দেশকন্ঠ ডেস্ক : আফগানিস্তানের ইসলামপন্থী তালিবান সরকার বুধবার তাদের কিছু নেতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞাকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক "উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা" হিসাবে সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান বা সাবেক তালিবান নেতাদের শাস্তি হিসাবে ভিসা প্রদানে একটি নতুন বিধিনিষেধ নীতি ঘোষণা করার একদিন পর, তালিবানের পক্ষ থেকে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হল। তালিবান পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এই ধরনের সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "সমস্ত বিরোধ কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত এবং যে সিদ্ধান্তগুলি উভয় পক্ষের স্বার্থ পূরণ করে না, তা পর্যালোচনা করা উচিত।"
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের সময়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দোহায় দুই দেশের উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার পর এটি ঘোষণা করা হয়। ঐ বৈঠকে "প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়" বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রকাশ করে বলেছেন, এই ধরনের ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই বিধিনিষেধের আওতায় থাকতে পারেন। ব্লিংকেন অন্যান্য সরকারকেও ওয়াশিংটনের সাথে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান, যাতে তালিবানকে সম্মিলিতভাবে একটি বার্তা পাঠানো যায় যে, শুধুমাত্র যে সরকার যে সকল আফগানের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের মানবাধিকারকে সম্মান দেয়, সেই সরকারকে বৈধ বলে গণ্য করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, "একটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ হলো, আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে, মেয়েদেরকে ষষ্ঠ শ্রেণির বাইরে স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, এবং এখন পর্যন্ত তাদের স্কুলে প্রত্যাবর্তনের কোনও আলামত দেখা যাচ্ছে না"। ২০২১ সালের আগস্টে তৎকালীন বিদ্রোহীদের সাথে ২০ বছরের যুদ্ধের পর, আমেরিকান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহার করে নিলে, তালিবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। কট্টরপন্থী গোষ্ঠীটি তখন থেকে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অংশে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ফিরে যেতে বাধা দিয়েছে তবে নারীদের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি রয়েছে।
মানবাধিকার এবং সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত উদ্বেগের জন্য বিদেশী সরকারগুলি এখনও আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তালিবান তাদের নীতির পক্ষে বলেছে, তাদের নীতি আফগান সংস্কৃতি এবং ইসলামি আদেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তারা আরও বলছে, শুধুমাত্র পুরুষ সরকার সমস্ত আফগান গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। তারা ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পশ্চিমা মিডিয়ার প্রচার বলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। গত মাসের শেষের দিকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি স্কুলে একটি শক্তিশালী আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, যখন শিক্ষার্থীরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
জাতিসংঘ বলেছে, ওই বোমা হামলায় ৫৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও কন্যা। এছাড়া আরও অনেক লোক এতে আহত হয়েছে।
সূত্র : ভিওএ
দেশকণ্ঠ/রাসু