• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৩:৪৫

মাহে রমজানে জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

  • সারাদেশ       
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২২       
  • ১২০
  •       
  • ১৫-০৪-২০২২, ১৮:৫৫:২০

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : রমজান মাসে যেকোনো ইবাদতের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিশেষ করে ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিনটি অনেক বরকতময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা এ দিনকে অন্যান্য দিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। মাহে রমজানে জুমার দিনের গুরুত্ব-মহাত্ম অপরিসীম।  জুমার এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ইবাদতের দিন বলা হয়। পবিত্র কোরআন ও হাদীসে জুমার দিনের বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
 
আল্লাহ তায়ালা এই দিনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
 
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
 
 
‘মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।’ (সূরা জুমুআ :০৯)
 
জুমার দিনের ফজিলত বর্ণনা করে বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ বুখারী শরীফে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত আছে। সাহাবি হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত গোসলের ন্যায় গোসল করে, নামাজের জন্য মসজিদে আগে আগমন করে সে যেন একটি উট কোরবানী করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কোরবানী করল। যে তৃতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানী করল। চতুর্থ পর্যায়ে যে আসল সে যেন একটি মুরগী কোরবানী করল, পঞ্চম পর্যায়ে যে আসল সে যেন একটি ডিম কোরবানী করল। পরে ইমাম যখন খুতবা দেওয়ার জন্য বের হন তখন ফিরিশতাগণ যিকর শোনার জন্য হাজির হয়ে থাকেন। (বুখারী ২য় খণ্ড ৮৩৮)
 
আরেকটি হাদিসে রয়েছে, হযরত সালমান ফার্সী (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, যথাসাধ্য ভালরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, নিজের তেল ব্যবহার করে, নিজের ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে এরপর বের হয় এবং দুজন লোকের মাঝে ফাঁক না করে তারপর তার নির্ধারিত নামাজ আদায় করে এবং ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় চুপ থাকে তাহলে তার জুমআ থেকে আরেক জুমআ পর্যন্ত সময়ের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারী ২য় খণ্ড ৮৩৯)
 
জুমার দিনকে মুসলমানদের জন্য ইবাদতের দিন ও দোয়া কবুল হওয়ার দিন বলা হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি মহান দিন। এ দিনটির সম্মান ও মর্যাদার জন্য ইহুদি-নাসারাদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। পরবর্তীতে ইহুদিরা শনিবারকে আর খ্রিস্টানরা রোববারকে তাদের উপাসনার দিন নির্ধারণ করলেও আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জন্য শুক্রবারকে ইবাদতের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আমিরুল মুমিনিন হযরত ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, এক ইয়াহুদি তাঁকে বলল, ‘হে আমিরুল মুমিনিন! আপনাদের কিতাবে একটি আয়াত আছে, যা আপনারা পাঠ করে থাকেন, তা যদি আমাদের ইয়াহুদি জাতির ওপর অবতীর্ণ হতো, তবে অবশ্যই আমরা সেই দিনকে ঈদ হিসেবে পালন করতাম, তিনি বললেন, ‘কোন আয়াত’? সে বলল, ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।’ (সূরা মায়েদা : আয়াত ৩) হজরত ওমর বললেন, ‘এটি যে দিনে এবং যে স্থানে রাসূল (সা.) এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমরা জানি। তিনি সেদিন আরাফায় দাঁড়িয়েছিলেন আর সেটা ছিল জুমুআ’র দিন।’ (বুখারি)
 
হাদিসে আছে, হে মুসলমানগণ! জুমার দিনকে আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের জন্য (সাপ্তাহিক) ঈদের দিন হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। তোমরা এদিন মিসওয়াক কর, গোসল কর ও সুগন্ধি লাগাও।’ (মুয়াত্তা, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)। হাদিসে আরো বলা হয়েছে, জান্নাতে প্রতি জুমার দিনে জান্নাতিদের হাট বসবে। জান্নাতি লোকেরা সেখানে একত্রিত হবেন। সেখানে এমন মনমুগ্ধকর হাওয়া বইবে, যে হাওয়ায় জান্নাতিদের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরা তা দেখে অভিভূত হবে। অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে। (মুসলিম)
 
জুমার রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে মারা যান; আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেন।’ (তিরমিজি) জুমার ফজিলত যদি বলতে হয় তা বলে শেষ করা যাবে না। তারপরও সংক্ষেপে এর কিছু বর্ণনা দেয়া হলো- এই পবিত্র জুমার দিনে হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল; এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল (আবু দাউদ) এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল (মুসলিম)। এই দিনে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল, এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল এবং এই দিনেই তাঁর রূহু কবজ করা হয়েছিল (আবু দাউদ)। পবিত্র জুমার দিনেই শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, এই দিনেই কিয়ামত হবে, এই দিনেই সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে (আবু দাউদ)। জুমার দিন নিকটবর্তী ফেরেশতাগণ, আকাশ, পৃথিবী, বায়ূ পাহাড়, সমুদ্র সবই ক্বিয়ামত হবার ভয়ে ভীত থাকে।’ (মুয়াত্তা, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)
দেশকণ্ঠ/রাসু
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।