দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালয়িন (র্যাব)। শুক্রবার রাতে সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় র্যাব-৮ এর সদস্যরা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন, রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪), তূর্য মোহন্ত (২৬)। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, প্রথমে ওই শিক্ষার্থীকে উত্যক্তে করা হয়। এর প্রতিবাদ করায় জোর করে তুলে নিয়ে তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তবে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানায় র্যাব। খন্দকার আল মঈন বলেন, “গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ভুক্তভোগীসহ দুই শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদরের নবীনবাগ হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে মেসে যাওয়ার সময় তাদের গতিরোধ করে পাঁচ যুবক। এরপর আপত্তিকর কথা বলে গায়ে পড়ে ঝগড়া শুরু করেন তারা। এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বন্ধুকে মারধর করে তাদের জোর করে ঘটনাস্থলের পাশে ঢালু জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর পাঁচ যুবকের একজন ফোন দিয়ে আরেকজনকে ডেকে এনে ওই শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করে।”
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার রাকিব মিয়া ওরফে ইমন স্থানীয় একটি ক্লিনিকে অভ্যর্থনাকারী হিসেবে চাকরি করলেও তার বিরুদ্ধে মাদক ও মারামারির মামলা রয়েছে। গোপালগঞ্জের একটি পাওয়ার হাউসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে পিয়াস ফকির। প্রদীপ বিশ্বাস গোপালগঞ্জে এসি ও ফ্রিজ মেরামতের কাজ করে। এছাড়া গ্রেপ্তার নাহিদ রায়হান স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। হেলাল স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তূর্য মোহন্ত খুলনার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৮ সালে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য বিদেশে যায়। শেষ বর্ষে থাকাকালে কোভিড পরিস্থিতির কারণে সে দেশে চলে আসে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় তারা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
দেশকন্ঠ/অআ