• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
    ৯ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০১:২৬
মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদার [অব.]

আমার দেখা হকির ১৮ বছর : তৃতীয় পর্ব

খেলা মানেই অনিশ্চিত ফলা ফল। আমাদের এই অনিশ্চয়তা খুব সীমাবদ্ধতার গণ্ডির মাঝে আবদ্ধ। দেশের শ্রেষ্ঠ তিনটি খেলা আমার সময় ছিল ফুটবল, হকি এবং তারপর ক্রিকেট। আমার সময় বলতে ১৯৬৮ থেকে ১৯৯০ সাল। এখন পাশা উল্টেছে। আজ ক্রিকেট, ফুটবল এবং তার বহুপরে হকির অবস্থান। এই ধূসর হয়ে যাওয়া হকির এক সময়ের অন্যতম একজন ছিলাম আমি। আমার হকি আত্মজীবনী ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে অনলাইল পোটাল দেশকণ্ঠে। 
২৪ জুন ২০২২ প্রকাশ হলো মেজর শাহাবউদ্দিন চাকলাদারের [অব.] ধারাবাহিক লেখার তৃতীয় পর্ব। 

দ্বিতীয় পর্বের পর
পোস্টিং মফস্বলে হবার জন্য অসুস্থ হলে স্থানীয় ডাক্তারদের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। এই ডাক্তার সাহেবরা হতেন খুব যত্নশীল। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাসায় চা-চক্র হতোই। ওই মফস্বলে বাবাই ছিলেন একমাত্র গেজেটেড অফিসার। স্কুল শেষ করে সবাই বিএম কলেজে পড়েছি। মেজ ভাই ভোর সকালে পাখি মারতে বন্দুক নিয়ে বেড় হতেন। আমরা সাথে যেতাম।
 
এক দিন চা-চক্রে দারোগা কাকা বললেন কোথায় জানি বাঘ দেখা গেছে বাবাকে তাদের সাথে বন্দুক নিয়ে যেতে হবে। বাবা রাজি। মা বেকে বসলেন। কিছুতেই বাবা যেতে পারবেন না। তখন মেজ ভাই নিয়ে আলাপ আলোচনা দাবী শুরু হলো, মা একদম না রাজি অবশেষে ঠি ক হলো বন্দুকটা বাঘ মারার জন্য দেওয়া হবে। বন্দুক দেবার দুদিন পর বাঘ শিকারের খবর এলো। বাঘকে মারতে পারে নাই তবে চারজন দারোগা কাকা এক কন্সটেবল আর দুই নৌকার মাঝি হাসপাতালে। দেখার বিরাট ভিড়। দেখতে গেলাম। সন্ধ্যা বেলা দারোগা চাচি বন্দুক ফেরত দিতে আসলেন। বললেন যাবে দিয়া যে কাজ হয় না  তারে সে কাজে পাঠানো ঠি ক না। পরে বাঘ শিকারের গল্প শোনালেন।
 
 
সাহেব গন্জের বাসা বসবাসের জন্য মস্ত বড়। সরকার থেকে একজন গ্যাজেটেড অফিসারের জন্য নির্দ্দিষ্ট করে রাখা হয়েছিল। তবে এ বাসা  নিয়ে আমার তখন যে বয়স তাতে উৎসাহ থেকে চাঞ্চল্যই বেশী ছিল। এমনিতেই আফসার গল্প বলাতে ওস্তাদ। গল্প সাজানোও হতো সুন্দর করে। বলত এমন করে যে আমরা বিশ্বাসের ভর করে ঘুমিয়ে যেতাম। বলত, সওদাগর যাচ্ছে ব্যবসায়ে, নদীর ঘাটে কন্যা পানি কলসিতে ভরসে, কি তার রূপ, সওদাগর সাত চিত্তর আর আট উপর হয়ে অজ্ঞান।
বুঝলাম সওদাগর রূপে তোরে গড়াগড়ি খেয়েছ।
 
এই যে মুরগি পালার জায়গা, এখানে পালাপলি খেলার সময় লুকিয়েছিলাম। বের হবার সময় দেখি পিঠ আটকে গেছে। এমনত হয়না। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চিৎকার, চেষ্টা করার পর হঠাৎ দেখি পিঠের আটকানো জায়গা হাল্কা হয়ে খুলে গেছে। এ ধরনের উৎপাত এ বাসাতে নিত্য দিনের মতন ঘটবেই।
 
দোতালা থেকে নীচে নেমেই ডাইনে মোর দিলে ছয়/সাত ফুট দূরে একটা দরজা, এই দরজাটা দিয়ে আবার ডাইনে মোর দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে পিছনের পুকুর, খেলার মাঠে যাওয়া যায়। সামনে বড়রা ব্যাডমিন্টন খেলে, ভলিবল খেলে আর ছোটরা খেলে পিছনে।
 
সেদিন স্কুল ছুটি। আমাদের মধ্যে অলক নামে এক বন্ধু আসত বেশ দূর থেকে। আমি দোতালা থেকে শিপু ফুপুর চারটা বাজার পাশ পেতে পিছনের মাঠে যাবার তাগাদায় ঊদ্ধশ্বাসে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যেতে যেতে দেখি অলক মুরগীর খোপের সামনে দাড়িয়ে, ওঁকে দেখে দৌড়ের উপর আমি শুধু বললাম, আয়, মাঠে খেললাম,অলক খেলতে যায় নাই তা আর খেয়াল ছিল না।
 
পরদিন স্কুলে মর্নিং ফল ইন এ হেড মাস্টার স্যার জানালেন গত পরশু রাতে অলক কলেরায় মারা গেছে। ক্লাসে চুপচাপ ভাবলাম পরশু কলেরায় মারা গেছে অলক অথচ মুরগীর ঘরের সামনে গত কাল বিকেল বেলা ওঁকে দাড়িয়ে থাকতে দেখেছি।
[চলবে]
দেশকণ্ঠ/আসো
 
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।