• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৭:৪২

কুমিল্লায় বন্যায় হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে

  • সারাদেশ       
  • ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪       
  • ১৯
  •       
  • ০৪-০৯-২০২৪, ২০:৪৭:৫৮

পথরেখা অনলাইন : জেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কেউ কেউ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে বন্যায় হাজার হাজার বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেক বাড়িঘর বসবাসের উপযোগিতা হারিয়েছে। কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতির ইতিমধ্যে বেশ উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ঘরে ফিরে যেতে তাদের আরও তিন থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যেতে পারে। বন্যা কবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যসংকট ও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। তারা জানায়, যেখানে দুবেলা আহার জোটানো কষ্টসাধ্য, সেখানে বাড়িঘর ঠিক করার প্রশ্ন আরও পরের বিষয়। ৭০  বছর বয়সী মমতাজ উদ্দিন বাসসকে বলেন, নদীর কুলে বসবাস করলেও আমার এ বয়সে কখনো এত পানি দেখিনি। একটি জিনিসও ঘর থেকে বের করার সুযোগ পাইনি। পানির স্রোতে ঘর ভেঙে পড়ে মাটিসহ চলে গেছে। নাতি-নাতনিদের নিয়ে কোনমতে জান নিয়ে বের হয়ে পাশের একটি চারতলা ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন যদি কেউ আমাদের জন্য সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে পাশে দাঁড়ায় নাতি-নাতনিদের নিয়ে অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল হোসেন বাসসকে বলেন, বন্যার পানিতে তাদের ঘরবাড়ি একদম শেষ হয়ে গেছে। কোনো মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে এমন অবস্থাও নেই।
 
মূলত কৃষি ও দিনমজুরের কাজ করেই তাদের পরিবার চলতো। ভিটেমাটি ছাড়া তেমন আর কোন সম্পদও নেই। এদিকে ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লার বুড়িচংয়ের সর্বত্রই এখন একই চিত্র। যেখানে খেয়ে-পরে টিকে থাকাই কষ্টের, সেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বানভাসি হাজারো মানুষ। বুরবুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামলা খাতুন বাসসকে বলেন, বাড়িঘরের পানি কমলেও বাড়িতে তো কিছুই নাই। আমার  সাজানো সংসারে কত কিছুই না ছিল। মিলন নামের এক বাসিন্দা বলেন, বাঁধ ভাঙার খবরে জানডা লইয়া বাহির হইছি। কিছুই সরাতে পারিনি। পানি কমায় বাড়িতে এসে দেখি, ঘরডা পইরা রইছে। আগামী দুই-তিন মাসেও ঘর ঠিক করে উঠতে পারুম না। ইছাপুরা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, আমার বয়স ৬৫ বছর। এ বয়সে গ্রামের রাস্তাঘাট কখনো ডুবতে দেখিনি। এবারের বন্যা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তিনি আরও বলেন, বুড়িচংয়ে মাটির বসতি বেশি। অতিরিক্ত পানির কারণে ঘরের দেওয়াল নরম হয়ে ধসে পড়েছে। বাকশিমূল গ্রামের আমজা হোসেন বলেন, এর আগেও একবার গোমতীর বাঁধ ভেঙেছে, কিন্তু আমাদের গ্রামে পানি ওঠেনি। এবার বুকসমান পানি হয়েছে। পানিতে ডুবে ছয়টি মাটির ঘর ভেঙে গেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ১৭ টি উপজেলায় মধ্যে বন্যায় আক্রান্ত ১৪ টি উপজেলায় ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার পরিবার, সবচেযে বেশি বুড়িচং উপজেলার ৪০ হাজার পরিবার ঘর বাড়ি হারিয়েছে। জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা আবেদ আলী বলেন, জেলায় ১০ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি ছিলো। ৭ শ’ ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসন থেকে ৩৯ লাখ নগদ টাকা ও ৮০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কুমিল্লা জেলায় ১৬ শ’ টন চাল, নগদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদিকে কুমিল্লায় পর্যাপ্ত ত্রাণ এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা ত্রাণগুলো দুর্গতদের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার ম মুশফিকুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে,আমরা আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করছি তাদের।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।