• বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
    ৯ আশ্বিন ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ১৫:১৭

নেই দরজা-জানালা-বেড়া ও শিক্ষার্থী আছেন শুধু শিক্ষক আর সাইনবোর্ড

  • জাতীয়       
  • ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩       
  • ৩৬
  •       
  • ০২-০২-২০২৩, ১০:০০:০৬

দেশকন্ঠ প্রতিবেদন : কুড়িগ্রামে শিক্ষার্থী আর অবকাঠামো ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাঁকা জমিতে আছে শুধু পতাকা, সাইনবোর্ড আর শিক্ষক। চারদিকে কৃষি জমি। জমির মাঝখানে চোখে পড়বে একটি টিনের চাল। যার বেড়া-দরজা-জানালা কিছুই নেই। শুধুমাত্র টিনের চালার সামনে বাঁশের মধ্যে লাগানো জাতীয় পতাকা আর সামনে একটি সাইনবোর্ডে লেখা উত্তর মাঝের চর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুটি ভাঙা বেড়া আর কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার এবং একটি মাত্র টেবিলের ওপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর হাজিরা খাতা। সেখানে দুয়েকজন অভিভাবকসহ বসে আছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। নেই কোনো শিক্ষার্থীর কোলাহল কিংবা শিক্ষকদের পাঠদানের ব্যস্ততা। এমনি এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খোঁজ মিলেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে। গত মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়। চর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র দেখে জরাজীর্ণ বললেও ভুল হবে। বিদ্যালয়টিতে শুধুমাত্র কাগজ কলমে ৮০ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৫ জন শিক্ষক। মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর মৌজায় ২০০৪ সালে বেসরকারিভাবে গঠিত উত্তর মাঝের চর আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু নিচু স্থান হওয়ায় বন্যার পানিতে ডুবে থাকে বছরের অধিকাংশ সময়। তাই ২০১১ সালে পাশেই উত্তর মাঝের চর গ্রামে উঁচু স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যালয়টি। সেখানে থাকাকালীন ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। গত বছরের বন্যায় ধরলা নদীর ভাঙনে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী চর কৃষ্ণপুর গ্রামের চর কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভেঙে যায়। এরপর সেই বিদ্যালয়টিও স্থানান্তরিত করা হয় উত্তর মাঝের চর গ্রামেই।
 
পাশাপাশি দু’টি বিদ্যালয়ের অবস্থান হওয়ায় উত্তর মাঝের চর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পূর্বের স্থানে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এরপর থেকেই বিদ্যালয়টির এমন দশা তবে এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো পদক্ষেপ। বিদ্যালয়ের পরিবেশ না থাকায় সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছেন না অভিভাবক। ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক আশরাফিয়া বিনতে আকতার বলেন, বিদ্যালয়ে আসার কোনো পথ নেই। জমির আইল দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। এজন্য বাচ্চারা বিদ্যালয়ে আসে না। বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী আসে। জমির আইল ভেজা থাকায় প্রায় সময় পিছলে পরে আহত এবং পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। অভিভাবক লাইলী বেগম বলেন, সরকারি স্কুল হলেও এখানে ঘর, বেড়া, টিউবওয়েল, ল্যাট্রিন এমন কি স্কুলে আসার রাস্তাও নেই। এমন পরিবেশে কোনো অভিভাবক কী তার সন্তান দিতে পারে?
 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় স্থানান্তর আর জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এমন করুণ চিত্র। দানকৃত জমিতে দাগ নাম্বারের সমস্যার কারণে নতুন ভবন হচ্ছে না। অথচ একই মালিকের জমি বিদ্যালয়ের চারপাশে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ আসলেও অর্থ ছাড় হচ্ছে না জমি জটিলতার কারণে। জমিদাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, আমি এক বিঘা জমি দান করেছি বিদ্যালয়ের নামে। এখন জমি সংক্রান্ত কী জটিলতা হয়েছে তারাই ভালো জানে। প্রায় দু’বছর থেকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি না থাকা এবং বিদ্যালয়ের উন্নয়ন না হবার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী। সদরের সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কানিজ আখতারের কাছে বিদ্যালয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না থাকায় প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি শিক্ষকদের ফোনে অফিস আসার নিদের্শ দেন। সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, জমি সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় ভবন করা যাচ্ছে না। সদর এসিল্যান্ডসহ (ভূমি কর্মকর্তা) বিদ্যালয়ের স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে প্রধান শিক্ষককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষককের অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ের নাজুক অবস্থা।
দেশকন্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।