দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : আউটসোর্সিংয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম ঢাকা ওয়াসার কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে টিম ওয়াসার এমডির বক্তব্য গ্রহণ করে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুদক জানায়, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আউটসোর্সিংয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে টিম ঢাকা ওয়াসার এমডির সঙ্গে অভিযোগ বিষয়ে পর্যালোচনা করে এবং আউটসোর্সিং নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু রেকর্ড পত্র পরীক্ষা করে।
দুদকের পরীক্ষায় দেখা যায়, আউটসোর্সিং নিয়োগ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে থার্ড পার্টি নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক হয়ে থাকে। ওয়াসা আউটসোর্সিং নিয়োগের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকে না, তবে তারা তাদের প্রাক্তন বা বর্তমান কর্মচারীদের সন্তানদের অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকেন। থার্ড পার্টি নিয়োগের বিধি ও পদ্ধতি এবং বর্তমান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসমূহের তালিকা পরবর্তীতে ওয়াসা থেকে সরবরাহ করা হবে। রেকর্ডপত্র পূর্ণাঙ্গভাবে যাচাই বাছাই করে পরবর্তীতে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন দাখিল করা হবে। এদিকে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে— এমন অভিযোগের সূত্র ধরেই দুদকের আরেকটি অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
এছাড়া ওয়াসার পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়োশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।
দেশকন্ঠ/অআ