযোগ উঠছে ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ততার। ফলে শাস্তি হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত, মামলা এবং গ্রেপ্তার করা হলেও কমানো যাচ্ছে না অপরাধ প্রবণতার হার। আর এতে স্বাভাবিকভাবেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেমন সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, পাশাপাশি তাদের নিয়ে বিরূপ ধারণা ও আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে।
 
কিছুদিন আগেই রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে সোয়া ৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা হলে শাহ আলী থানার দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) তুহিন কাজী ও মশিউর রহমান তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন তারা।
 
একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে ত্রৈমাসিক অপরাধ বিষয়ক সভা হয়েছে। সভায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত ব্যাপারে আলোচনা হয়। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৩১৮টি ফৌজদারি মামলা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। এসব মামলায় ৩০৪ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
 
সভা সম্পর্কে আরও জানা যায়, দায়িত্বে অমনোযোগী পুলিশ সদস্য এবং যারা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি নজর রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ইউনিট প্রধানদের। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সভায় বলেন, পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধে জড়ানো দুঃখজনক। এছাড়া রোল কলের সময় ইউনিট প্রধানদের পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রতি খোঁজ রাখার নির্দেশনাও দেন।
 
পৃথক ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়া এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কখনো কোনো ব্যক্তি পুলিশ সদস্যের দায় পুরো বাহিনীর ওপর পড়ার কথা নয়। তবে হ্যাঁ, বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে তাকে কখনোই ছাড় দেয়া হয় না।
 
এদিকে শাহ আলী থানার দুই উপ-পরিদর্শক তুহিন কাজী ও মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে গত ৯ ডিসেম্বর এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গত ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশের এই দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর)। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে এর আগেও ওই পুলিশ সদস্য একাধিকবার এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন।
 
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে রাজধানীর ডেমরা থানায় সংযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবল আসিফ ও মাহাবুব নয়াপল্টনে একটি ব্যাংকে প্রবেশ করে টাকা জমা দিতে আসা এক ব্যক্তিকে টেনে বাইরে নিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করে। এরপর তাদের প্রদান করা তথ্যের বরাত বাসাবো থেকে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে বাকি টাকা উদ্ধার করা হয়।
 
গত অক্টোবরে শ্যামপুর থানার দোলাইরপাড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় গুলশান থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। মামলার অন্য তিন আসামির মধ্যে একজন কনস্টেবল আবু সায়েম (রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত)। তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে মামলা ছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। পিআরবি-১৮৬১ (পুলিশ প্রবিধান) অনুযায়ী, যদি কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তার বিরুদ্ধে দুই ধরনের বিভাগীয় শাস্তির (লঘু ও গুরু) বিধান রয়েছে। এরমধ্যে গুরুদণ্ডের আওতায় রয়েছে চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতি, পদোন্নতি স্থগিত, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত এবং বিভাগীয় মামলা হওয়া।
 
এদিকে বিভাগীয় মামলার শাস্তি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২২ সালে বিভিন্ন অভিযোগে এক হাজার ৭৩১ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে সাময়িক বরখাস্ত, অর্থাৎ দূরে কোথাও বদলি করা। তবে কারও কারও মতে, পুলিশ সদস্যদের ছোট ছোট অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার পর তাদের ছাড় দেয়ার কারণে পরবর্তীতে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে।
 
এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, পুলিশ বাহিনীতে কেউ যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে ছাড় পায় না। ২ লাখ ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের বাহিনীতে যে দু-চারজন অপরাধী নেই, সেটা অস্বীকার করছি না আমরা। আমাদের মধ্যেও অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মতো মানুষ থাকতে পারে। তবে অপরাধীকে শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়।
 
 
পথরেখা/অআ/

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।