- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
দেশকন্ঠ প্রতিবেদক : পঞ্চগড়ে কলেজপড়ুয়া মেয়ের ধর্ষণের বিচার না পেয়ে অসহায় বাবার আত্মহত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে পঞ্চগড় সদর ও আটোয়ারী থানায় মামলা দুটি করেন মৃত ব্যক্তির ছেলে। আসামিরা হলেন—পলাশ চন্দ্র বর্মন (২৫), তার বাবা শ্যামল চন্দ্র বর্মন (৪৬), একই এলাকার মৃত ধনবর বর্মনের ছেলে ভবেন বর্মন (৫০) এবং অলকান্ত বর্মনের ছেলে কাজল বর্মন (২৩)। মামলার বাদী জানান, তার বোনকে তুলে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানি করেন পলাশ চন্দ্র বর্মন। এ ঘটনার বিচার দাবি করলে বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিয়ে সুরাহার আশ্বাস দেন ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন। কিন্তু, ঘটনার ১৫ দিন পার হলেও কোনো সুরাহা করতে পারেননি তিনি। বারবার চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েও কোনো বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তার বাবা (৫০)। ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে গলায় চাদর পেঁচিয়ে বাড়ির অদূরে আবাদি জমির পাশের একটি পাকুর গাছের ডালের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, কলেজপড়ুয়া ওই তরুণীকে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন পলাশ চন্দ্র বর্মন। এতে সহযোগিতা করেন কাজল। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে গেলে পলাশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পলাশ সেখান থেকে পালিয়ে যান। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন ওই তরুণী। চিকিৎসাধীন ছিলেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালেও। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি সুরাহার আশ্বাস দেন। পরদিন চেয়ারম্যানের কথামতো আসামি কাজলের বাড়িতে বসা হয়। কিন্তু, সেখানে সুরাহার পরিবর্তে মামলার বাদী এবং তার বাবাকে আসামিরা উল্টো হুমকি দেন। পরে চেয়ারম্যান আরও তিন-চার দিন সময় চান মীমাংসার জন্য। পরে তিনি কালক্ষেপণ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
মামলার বাদী বলেন, চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতা দেখে ২৪ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দেই। পরে চেয়ারম্যান আমাদের নোটিসের মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারি ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলেন। কিন্তু, সেদিন খবর পাই, আসামিরা সেখানে যাবেন না। চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও টালবাহানা শুরু করেন। বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় আমার বাবা ভেঙে পড়েন। এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেয়ায় পলাশের বাবা শ্যামল এবং আসামি ভবেন আমার বাবাকে তাচ্ছিল্য করেন এবং বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দেন।তিনি বলেন, আমার বাবা বাড়ি এসেই কান্নাকাটি শুরু করেন। পরে রাতে সবার অগোচরে আত্মহত্যা করেন। একাধিকবার বলার পরেও চেয়ারম্যান ন্যায়বিচার করেননি বলেই আমার বাবা বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু, আটোয়ারী থানা এলাকায় বাবার আত্মহত্যার ঘটনাস্থল, এজন্য আটোয়ারী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে মামলা করেছি। আর বোনের ধর্ষণের বিষয়ে সদর থানায় মামলা করেছি। এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন। তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে উভয় পক্ষকে নোটিস দিয়েছি। গত ১ ফেব্রুয়ারি বসার কথা ছিল। কিন্তু, অভিযোগকারীরাই আসেননি। না আসলে কিভাবে সুরাহা করব? আর আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কেন আত্মহত্যা করেছে, তা জানি না।আটোয়ারী থানার ওসি সোহেল রানা এবং সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দেশকন্ঠ/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা