পথরেখা অনলাইন : নতুন বছরের প্রথম দিনেও আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৮.২৫ ডলার। বুধবার সকালে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ছিল আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬২৪.৪৯ ডলার।
২০২৪ সাল ছিল স্বর্ণের সোনালি সময়। বছরজুড়েই দাম বেড়েছে এই ধাতুর। গত এক বছরে এই ধাতুর দাম বেড়েছে ২৬.৫৪ শতাংশ বা ৫৪৬.৬৩ ডলার। আজ বছরের প্রথম দিনেও স্বর্ণের দাম বেড়েছে।
খবর ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল ও রয়টার্স প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১০ সালের পর স্বর্ণের বাজার সবচেয়ে ভালো সময় পার করেছে ২০২৪ সালে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও মুদ্রানীতির রাশ আলগা হওয়ার কারণে ২০২৪ সালে এর দাম বেড়েছে। স্পট মার্কেটে বছরের শেষ দিন স্বর্ণের দাম বেড়েছে দশমিক ৪ শতাংশ; প্রতি আউন্সের দাম ওঠে ২ হাজার ৬১৫ ডলারে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান উইজডমট্রির ম্যাক্রো ইকোনমিক গবেষণা পরিচালক অনীকা গুপ্ত বলেন, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর চাহিদা, মুদ্রানীতির সহজিকরণ স্বর্ণের দাম বাড়ায় ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড কমোডিটি (ইটিসি) ছিল ২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম বাড়ার মূল চালিকা শক্তি।
তিনি বলেন, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি ও ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর ধীরগতির মতো কিছু চাপ সত্ত্বেও স্বর্ণের দাম ২০২৫ সালে আরও বাড়তে পারে।
ডিসেম্বর মাসে আবারও নীতি সুদহার কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফেডারেল রিজার্ভ। তবে, ২০২৫ সালে কিছুটা কমতে পারে সুদহার কমানোর এই গতি। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কার্যক্রমের কারণেও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। নির্বাচনী প্রচারণা সময়ই ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি করবেন। সেই সঙ্গে বাণিজ্যের নিয়মকানুন শিথিল করাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেবে ট্রাম্প প্রশাসন।
স্বর্ণের দাম বাড়ার মূল কারণ হলো, অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় স্বর্ণ নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।
আর্থিক পরিষেবা কোম্পানি এক্সিনিটি গ্রুপের প্রধান বাজার বিশ্লেষক হান ট্যান বলেন, ট্রাম্পের শাসনামলে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়লে ২০২৫ সালেও ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে স্বর্ণের বাজার।
গোল্ডম্যান স্যাকসের পণ্যবিষয়ক কৌশলবিদ ডান স্ট্রুইভেন বলেন, ভবিষ্যতে আউন্সপ্রতি তিন হাজার ডলারে উঠতে পারে স্বর্ণের দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ চাহিদা ও ফেডের সুদহার কমানোর কারণে দাম এভাবে বাড়তে পারে।
গত এক বছরে বিশ্ববাজারে রুপার দামও বেড়েছে। ধাতুটির দাম আউন্সপ্রতি বেড়েছে ২২.৪৮ শতাংশ। তবে বুধবার সকালে বিশ্ববাজারে রুপার দাম ০.৩৯ শতাংশ কমেছে। দাম ছিল আউন্সপ্রতি ২৮.৮৪ ডলার।
২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম অনেকবার রেকর্ড ভেঙেছে। শুধু তৃতীয় প্রান্তিকে মোট চাহিদা অতিক্রম করেছিল ১০ হাজার কোটি ডলার। গত ৩১ অক্টোবর মূল্যবান ধাতুটি আউন্সপ্রতি রেকর্ড ২ হাজার ৭৯০ ডলার ১৫ সেন্টে উঠে যায়; এরপর অবশ্য দাম বেশ কিছুটা কমেছে। গত বছর প্লাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের দাম ৭ ও ১৭ শতাংশ কমেছে।
পথরেখা/এআর