• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৭ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৭:৩৭

১২ দিন ধরে মহাসড়কে শতাধিক পরিবারের বসবাস রাত কাটছে ভয়-আতঙ্কে

  • জাতীয়       
  • ২৮ জুন, ২০২২       
  • ৭৪
  •       
  • ২৮-০৬-২০২২, ১০:১১:২১

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : বন্যার পানিতে ভেসে গেছে বাড়ি-ঘর। আশ্রয়ের জন্য আশপাশে নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের দুপাশে। বাঁশের সঙ্গে ত্রিপল বেঁধে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে কোনো রকম জীবন-যাপন করছেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলার কয়েক কিলোমিটার সড়কজুড়ে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে এসব অস্থায়ী ঘর। বিদ্যুৎহীন এসব ঘরে রাত কাটছে ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে। জানা গেছে, গত ১৬ জুন সুনামগঞ্জে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে পানি ঘরের ভেতরে ঢুকে কোমর থেকে গলা পর্যন্ত চলে আসে। ১৭ জুন ভয়াবহ রূপ নেয় বন্যা। বাড়ির চালা ছুঁয়ে যায় বন্যার পানি। কূলকিনারা না পেয়ে মানুষ জীবন বাঁচাতে ছুটে যায় আশ্রয়কেন্দ্রে। তবে বেশির ভাগ আশ্রয়কেন্দ্রে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। কোনো কোনো এলাকার আশপাশে আশ্রয়কেন্দ্রও ছিল না। ফলে মানুষ ঠাঁই নেয় সড়কে। সড়কের ওপরে বাঁশের সঙ্গে ত্রিপল বেঁধে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে মানুষ ও গবাদিপশু ঘুমাচ্ছেন। সড়কে থাকায় অধিকাংশ ঘরে নেই রান্নার ব্যবস্থা। সড়ক পথে যাওয়ার সময় সরকারি-বেসরকারি ত্রাণের ট্রাক দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা। যা শুকনো খাবার পাচ্ছেন সেগুলো দিয়েই জীবনধারণ করছেন। 
 
তবে রাত হলে শুরু হয় দুর্বিষহ জীবন। বিদ্যুৎহীন ঘরে ভয় আর আতঙ্কে কাটে সারা রাত। সড়ক হওয়ায় ঝুপড়ির পাশ দিয়েই চলে বড় বড় বাস-ট্রাক। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। যেকোনো গাড়ি সড়কের একটু পাশ দিয়ে গেলেই গুড়িয়ে নিয়ে যাবে শত শত পরিবার। তাছাড়া রয়েছে ডাকাতের ভয়। বাসিন্দারা রাত জেগে পাহারা দিয়ে গবাদি পশুকে রক্ষা করছে। সদর উপজেলার জানিগাঁও গ্রামের বৃদ্ধা জাহেরা খাতুন বলেন, বন্যা আসার পরে ৩-৪ দিন ছিলাম হাই স্কুলে। পরে তারা স্কুলে কাজ করার জন্য আমাদের বের করে দেয়। এখন আইছি রোডে। মা নাই, তিনটা নাতিন লইয়া কষ্টেত আছি। একই গ্রামের আনোয়ারা বলেন, আজ ১০-১২ দিন ধরে ঘরের ভেতর পানি। এখন যাও সামান্য পানি কমেছে ঘরে ঢুকতে পারছি না। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে খাইতে পারি না। সরকারে একটু দিলে খাই। সোহানা বেগম নামে এক নারী বলেন, রাত ১২ টায় হু হু করে ঘরে পানি ঢুকে যায়। বাচ্চা নিয়া কই যাইতাম। এখন রোডে আইছি। রাস্তা দিয়া বড় বড় বাস যায়, ডর লাগে। বাচ্চা কাচ্চা নিয়া কষ্টত আছি। গোলাপ হোসেন বলেন, খেয়ে না খেয়ে থাকতেছি। মনের মাঝে বড় ভয়। কোন সময় গাড়ি ওঠে যায়। ১০-১২ দিন রাস্তাত, এখনো বাড়ি যাইতে পারতেছি না। 
 
হালুয়ারগাঁও গ্রামের জুলেখা বলেন, ডাকাতের লাগি রাত হলে ঘুমাতে পারি না। চারদিকে ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে হাঁটাহাটি করে। বাড়িও নাই ভেঙে গেছে। এর লাগি গরু নিয়া আইছি। গরুকে খাওয়ানোর মতো কিছু নাই। শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, জানমালের নিরাপত্তায় ৫টি নৌকা ও ২টি গাড়ি নিয়ে প্রতিদিন টহল অব্যাহত আছে। যার কারণে এখনো ডাকাতির তেমন খবর পাওয়া যায়নি। আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, বন্যায় ঘরে পানি ওঠে যাওয়ায় সবাই এসে মহাসড়কে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আমি তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও মানবিক কারণে উচ্ছেদ করতে পারেনি। আমি এটা জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছি। আশা করি ঘরের পানি কমে গেলে তারাও চলে যাবে।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।