• বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৯ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১১:২৩

নদী তীরের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় নিশ্চুপ প্রশাসন

  • জাতীয়       
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩       
  • ৩২
  •       
  • ২৬-০১-২০২৩, ১০:০৩:০৬

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর তীর এলাকার জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। এতে একদিকে উর্বর ভূমি বিলীন হচ্ছে, অন্যদিকে নদী ভাঙন ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। প্রশাসন দেখেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দৃশ্যমান কোন প্রতিবাদ জানাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের মতো তারাও নিশ্চুপ রয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। চরকালকিনি ইউনিয়নের নবীগঞ্জ এলাকার নদীর পাশ থেকেই বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইটভাটার জন্য মাটি কাটতে দেখা যায়। একদিনে নদীর তীরের প্রায় ৬০ ট্রাক্টর মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে চরলরেন্স ইউনিয়নের আনোয়ার হোসেন নিশাদের ইটভাটায়। মাটি কাটার শ্রমিক ও ট্রাক্টর চালকরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে জমির মালিক কে বা কারা তা জানা যায়নি।
 
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, বুধবার বেলা ১১টার দিকে নবীগঞ্জ এলাকা হয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা মেঘনার নতুন চর কাকড়াতে যান। তখন মাটি কাটার ঘটনাটি তাদের নজরে পড়লেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। নবীগঞ্জ এলাকার নদীর তীরে সরেজমিনে দেখা যায়, জমিতে সয়াবিন চাষ করেছেন কৃষকরা। আর দক্ষিণ পাশে বিস্তীর্ণ জমির উপরিভাগের মাটি কাটছেন কয়েকজন শ্রমিক। পরে তারা নিজেরাই ওই মাটি ট্রাক্টোর বোঝাই করছেন। এর পাশেই নদী থেকে প্রায় ১০ ফুট দূরে সম্প্রতি প্রায় ৩০ শতাংশ জমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখেই মনে হয় সেখানে একটি বড়সড় পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে জোয়ারে নদীর ঢেউ এলেই খুব সহজেই ওই জমি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। পাশেই নবীগঞ্জ বাজার। ভাঙন বাড়লেই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজারটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
 
স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন মিয়া বলেন, পাশের জমিতে সয়াবিন বীজ ফেলা হয়েছে। এখানে ফসল ভালো হয়। নদী ভাঙনে বিলীনের ভয়ে জমির মালিক এবার ভাটা মালিকের কাছে মাটি বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রতি ৮ শতাংশ জমির মাটি ৪-৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হয়। জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ার পর দুই বছর পর্যন্ত সেখানে ফসল উৎপাদন হয় না। মফিজ আহমেদ নামে এক বৃদ্ধ বলেন, বিনামূল্যে ভাটা মালিকরা ইট তৈরির জন্য নদীর তীর এলাকা থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। নদীতে ভেঙে বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন। আবার অনেকে জমি চাষাবাদের পর ভাঙনে বিলীনের ভয়ে ফসল উৎপাদনে অনীহা প্রকাশ করছেন। সেই সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে নদীর তীরের মাটি ভাটা মালিকরা নিয়ে যাচ্ছে। এতে নদী ভাঙনের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। জেলে ইব্রাহিম, আক্কাছ, আনিসসহ (ছদ্মনাম) কয়েকজন জানায়, নদীতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদের জরিমানা ও জেল দেওয়া হয়। জাল পুড়িয়ে দেয় প্রশাসন। কিন্তু নদীর তীর থেকে প্রতিনিয়ত ইটভাটার জন্য মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে নদী ভাঙনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিন্তু তা প্রশাসনের চোখে পড়লেও কোনো ব্যবস্থা নেন না তারা। 
 
মাটি কাটার শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন ও জহির হোসেন জানান, সকাল থেকে তারা ১৫ জন মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। স্থানীয় ইটভাটা মালিক আনোয়ারের হয়ে তারা কাজ করেন। প্রতি ট্রাক্টর মাটি কাটার জন্য তারা (১৫ জন শ্রমিক) ১৫০ টাকা মজুরি পান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা প্রায় ৬০ ট্রাক্টর মাটি কেটে ভাটায় পাঠিয়েছেন। ট্রাক্টর চালক মো. সোহেল বলেন, আমি ইটভাটা মালিক আনোয়ারের ট্রাক্টর চালাই। নদীর পাড় এলাকার মাটি ইট তৈরির জন্য নেওয়া হয়। ভাটা মালিক মাটি কিনে নিয়েছে জমির মালিকের কাছ থেকে। বক্তব্য জানতে ভাটা মালিক আনোয়ার হোসেন নিশাদের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, আমি ঘটনাস্থল এলাকা হয়ে চরে গিয়েছি। সেখান থেকে অন্য পথে চলে আসি। এজন্য নদীর পাড় থেকে ইটভাটার জন্য মাটি কাটা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। সেখানে অভিযান চালিয়ে মাটি কাটা বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।