পাপন সাহেব ক্রীড়ামন্ত্রী। ক্রীড়াঙ্গন তার সুপরিচিত। ক্রিকেটের সাথে আছেন তাই স্রোতের পক্ষে বাতাসের অনূকুলে তীব্র গতিতে স্পোর্টস জোনে এগুচ্ছেন। অভিনন্দন নয়া ক্রীড়ামন্ত্রী।
স্বাধীনতার আগে হকি খেলা হত ঢাকা স্টেডিয়ামের ভিতর। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পাশাপাশি দুটো মাঠে খেলা হত। দুই মাঠের মধ্যের গ্যাপে দর্শকরা খেলা দেখত। মমিন ভাই, আলমগীর আদেলের প্রচেষ্টায় আউটার স্টেডিয়াম হকির মাঠ নির্ধারিত হয়। পল্টন ময়দানে লোকরা ৮/৯ টা পর্যন্ত ইয়ার দোস্তগের সাথে গালগপ্পো শেষে বাসা মুখি হতো। এই স্টেডিয়াম এলাকা তখন নাগরিকদের প্রাণবন্ত করে রাখার স্টেশন ছিল।
পাকিস্তানিরা তৈরি করে ঢাকা স্টেডিয়াম। তারা ঢাকার ক্রীড়া কর্মকর্তাদের মাথায় টাকার লালস ঢুকিয়ে দেয়, কিভাবে? স্টেডিয়াম বানাল দোকানসহ। তখনকার পাকিস্তানের কোন স্টেডিয়ামে দোকান নাই, এখনত নাইই। অথচ পূর্ব পাকিস্তানে ঢাকা স্টেডিয়াম বানাল দোকানসহ। তরগ্ন ঘোর রংগ করে অংগে লাগে দোল- আমাগো কর্তাদের দোল লেগে গেল, ঢাকা স্টেডিয়ামকে দোকানসহ স্টেডিয়াম বানিয়ে ফেলা হলো। সালামি, দোকান ভাড়া মানে ফ্লো অব মানি, টাকা আর টাকা, পল্টন ময়দানে বে-সাইজ এক স্টেডিয়াম হল। বড় বানাতে পারলে বেশী দোকান হবে,বানানো হলও তাই।
ফুটবলের জন্য দর্শক ধারণ ক্ষমতা কম আবার হকির জন্য বেমানান, হকির মাঠ নাই। আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক থাকার সময় অনুশীলন করতে যেতাম ইন্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিরর মাঠে। মধ্যে আবার হকি টুর্নামেন্ট হয়েছিল গুলিস্তান সিনেমা হলের উল্টো দিকের পার্কের ভিতর। এখনত একটা দোকানসহ স্টেডিয়াম হয়েছে। অখেলোয়াড় দিয়ে চালিত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্তাদের এই দোকান-স্টেডিয়াম বিশ্বে নাই। ওরা খেলোয়াড়দের তৈরিতে তাগের মানসিকতা, তাদের গড়তে কি করতে হবে সব বিবেচনাতে রাখে। আর আমরা ভাবি টাকা।
ক্রিকেট আর ফুটবল বাদে সব ফেডারেশন অভাবি। অভাবিদের কেউ লোন দেয়না। তেমনি ক্রিকেট ফুটবল বাদে অনান্য খেলাতে স্পন্সর পাওয়া যায় না। এই যে স্টেডিয়ামের দোকান থেকে সালামি, ভাড়া এই টাকা দিয়েত অভাবি ফেডারেশনগুলিকে সতেজ রাখা যায়। ভাই এই সালামি, দেকান ভাড়া যায় কৈ? পাপন সাহেব মাঠ সমস্যার সমাধান করবেন, সমাধান করতে হলে ঢাকার বাইরে ক্রীড়া কমপ্লেক্স ভাবনাতে রাখতে হবে। ঢাকাতে মাঠ করির জায়গা কৈ।
কোলকাতার গড়ের মাঠের মতন আমাদের সরওয়ারিদি উদ্যান/রেস কোর্স ময়দানকে খেলার জন্য ব্যবহারের সুয়োগ দিতে হবে। নির্মল বাতাস পাওয়ার জন্য পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরওয়ার্দি উদ্যানে কিছু মাঠ করাই যায়, এতে পরিবেশ নষ্ট হবে না, এখন যে গাছপালার ভীড় এতে অনৈত্যিক কাজের ডেরা হয়েছে।
এত কথা এ জন্য বলা যে খেলা চলছে, উপভোগ করছে, সব কিছু বিবেচনাতে শুধু মাঠ যেটার সব বড় প্রয়োজন, সেটাই উপেক্ষিত হয়েছে। পাপন সাহেব মাঠ সমস্যার সমাধান আপনার এসিড টেস্ট।
লেখক : জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব
পথরেখা/আসো