• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১১ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২৩:০৯

যেভাবে এলো মোবাইল ফোন কে বলেছিলেন প্রথম কথা?

দেশকন্ঠ ডেস্ক : আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে কথা বলার জন্য, মেইল করার জন্য বা আরও অন্য কারণে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। কখনও কি চিন্তা করে দেখেছেন যে, এই মোবাইল ফোন কীভাবে আবিষ্কার হলো? আজকে আমরা এই মোবাইল ফোন আবিষ্কারের ইতিহাস জেনে নিবো।প্রথম মোবাইল ফোন তৈরি হয়েছিল ১৯৭৩ সালে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে - আর তা তৈরি করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার। তাকেই বলা হয় মোবাইল ফোনের জনক।

মার্টিন কুপার কাজ করতেন তখনকার এক ছোট টেলিকম কোম্পানি মোটরোলায়। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল: এমন একদিন আসবে যখন সবার হাতেই তার নিজস্ব ফোন থাকবে, আর সেই ফোনে যে কোন সময় তার সাথে যোগাযোগ করা যাবে।সে সময় টেলিফোন মানে ছিল এমন একটা জিনিস, যা মানুষের অফিসের টেবিল আর বাড়িতে তারের সাথে যুক্ত থাকত। সে কারণে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের ধারণা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতোই ছিল। ডিক ট্রেসি নামের আমেরিকান একটি কমিকের চরিত্রগুলো এক ধরনের ভিডিও হাতঘড়ির সাহায্যে পরস্পর যোগাযোগ করত, সেটা দেখেই প্রথমবার মার্টিন কুপার এর মাথায় মোবাইল ফোনের চিন্তাটা এসেছিল। ঠিক সেই জিনিসটাই মার্টিন কুপার এর নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি দল মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে তৈরি করেছিল।

আজ থেকে ৪৮ বছর আগে ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে, নিউইয়র্কের হিলটন হোটেলে প্রথম মোবাইল ফোনের মডেল উপস্থাপন করা হয়। প্রথম মোবাইল ফোনটি ছিল ১০ ইঞ্চি লম্বা আর ২ ইঞ্চি চওড়া এবং প্রায় ৪ ইঞ্চি মোটা। সেই মোবাইল ফোনের ওজন ছিল এক কেজিরও বেশি। মাত্র ২০ মিনিট কথা বললেই ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যেত। তাই সেই ফোন দেখে অনেকেই হাসাহাসি করেছে। তবে সত্যিকার অর্থে ওই সময়ে এরকম একটি ফোন তৈরি করা ছিল এক প্রকার অসম্ভব চ্যালেঞ্জ।পৃথিবীর ইতিহাসের মোবাইল ফোন দিয়ে প্রথম কলটিও করেছিলেন মার্টিন কুপার। তিনি নিউইয়র্কের ৬ষ্ঠ অ্যাভিনিউতে হাঁটতে হাঁটতে এ.টি অ্যান্ড টি (AT&T) কোম্পানিতে কর্মরত তার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুকে কলটি করেছিলেন।

এ.টি অ্যান্ড টি (AT&T) আবিষ্কৃত সেলুলার টেকনোলজি নামের একটা প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয়েছিল। হাতে করে ফোন নিয়ে ঘোরার কথা এ.টি অ্যান্ড টি মোটেও ভাবেনি। তারা এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিল মূলত গাড়িতে টেলিফোন সংযুক্ত করার জন্য। কিন্তু ছোট্ট কোম্পানি মটোরোলা তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো টেলিকম কোম্পানি এ.টি অ্যান্ড টির কল্পনার সীমানা ছাড়িয়ে যায়। সবার আগে, প্রথম মোবাইল ফোন বাজারে আনে মটোরোলা কোম্পানি! তবে প্রথম মোবাইল ফোনটি বাজারে আসতে আরও দশ বছরের মতো সময় লাগে। ১৯৮৩ সালে প্রথম বারের মতো বাজারে আসে মটোরোলা ডাইনা টিএসি (DynaTAC) মডেলের ফোনটি।

সেই মোবাইলের দাম ছিল ৪ হাজার ডলার, বর্তমান সময়ে যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকারও বেশি। এ ছাড়া তখন কল রেট ছিল অনেক বেশি। সেই যুগে মোবাইল অনেকটা বড়োলোকদের খেলনা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই মোবাইলটি অনেকের কাছে ইটের মতো, আবার কারও কাছে জুতার মতো দেখতে মনে হয়েছে। তাই অনেকে এটাকে বলত দি ব্রিক (The Brick)। আবার অন্যরা বলতো সু ফোন (Shoe Phone)। তবে মার্টিন কুপার এর নাম দিয়েছিলেন ডায়নামিক অ্যাডাপটিভ টোটাল অ্যারিয়া কভারেজ; সংক্ষেপে (ডায়নাট্যাক)। সেই মোবাইল ফোন যে মানুষের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো কেউ উপলব্ধিও করেনি!

বর্তমানের মোবাইল ফোনে রেডিও, টিভি, মিউজিক প্লেয়ার, ক্যামেরা, ইন্টারনেটসহ কী নেই! বর্তমান পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশের বেশি লোক মোবাইল ফোন যোগাযোগের আওতায় এসেছে এবং ৫১১ কোটির বেশি মানুষ নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে।সেই মটোরোলা দিয়ে শুরু হলেও বর্তমান বিশ্বের স্মার্টফোন বাজারে ৭৬ শতাংশ দখল করে রেখেছে মাত্র ১০টি কোম্পানি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা যেমন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সহজে যোগাযোগ করতে পারছি; মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার উদ্ভাবিত ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে সৌরজগতের বাইরে পর্যন্তও যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

সেই প্রযুক্তি দিয়েই ১৯৭৭ সালে নাসা ভয়েজার মিশন পরিচালনা করেছিল। এখনো পর্যন্ত পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করা মানুষের তৈরি বস্তু হলো ভয়েজার-১। উৎক্ষেপণের ৪৪ বছর পরেও এখনো পর্যন্ত ভয়েজার সক্রিয় রয়েছে। একুশ শতকে এসে মোবাইল ফোন আমাদের জীবন-যাপন পদ্ধতি আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে। এখন মোবাইল ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও চলে না! ভবিষ্যতে স্মার্টফোনে আরও কোন কোন চমকপ্রদ প্রযুক্তি যুক্ত হয়; তা দেখার অপেক্ষায়।
সূত্র: ইন্টারনেট
দেশকন্ঠ/এআর

 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।