মো. আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি : "আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার" এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫০টি পরিবারের মাঝে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে।
২১ জুলাই সকাল নয়টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সারাদেশে ২৬ হাজার ২শত ২৯টি ভূমিহীন -গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের ভ্যার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে এর শুভ উদ্বোধন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় নীলফামারীরা ডোমার উপজেলার ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে ২৫ জন এবং ৯নং সোনারায় ইউনিয়নে ২৫ জনসহ দুই ইউনিয়নে মোট ৫০ জন ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রমিজ আলম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রমিজ আলমের সভাপতিত্বে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন ও ৯নং সোনারায় ইউনিয়ন এর ৫০জন ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের কাছে গৃহের চাবি ও জমির কাগজপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মাঝে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বেগম রৌশন কানিজ, সহকারী কমিশনার ভুমি ও আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ভূমিহীন-গৃহহীন কার্যক্রমের সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপী, উপজেলা আ"লীগের সভাপতি অধ্যাপক খায়রুল আলম বাবুল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরননবী, সাবেক আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ, ১নং ভোগডাবুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালু, ৯নং সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফিরোজ চৌধুরী, ডোমার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ-উন-নবী প্রমুখ। এসময় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, সুধীজন, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ডোমার প্রেসক্লাবের সভাপতি আসাদুজ্জামান চয়ন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু ফাত্তাহ কামাল পাখি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, এবাদত হোসেন চঞ্চল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নোয়াখালী বর্তমান লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পূর্ণবাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের মতো জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ২১ বছর পর তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো পূর্ণরায় শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিনে প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পূর্ণবাসনের উদ্যাগ নেন এবং একই বছর তিনি সারাদেশের ভূমিহীন - গৃহহীন মানুষকে পূণর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্তাবধানে শুরু করেন "আশ্রয়ন প্রকল্প"। এ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত সুবিধা-সমুহ নিশ্চিত হচ্ছে; স্বামী-স্ত্রী যৌথ মালিকানায় ২ শতাংশ জমি ও একটি সেমিপাকা ঘর প্রদান। প্রতিটি গৃহের সাথে আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ, বিনামূল্যে সুপেয় পানির সুবিধা, গ্রোথ সেন্টারের কাছাকাছি পূর্ণবাসন করায় উপকারভোগীদের কর্মসংস্থানসহ তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিত। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রতিটি গৃহ বন্যা বিপদসীমার উপরে তুলনামূলক উঁচু স্থানে নির্মান করা হচ্ছে বিধায় বন্যাসহ বিভিন্ন দূর্যোগে জান মালের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। উপকারভোগীদের উৎপাদনমুখী কাজের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান। এবং উপকারভোগীরা বসত ভিটার আঙ্গিনায় সবজি চাষ, পশুপালন সহ প্রকল্প সংলগ্ন পুকুরে মৎস্য চাষ করছেন।
দেশকণ্ঠ/আসো