• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১১ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ২১:২৩

ChatGPT সম্পর্কে এসব তথ্য কী জানেন?

দেশকন্ঠ ডেস্ক : চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। শুধু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নয়, বরং বিল গেটসের মতো ইন্ডাস্ট্রি লিডাররাও এখন এ কথাই বলছেন। এসবেরই শুরুটা অবশ্য করেছে চ্যাটজিপিটি। ওপেনএআই-এর নিয়ে আসা এই চ্যাটবটটি সাড়া ফেলেছে দুনিয়ায়। চ্যাটজিপিটি মানুষের সঙ্গে আলাপ করতে পারে একেবারে মানুষের মতো করেই। আপনি প্রশ্ন করলে আলাপচারিতার ঢঙেই আপনাকে জানিয়ে দেবে উত্তর। মিলিয়ন মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার পেয়ে এরই মধ্যে নির্দিষ্ট সাবস্ক্রিপশন ফি চালু করে ফেলেছে চ্যাটজিপিটি।অথচ এই চ্যাটজিপিটিকে আমজনতার সামনে আনতেই রাজি ছিল না নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই! চ্যাটজিপিটি সম্পর্কিত এমনই কিছু অজানা তথ্য এবার জেনে নেয়া যাক:
 
প্রথমত, চ্যাটজিপিটি নিয়ে দুনিয়ার মানুষ মশগুল থাকলেও এ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় ওপেনএআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মীরাই। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক বড় কর্তা মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসকে জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির বর্তমান বৈশিষ্ট্যকে উপকারী বলে মনে করা হচ্ছিল না। বরং চ্যাটজিপিটির বর্তমান ভার্সনকে এভাবে মুক্তি না দিয়ে পুরোপুরি ডোমেইনকেন্দ্রীক করে ফেলার পরিকল্পনা চলছিল। কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে এআই নিয়ে কাজ করা আরেকটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান বাজারে পণ্য মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করায় ওপেনএআই আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এভাবেই মানুষের সামনে আসে চ্যাটজিপিটি।
 
দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তি দুনিয়ার নেতাদের ফের নতুন যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে চ্যাটজিপিটি। এই যুদ্ধকে বলা হচ্ছে ‘এআই ওয়ার’। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, গুগল, মাইক্রোসফটসহ সব টেকজায়ান্টরা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজার দখলে উঠে-পড়ে লেগেছে। গুগল এরই মধ্যে নিয়ে এসেছে বার্ড। মাইক্রোসফট বিং আর এজ-এ চ্যাটজিপিটি যুক্ত করে ফেলেছে। আর প্রতিযোগিতার এমন যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসব প্রতিষ্ঠানের নেতারা। যেমন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই সরাসরি এসব কার্যক্রম দেখভাল করছেন। অফিসের কাজে ফিরেছেন গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন। অন্যদিকে বিল গেটস মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট টিমের সঙ্গে করছেন ঘন ঘন মিটিং। অর্থাৎ প্রযুক্তি দুনিয়ার কিংবদন্তিরা নড়েচড়ে বসেছেন চ্যাটজিপিটির আগমনে।
 
তৃতীয়ত, চ্যাটজিপিটির অভাবনীয় সাফল্যে ওপেনএআই-এর অন্যান্য কাজের গতি কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে জিপিটি-ফোরের উন্নতি থমকে গেছে। এই জিপিটি-ফোর চ্যাটজিপিটির বর্তমান ভার্সনের চেয়েও উন্নত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সেটির কাজই দ্রুত করা যাচ্ছে না চ্যাটজিপিটির কারণে। ব্যবহারকারীদের চাপ সামলাতে না পেরে জিপিটি-ফোর নিয়ে কাজ করা সুপার কম্পিউটারেও চালাতে হয়েছে চ্যাটজিপিটির মডেল। ফলে থমকে গেছে জিপিটি-ফোর নিয়ে কর্মযজ্ঞ।
 
চতুর্থত, চ্যাটজিপিটির উন্নত ভার্সন জিপিটি-ফোর শিগগিরই বাজারে ছাড়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠানটিতে অর্থ দান করা ধনকুবের রিড হফম্যান বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির তুলনায় জিপিটি-ফোর অনেক অনেক এগিয়ে। মজার বিষয় হলো, জিপিটি-ফোর মানুষের সঙ্গে মশকরাও করতে পারবে। কারণ জিপিটি-ফোরে থাকছে মানুষের মতোই সেন্স অব হিউমার!
 
পঞ্চমত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজার দখলের পেছনে শোনা যাচ্ছে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ। চ্যাটজিপিটি বানানো ওপেনএআই ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পেয়েছে মাইক্রোসফট থেকে। দুই প্রতিষ্ঠানই বলছে এই বিনিয়োগ চুক্তি কয়েক বছরের। জানা গেছে, এই বিনিয়োগের বেশির ভাগটাই ব্যয় হবে মাইক্রোসফটের ক্লাউড সার্ভিস অ্যাজুর সংক্রান্ত খাতে। কিন্তু এ নিয়ে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এ প্রক্রিয়াকে ডাকা হচ্ছে ‘ক্লাউড মানি লন্ডারিং’ নামে।
 
চ্যাটজিপিটি সম্পর্কিত সবচেয়ে আকর্ষণীয় তথ্যটি হলো, এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এখন বানাতে চাইছে আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স বা এজিআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যারাই কাজ করছে, সবার মূল লক্ষ্যই হলো এজিআই উদ্ভাবন করা। এই এজিআই-এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর নিজস্ব বিবেচনাবোধ থাকবে, নিজেই নিজের উন্নতি করতে পারবে এবং মানুষের নিয়ন্ত্রণকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে। অর্থাৎ এজিআই অনেকটাই স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই এজিআই-এর আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে এআই নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতার আপাত অবসান হবে। আর এর জন্যই ওপেনএআই দুটি পন্থায় নিজেদের প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। একটি হলো মুনাফাভিত্তিক। এই পন্থায় চ্যাটজিপিটির মতো পণ্য বাজারে ছেড়ে কিছু মুনাফা শেয়ারহোল্ডারদের ফিরিয়ে দিতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। আর অন্য পন্থায় ভিন্ন যেকোনো এআই নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের যুক্ত হওয়ার সুযোগ রেখে দিয়েছে ওপেনএআই। এই ব্যবস্থায় যখনই অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এজিআই উদ্ভাবনের কাছাকাছি চলে আসবে, তৎক্ষণাৎ নিজেদের সব প্রকল্প বন্ধ করে লাভজনক প্রকল্পের দিকে চলে যেতে পারে ওপেনএআই। প্রয়োজন হলে তখন চ্যাটজিপিটি প্রকল্পও বন্ধ করে দেয়া হতে পারে!
তথ্যসূত্র: দ্য কনভারসেশন, ফোর্বস, পিবিএস ডট ওআরজি, ওপেনএআই ডট কম ও দ্য ইকোনমিস্ট
দেশকন্ঠ/এআর 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।