দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : তিন-চারদিন থেকে খুবে ঠান্ডা করেছে। সূর্যডার মুখখান দেখায় যায় না। দ্বিপ্রহরে এগনা (অল্প) আলো দেখাহানে আর দেখা মিলে না। বাতাস খান যে বহেচে, ওইখানই খুব ঠান্ডা লাগেচে। শরীরটা একেবারে হেম (ঠান্ডা) করে দেছে। এই তাহানে সইন্ধ্যার পর আর রিকশা চালাবা পারু না। বাড়িত ছোয়াটা গোশতের (মাংসের) কাথা কহেচে দুই-তিন দিন থেকে। দিনে রিকশা চালাহানে যা হয় তা দিয়া সংসার চলে। এলা ঠান্ডার দিন লোক বেশি বাহির হয় না। এই তাহানে ইনকাম খুবে কম। ভাড়া দিয়া ৩০০ টাকার মতো থাকে। গোশত কিনিবা আসে দেখচু ৭০০ টাকা কেজি। এত টাকা তো আর ইনকাম (আয়) হইলনি। আর পাশত এই ইস্টুলা (গরুর চামড়ায় লেগে থাকা মাংস) বলে ২০০ টাকা কেজি। এই তাহানে এক কেজি এইলা কিনিনু। হাড় হাড্ডি বেশি হবে হোক, স্বাদ তো মিলিবে। আর ছোয়াডাক কহা যাবে যে গোস্ত কিনিছু। বুধবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনের পাশে বসা মাংসের বাজার থেকে ইস্টু কেনার পর ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলছিলেন রিকশাচালক সলেমান আলী। সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের ফকদনপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। প্রায় বিশ বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। বাড়িতে দুই সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে তার।
সলেমান আলী বলেন, জিনিসলার দাম খুবে বাড়ে গেইছে। কোনো জিনিসের দাম ঠিক নাই। খালি হামার রিকশা ভাড়া বাড়ে না। আগুতে দশ টাকা ছিল এলাও ওই দশ টাকায় আছে। পাঁচ টাকা বেশি চাহিলে আরও কত কাথা শুনিবা হয়। তারপরও মোর কোনো অভিযোগ নাই কারহো ওপর। অভিযোগ করিয়া কি করিবেন। এই রকম করে জীবনডা কাটিবে। ছুয়া দুইডাক কহেচু যেন পড়াশোনা করে চাকরি করে। না হয়লে বাপের মতো রোদ আর ঠান্ডাত কষ্ট করিবা হবে। ঠান্ডার দিনত খুবই কষ্ট হয়। লোকজন তো এগারোটা বারোটার আগত বাহির হয় না। কিন্তু মুই বাহির হইলেও লোক পাওনা। দেখা যাক কতদিনে কপালত সুখ আসে। এলা এভাবেই চালাবা হবে জীবনডা। গরুর মাংসের ইস্টু বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, এগুলো হলো গরুর চামড়ায় লেগে থাকা, মাথা ও পায়ের অংশ। যেগুলো গরুর মাংসের সঙ্গে রাখা হয় না। সেগুলো আমরা ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। যাতে করে সবাই কিনতে পারেন।
দেশকন্ঠ/অআ