পথরেখা অনলাইন : যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে প্রতিদিন পালিয়ে আসা হাজার হাজার আশ্রয়-প্রার্থী মানুষের চাপ সামলাতে গিয়ে দক্ষিণ সুদান সীমান্তে অত্যন্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আজ সোমবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এ কথা বলেছে।
দাতব্য চিকিৎসা সংস্থাটির বরাত দিয়ে নাইরোবি থেকে এএফপি জানায়, প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করছে। তবে জাতিসংঘ সম্প্রতি দৈনিক ৭ থেকে ১০ সহস্রাধিক সীমান্ত অতিক্রমের কথা জানিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত হওয়ায় দেশটিতে বিশ্বের এক করুণতম মানবিক জরুরি পরিস্থিতি চলছে।
জাতিসংঘ জানায়, প্রায় ১৭,০০০ লোক ধারণ করা রেংক শহরের একটি ট্রানজিট কেন্দ্রের কাছে একজন এমএসএফ জরুরি সমন্বয়কারী ইমানুয়েল মন্টোবিও বলেন, তারা সেবা প্রদানের জন্য রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সাথে কাজ করছেন, তবে পরিস্থিতি একেবারেই শোচনীয়। যথেষ্ট সেবা দিতে পারছেন না তারা।
তিনি বলেন, যুদ্ধে আহতদের আগমনের জন্য নির্মিত চিকিৎসা স্থাপনাগুলো সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে, তাদের পক্ষে প্রত্যেকের সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
মন্টোবিও বলেন, ‘শতাধিক আহতের মধ্যে অনেকে মারাত্মক জখম নিয়ে অস্ত্রোপচারের অপেক্ষা রয়েছেন।’
ব্লু নাইল রাজ্যের মসমনের বাসিন্দা বশির ইসমাইল বিমান হামলার পর রেংকের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। কিছু একটা আমার বুকে আঘাত করে। আমি এতটাই দিশেহারা হয়ে পড়ি যে মনে হচ্ছিল আমি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছি।’
দক্ষিণ সুদানের এমএসএফ-এর ডেপুটি মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর রোজেলিন মোরালেস বলেন, হাজার হাজার মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, খাবার পানি, স্বাস্থ্যসেবার সংকটের মুখোমুখি রয়েছেন। সহিংসতা, দারিদ্র্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াইরত হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পর্যাপ্ত সামর্থ্য দক্ষিণ সুদানের নেই।
গ্রামে হামলার শিকার হয়ে দক্ষিণ সুদানের রেংক শহরে পালিয়ে আসা আলহিদা হামেদ সুদানের ব্লু নাইল রাজ্যে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বলেন, ‘ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ছিল, লোকজন এদিক ওদিক ছুটে যাচ্ছিল।’
তিনি জানান, তিনি এখন নিরাশ্রয়। একটি গাছের নিচেই কোনোমতে ঠাঁই করে নিয়েছেন তিনি। বাড়ি আর বাড়ি নেই। সেটি এখন দুঃস্বপ্নে আধার।’ তাই তিনি আর সেখানে ফিরে যেতে চান না।
পথরেখা/এআর