দেশকণ্ঠ প্রতিবেদক, নওগাঁ : নওগাঁ জেলাধীন রানীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল নিজস্ব জমিতে ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জমিতে নতুন নতুন জাতের এবং অধিক উৎপাদনশীল ফসল উৎপাদন তাঁর নেশা। গতানুগতিক সাধারণ যে কোন ফসলকে ব্যতিক্রমী উপায়ে উৎপাদন করে অধিক লাভবান হওয়ার উপায় খুঁজে বের করেন তিনি।
ঠিক একইভাবে এ বছর তিনি জংলী বেগুন গাছের সাথে গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে অত্যন্ত সফলতা পেয়েছেন এ কৃষক। এ নিয়ে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাঁর এ সফলতা দেখে অনেক কৃষক গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
তাঁর ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইউটিউব থেকে পেয়েছেন এক নতুন ধারনা। সেই ধারনা অনুযায়ী তাঁর নিজস্ব সম্পত্তিতে প্রয়োগ করলেন। গ্রামে জংগলে পাওয়া যায় এক ধরনের জংলী বেগুন। কেউ এটিকে বলে কাঁটা বেগুন আবার কেউ বলেন ঘুটি বেগুন। ১৫ দিনের ব্যবধানে তিনি ঘুটি বেগুনের বীজ এবং টমেটোর বীজ রোপণ করে তৈরি করলেন চারা। সেই চারা তিনি নিজস্ব ১৩ কাঠা জমিতে গ্র্যাফটিং করে রোপণ করেন। হয়ে গেল তাজা তাজা হাইব্রডি জাতের টমেটোর গাছ। সব মিলিয়ে তাঁর খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা।
রোপণের দুই মাস পর থেকেই গাছে গাছে ফল আসে। স্বাভাবিক টমেটোর গাছ থেকে তাঁর এ বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি গাছে অনেক বেশী বেশী টমেটো ধরেছে। ফল আস্রা পর থেকে এখন পর্যন্ত এ দুই মাসে ওই জমি থেকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ কেজি করে টমেটো উত্তোলিত হচ্ছে। এসব টমেটো বাজারে প্রতি কেজি ১১০ টাকা করে বিক্রি করছেন। সেই হিসেবে বিগত দু’মাসে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আগামী আরও একমাস তিনি টমেটো বিক্রি করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। উৎপাদনের হার থাকবে একই রকম। মূল্যও পাবেন একই। অর্থাৎ পুরো মৌসুমে তিনি কমপক্ষে ৫ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন। খরচ বাদ দিয়ে নীট মুনাফা করবেন সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তাঁর এ নতুন প্রক্রিয়ায় টমেটো চাষের সফলতা দেখে এলাকার অনেক কৃষকই এখন এ পদ্ধদিতে টমেটো চাষ করতে অগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বাদলের সহায়তায় তাঁরা চাষ করতে চান।
রানীনগর উপজেলার কৃষি অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সময়ের প্রয়োজনে কৃষকদের নতুন নতুন অধিক উৎপাদনশীল ফসল চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় রানীনগরের চাষি বাদলসহ অনেকেই গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাল করে সাফল্য অর্জন করেছেন। এ ব্যপারে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
দেশকণ্ঠ/আসো