• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:১৪

ঘটনাবহুল ম্যাচ জিতে সিরিজ বাংলাদেশের

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল : এক ম্যাচে এত ঘটনা ক্রিকেট বিশ্ব খুব কমই দেখেছে। চারজন ক্রিকেটার ও আম্পায়ার মাঠের বাইরে চলে যাবার মতো ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে। প্রথম দুই ম্যাচ সমতায় শেষ হওয়ায় এই ম্যাচটি ছিল সিরিজ নির্ধারণী। তাতেই ৪ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের আড়াইশর আগে আটকে রেখে জয়ের পথটা সহজ করে দিয়েছিলেন বোলাররা। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তানজিদ তামিমের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারেননি। তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা ব্যর্থ হলে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। শঙ্কা জেগেছিল জয় নিয়েও। সেই শঙ্কা উড়ে গেছে রিশাদ হোসেনের ঝড়ে। তার দারুণ এক ক্যামিওতে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (১৮ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে তারা সংগ্রহ করে ২৩৫ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০১ রান করেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের হয়ে ৪২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ।
 
জবাব দিতে নেমে ৪০ ওভার ২ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছেন তানজিদ তামিম। ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রান করেছেন রিশাদ হোসেন। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও এনামুল হক বিজয় দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন। ৪৭ বলে প্রথম ফিফটির দেখা পায় বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই ফিরেছেন বিজয়। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথে করেছিলেন লাহিরু কুমারা, সেখানে কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়ে থাকা আভিষ্কা ফার্নান্দোর হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ১২ রান। তিনে নেমে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লাহিরুকে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে খোঁচা দিয়েছেন শান্ত। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে ৫ বলে এসেছে ১ রান। গত ম্যাচে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রানে।
 
শেষ ম্যাচেও ভালো শুরু করেছিলেন। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। সাজঘরে ফিরেছেন বাজে এক শটে। লাহিরুর খাটো লেংথের বল টেনে পুল করতে গিয়ে ভুল করেছেন হৃদয়। ডিপ ব্যাকওয়াড স্কয়ারে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে ২২ রান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুশফিকের আগে উইকেটে এসে এদিন ৪ বলে ১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ফিল্ডিংয়ে সৌম্য সরকার ঘাড়ে আঘাত পেয়েছিলেন। যে কারণে আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। তার কনকাশন বদলি হিসেবে ইনিংস ওপেন করতে নেমেছিলেন তানজিদ তামিম। সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগান এই তরুণ ওপেনার। এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও আরেক দিকে বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন তামিম। ৫১ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে কাটা পড়েন ৮৪ রানে। তামিম ফেরার পর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৮ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। মিরাজ ২৫ রান করে সাজঘরে ফিরলে ১৭৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ।
 
তবে এদিন উইকেটে এসে রীতিমতো ঝড় তোলেন রিশাদ। তার ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় লঙ্কান বোলিং লাইনআপ। ৫ চার আর ৪ ছক্কায় ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংস খেলে একটু আগেভাগেই দলের জয় নিশ্চিত করে দেন রিশাদ। অপর প্রান্তে আস্থার প্রতীক হয়ে ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। ৫৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এর আগে ম্যাচের শুরুতে বল হাতে দারুণ করেছেন বাংলাদেশের পেসাররা। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ বেশ সুইং পেয়েছেন। এই পেসারের সুইংয়ে চোখে রীতিমতো সর্ষে ফুল দেখেছেন পাথুম নিশাঙ্কা! ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলটি ফুললেংথে করেছিলেন তাসকিন। সেখানে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি নিশাঙ্কা, বল সরাসরি তার প্যাডে লেগেছে। তাতে লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবোরো। যদিও বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় মিস করে যেত লেগ স্টাম্প। নিজের করা পরের ওভারেও উইকেট পেয়েছেন তাসকিন। এবার বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়েছেন আভিষ্কা ফার্নান্দো। ক্যাচ জমা পড়েছে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।
 
এর আগে ১৫৪ রানে ৭ ব্যাটারকে হারিয়ে দ্রুত অলআউটের শঙ্কায় পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে অষ্টম উইকেট জুটিতে মাহিশ থিকশানাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন লিয়ানাগে। থিকশানা ১৫ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৬০ রানের জুটি। এটাই ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটি। থিকশানা ফিরলেও আরেক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন লিয়ানাগে। ১০১ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। এটি তার অভিষেক সেঞ্চুরিও। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ১০২ বলে ১০১ রান করে। রিশাদ হোসেন অপরাজিত ৪৮ রান ও ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা এবং ১৬৩ রান করে সিরিজ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
পথরেখা/আসো

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।