দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে শতাধিক ড্রেজার দিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। আর সেই বালু নিতে পদ্মার বুকে নেমেছে বাল্কহেডের ঢল। এসব বালু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে। বালু উত্তোলন ঠেকাতে প্রশাসন কিংবা নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়াঘাটের অদূরে পদ্মার বুকে শতাধিক ড্রেজারে বালু উত্তোলন চলেছে। বালু উত্তোলন করা হচ্ছে পদ্মা সেতুর পিলারের কাছাকাছি জায়গা থেকেও। তবে পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজের কাজের সুবিধার্থে ১৬টি ড্রেজারকে বালু কাটার অনুমতি দিয়েছে বলে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে। অথচ এগুলোর বাইরে পদ্মার বুকে এখন বালু উত্তোলনের মহোৎসব লেগেছে। এদিকে পদ্মার বুকে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটে কারা রয়েছেন তা জানার উপায় নেই। তবে ড্রেজার ও বাল্কহেড শ্রমিকরা জানান, তারা অনুমতি নিয়েই কাজ করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ড্রেজার শ্রমিক জানান, ৬০ পয়সা ঘনফুট দরে বাল্কহেডগুলোর কাছে বালু বিক্রি করছেন তারা। আয়তন অনুযায়ী একেকটি বাল্কহেডে ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার ঘনফুট বালুর ধারণক্ষমতা রয়েছে।
অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে পদ্মায় বালু উত্তোলনের কোনো মহল বা ইজারা না থাকলেও প্রতিদিন পদ্মার তলদেশের লাখ লাখ ফুট বালু লুটে নেওয়া হচ্ছে। এতে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, পদ্মায় কোনো বালু মহালের ইজারা দেওয়া হয়নি। গেল ৬ মাসের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ৭৬ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৫০টি নৌযান অকোজো করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টেস্ট পাইল ড্রাইভের যন্ত্রাংশ নদীর তলদেশ থেকে উঠানোর জন্য ১৬টি ড্রেজারকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেতুর নির্দিষ্ট পিলারের (২৭-২৮ নং পিলার) ২৫০ মিটারের মধ্যে ওই ড্রেজারগুলো বালু উত্তোলন করবে শুধু। তবে বিক্রি করতে পারবে না। ১৬টি ড্রেজারের বাইরে যা আছে তা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৬টি ড্রেজারের বাইরে আরও অনেক ডেজার বালু উত্তোলন করছে। আবার পদ্মা সেতুর ওই নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা অনুযায়ী অনুমোদন পাওয়া ১৬টি ড্রেজার বালু বিক্রি করতে পারবে না বলা হলেও প্রতিদিন ড্রেজারগুলো বালু বিক্রি করছে।
মাওয়া কোষ্টগার্ডের কমান্ডার বুলবুল আহমেদ বলেন, আমরা অভিযানে গেলেই ড্রেজার ও বাল্কহেড সেতু কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের কাগজপত্র দেখাচ্ছে। এতে আমরা কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছি না। পদ্মাজুড়ে অবাধে বাল্কহেড চলাচলের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগেও ড্রেজার নিয়ে অভিযান চালিয়েছি। বরাবরই সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে সেগুলো তাদেরই।
দেশকন্ঠ/অআ