• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৬ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:৪৫

প্রায় দুই যুগ ধরে কৃষকের আস্থা অর্জনকারী ব্রি ধান ২৮

দেশকন্ঠ প্রিতিবেদন : প্রায় দুই যুগ ধরে কৃষকের আস্থা অর্জনকারী ব্রি ধান ২৮ এর জায়গা দখল করেছে ব্রি ধান ৫৮। মেহেরপুর জেলায় চলতি বছরে বোরো ধান মৌসুমে ব্রি ধান ২৮ এ ব্যাপকভাবে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ করে। বিপরীতে অনেকটাই ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান ৫৮। ফলে কৃষকের মাঝে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লেটেস্ট এই ভ্যারাইটি।
 
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া বেরো মৌসুমে জেলায় ২৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে অর্জিত হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক লাখ মে. টন। ব্লাস্ট সংক্রমিত জমি থেকে ধানের ফলন কম হলেও উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান ৫৮, ব্রি ধান ২৯ এবং ব্রি ধান ৬৩ তে অধিক ফলনের কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছে।
 
গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের কৃষক তহসিন আলী জানান, তিনি এবারের বোরো মৌসুমে এক একর জমিতে ব্রি ধান ৫৮ আবাদ করেছিলেন। একই মাঠে অনেক কৃষকের ক্ষেতে ব্রি ধান ২৮ ব্লাস্ট নামক ছত্রাকে নষ্ট হলেও তার ক্ষেত ভালো ছিল। তাই ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়াও ধান গাছ খাড়া থাকায় বিচুলি করতে পেরে গো খাদ্যের সংকট মিটেছে। ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল রানা জানান, কৃষি অফিসের প্রদর্শনীর আওতায় তিনি দেড় বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৫৮ আবাদ করেছিলেন। বিঘায় (৩৩ শতক) ফলন হয়েছে ৩০ মণের উপরে। তার পাশের ক্ষেতের কৃষকদের ব্রি ধান ২৮ এর ফলন হয়েছে ২০-২২ মণ। ব্রি ধান ৫৮ দেখতে অনেকটাই ২৮ এর মতো হওয়ায় ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষ ব্রি ধান ৫৮ চাষের উপর জোর দেবেন বলেও জানান তিনি। রাইপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান মোকলেছ বলেন, ‘আমি এবার ২০ বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৬৩ আবাদ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছি। যা বিঘায় ২৫-৩০ মণ। ধান লম্বা ও সরু যা মিনিকেট সাদৃশ্য। ফলে অন্যান্য ধানের চেয়ে প্রতি মণে ১০০-২০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে পেরেছি। এর ভাত সু-স্বাদু ও ঝরঝরে হওয়ায় সহজেই মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছেন।’
 
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডক্টর আখতারুজ্জামান জানান, ‘আমাদের ব্রি’র বিজ্ঞানিরা নিরলসভাবে চেষ্টা করে সময় উপযোগী বিভিন্ন প্রকার ভ্যারইটি উদ্ভাবন করছেন। বোরো ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান ৫৮ এবং ব্রি ধান ৬৩ সত্যিই কৃষকদের জন্য উপকারী। এর আবাদ সম্প্রসারণের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। ব্রি ধান ২৮ দীর্ঘ দুই যুগ ধরে আবাদ করা হচ্ছে। ফলে এতে অনেক রোগ বালাই ঢুকে গেছে। নির্বিঘ্নে ধান আবাদের জন্য ব্রি উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতের ধান আবাদে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দিচ্ছি।’
 
জানা গেছে, ব্রি ধান ২৮ চাষাবাদের জন্য ১৯৯৪ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদিত হয়। এর পরে আরও অনেক জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম জাত হচ্ছে ব্রি ধান ২৯, ৫৮ ও ৬৩। এদের মধ্যে ব্রি ধান ২৯ এর জীবনকাল একটু বেশি। দেশের যে অঞ্চলগুলোতে ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ চাষাবাদ হয় সেই অঞ্চলগুলোতে চাষাবাদ এবং ফলন পরীক্ষার পর ২০১২ সালে ব্রি ধান ৫৮ চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেয় জাতীয় বীজ বোর্ড। ঝড় বৃষ্টিতে ধান গাছ হেলে পড়ে না তাই ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা কম।
 
অন্যদিকে ব্রি ধান ২৮ সহজেই হেলে পড়ে। ৫৮ ও ৬৩ জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট হল শীষ থেকে ধান ঝরে পড়ে না। ব্রি ধান ২৮ এর প্রায় সমান জীবন কাল হওয়ায় একই সময়ে কাটা মাড়াই করা যায়। প্রতি হেক্টরে ব্রি ধান ২৮ এর ফলন ৫.৫ থেকে ৬ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ২৯ এর ফলন ৭.৫ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ৫৮ এর ফলন ৭ থেকে ৭.৫ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ৬৩ এর ফলন ৬.৫ থেকে ৭ মেট্রিক টন।
দেশকন্ঠ/রাসু
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।