• মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৯ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৩:২৪

নীলফামারীর বেশিরভাগ কারখানায় নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা

  • জাতীয়       
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩       
  • ৫৪
  •       
  • ১৪-০১-২০২৩, ১০:২৮:০৮

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : উত্তরের শিল্প প্রসিদ্ধ জেলা নীলফামারীতে ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার শিল্পকারখানা রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরই নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। দুর্ঘটনা ঠেকাতে তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় চরম অগ্নি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কারখানাগুলোতে কর্মরত ৭০ হাজারের বেশি শ্রমিক। স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় এই অবস্থা। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে। বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। দুয়েকটিতে থাকলেও যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এছাড়া যথাযথ তদারকি নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জেলা ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, নীলফামারীতে ১ হাজার ৯৭৫টি শিল্পকারখানা রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা, হালকা প্রকৌশল, প্লাস্টিক, পলিথিন, চিপসসহ খাদ্যপণ্য, জুতা, প্লাইউড, সিরামিক, তৈজসপত্র, কাগজের মিল ও পাটপণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে ৯০৯টি প্রতিষ্ঠানে বা ৪৬ শতাংশে নেই অগ্নি দুর্ঘটনা ঠেকানোর মতো ব্যবস্থা। গত পাঁচ বছরে জেলায় কারখানায় ১৩০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণহানী হয়েছে ৭ জনের। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন ১৩ জন। আর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫০ কোটি টাকার বেশি। আইন অনুযায়ী, অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের পাশাপাশি কারখানার মালিকপক্ষ কমপক্ষে ২০ শতাংশ শ্রমিককে প্রশিক্ষণ করাবে। এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৫ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও জেলের বিধান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনেক কারখানারই সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ছাড়পত্র নেই, ট্রেড লাইসেন্সও মেয়াদোত্তীর্ণ। যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। এমনকি বস্তি এলাকা, আটকে পড়া পাকিস্তানীদের ক্যাম্প, বহুতল মার্কেট ও রেলের কোয়ার্টারে ছোট ছোট কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোতে ১০ থেকে ২০০ শ্রমিক কাজ করছেন।
 
সৈয়দপুরের কাঁঠালীপাড়া এলাকার অহেদুল ইসলাম বলেন, আমার একমাত্র ছেলে লিটন পেপার মিলে দুর্ঘটনায় মারা যায়। এমন সময় মিলের মালিক কিছু টাকা দিয়ে সান্ত্বনা দিলেও আর কোনো খোঁজখবর রাখেনি। শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় গার্মেন্টস কারখানার সংখ্যা বাড়লেও সে অনুযায়ী রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হয়নি। এ অবস্থায় এলাকায় আগুন লাগলে আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানোরও সুযোগ পাব না। সৈয়দপুর রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আকতার হোসেন খান বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে উপজেলায় বিভিন্ন গার্মেন্টস গড়ে উঠেছে। শুরুর দিকে দুয়েকটি মেশিন নিয়ে কেউ কেউ বসত। ধীরে ধীরে সেগুলোই কারখানা হয়েছে। তাই শুরুর দিকে কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে ছোট কিংবা বড় যেটাই হোক, প্রতিটি কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা উচিত। বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির নীলফামারী জেলা কমিটির সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু বলেন, নীলফামারীতে ২০০টি প্রকৌশল কারখানা রয়েছে। যেখানে প্রতিটিতে পাঁচ থেকে শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। অর্ধেকেরও কম কারখানায় রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অনেক কারখানা মালিককে কোনোভাবে সচেতন করা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি সভায় এ ব্যাপারে তাগাদা দেওয়া হয়। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতি আছে। তারা এসব কারখানা তদারকি করে না। নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, জেলার অধিকাংশ শিল্পকারখানার মালিক নিয়ম মানছেন না। আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি, তালিকাভুক্ত ও তালিকা ছাড়া বেশির ভাগ কারখানায় অগ্নিনির্বাপণের যেসব সরঞ্জাম থাকার দরকার সেগুলো নেই।
 
তিনি আরও বলেন, শিল্পকারখানায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলে অগ্নিকাণ্ডের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, সব কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এটি নিশ্চিতে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে। উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিসিক শিল্পনগরীর দুটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ জানুয়ারি রাতে সেলিম ফুড ফ্যাক্টরি নামে একটি ফুড ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফ্যাক্টরির মালিকের দাবি, এতে ৫০ লাখ টাকার সম্পদ পুড়ে গেছে। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে আমিনুল প্লাইউড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সৃষ্ট আগুনে কারখানার মেশিনপত্র ও কাঁচামালসহ প্রায় কোটি টাকার সম্পদ পুড়ে যায় বলে দাবি করেন মালিকপক্ষ। 
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।