• শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ১৩ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৫:২০

বেরোবির বাস বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ

পথরেখা অনলাইন : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত একটি বাস হঠাৎ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং আরিফ নামের এক ড্রাইভারের বিরুদ্ধে কৌশলে বাসটি বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।কাগজপত্র থেকে জানা যায়, বাসটি ফেরত চেয়ে আবেদনকারীর স্বাক্ষর এবং বাসটি গ্রহণকারীর স্বাক্ষর ভিন্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনপুল সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ মার্চ পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ৫২ সিটের একটি বাস উপহার দেন।

জানা যায়, বাসটি নষ্ট হওয়ায় কয়েক বছর ধরে পরিবহন পুলে পরিত্যক্ত ছিল। পরবর্তীতে বাসটি মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট চায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসের কোন কাজইপত্র দেখাতে না পারায় মন্ত্রণালয় বাজেট দিতে অস্বীকার করে।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের এক কর্মকর্তা এবং এক বাস ড্রাইভার উপাচার্যকে বাস ফেরত দিতে কৌশলে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বাসটি ফেরত নেয়ার জন্য ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ছায়াদত হোসেন বকুলের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেন।

ফলে সদ্য পদত্যাগকারী উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রশীদ উপহারের বাসটি ফেরত প্রদানের অনুমতি দেন এবং রেজিস্ট্রার চিঠি দিয়ে গাড়িটি ফেরত নিতে বলেন।

২১ মে ২০২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী) স্বাক্ষরে বেরোবি/রেজি/২০২৪/৮১ স্মারকে এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুলকে পাঠানো এক চিঠিতে বাসটি ফেরত নিতে বলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসটি ছায়াদত হোসেন বকুলকে হস্তান্তর করেছেন কিনা তার কোন প্রকার নথিপত্র দেখাতে পারেনি।

জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল জলিল মিয়ার হাতে বাসটির চাবি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছায়াদত হোসেন বকুল। সে সময় বাস উপহার প্রদানের ছবি ও প্রেস রিলিজ জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রচারও করা হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর তারিখে ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পক্ষে বাসটি ফেরত চেয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট রইচ উদ্দিন বাদশা।

এতে বলা হয়েছিল, বাসটি ৩০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া হয়েছিল এবং তিন মাসের ভাড়াও তারা পেয়েছেন। কিন্তু তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী হিসাব দপ্তরে এ ধরনের কোন চুক্তি বা ভাড়া পরিশোধের প্রমাণ পাননি। বরং চাবি হস্তান্তরের ছবি ও উপহার প্রদান সংক্রান্ত সংবাদ জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক সংবাদপত্রে প্রচারের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

পরিবহন পুলের উপসহকারী প্রকৌশলী (অটো মোবাইল) মো. সরফরাজ আলম বলেন, “বাসটি হস্তান্তর করার দায়িত্ব ছিল আমার। যে দিন ছুটিতে ছিলাম, সে দিন কে বা কারা বাস নিয়েছে – আমি জানি না। এ বিষয়ে খোঁজে নিতে গেলে ওপর থেকে অনেকেই চাপ দিতে থাকেন। পরে এ বিষয়ে নিউজ করার পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের দপ্তরের পিএ টু ভিসি (সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা) মোঃ আবুল কালাম আজাদ আমার কাছে হস্তান্তরের চিঠিটি জমা দিয়ে যায়।

মোঃ সরফরাজ আলমের কথার প্রক্ষিতে ভিসির পিএ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমি কেন হস্তান্তর চিঠি জমা দিবো? আমি জমা দেয়ার কে? যার দায়িত্ব ছিল তারা জমা দিছে, এটা তাদের ব্যাপার।

তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তো ওই সেক্টরের কেউ না।

বাস ড্রাইভার আরিফ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার দিক থেকে আমি ঠিক আছি। নিউজ করতে পারো, যা ইচ্ছা লিখতে পারো।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবহন দপ্তরের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার তাপস কুমার গ্বোসামী বলেন, ‘বাস ফেরত দেয়া হয়েছে কিন্তু আমাদের কাছে হস্তান্তরের কোনো ডকুমেন্টস গ্রহণ করা হয়নি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, “সাবেক উপাচার্য ড. হাসিবুর রশীদের লিখিত অনুমতিক্রমে গাড়ি ফেরতের আদেশ দেয়া হয়। গাড়িটি রিসিভ করার বিষয়ে পরিবহন পুল ভালো বলতে পারবে।”

বিষয়টি নিয়ে পরিবহন পুলের সাবেক পরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি গাড়ি কিনতেও পারি না দিতেও পারি না।”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছায়াদত হোসেন বকুল সাথে কয়েকদিন ধরে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন।
পথরেখা/এআর

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।