দেশকন্ঠ প্রতিবেদক : আলুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ জয়পুরহাটের চাষিরা। একই সঙ্গে বিপাকে ব্যবসায়ীরাও। আর চাহিদার তুলনায় বেশি ফলন হওয়ায় এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিপণন অধিদফতর।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার খারিতা গ্রামের কৃষক মাহবুব আলম চলতি বছর তার ৩৮ বিঘা জমিতে চার হাজার মণ আলু উৎপাদন করেন। এরই মধ্যে দুই হাজার মণ বিক্রি করলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বাকিগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। জেলায় প্রতিমণ হাইব্রিড আলু ৩৯০ টাকা ও দেশি আলু ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাইকারিতে প্রতিকেজি আলু ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আলু বিক্রি করতে পারছি না। দাম অনেক কমে গেছে। অথচ বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। উৎপাদন খরচও উঠছে না। ফলে আমাদের বেহাল দশা।’
শুধু মাহবুব আলমই নন, এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন জেলার অধিকাংশ কৃষক ও ব্যবসায়ী। গত বছর বেশি লাভের আশায় ১৯টি হিমাগারে আলু রেখে শেষ মৌসুমে দাম না পেয়ে বাধ্য হয়ে হিমাগারেই রেখেছেন। তবে এ বছর মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম ভালো পেলেও বর্তমান বাজারে প্রতিদিনই দর কমছে। এক কৃষক বলেন, ‘কেউ আলু কিনছেন না। আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আলু উৎপাদন করতে যা খরচ পড়ে, সে তুলনায় দাম পাচ্ছি না।’ এদিকে আলুর আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় আক্ষেপ করে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘মৌসুমের শুরুর দিকে আলুর দাম ভালো ছিল। কিন্তু বর্তমানে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছি। আমরা ভালো দাম পাওয়ার আশায় বসে আছি, কিন্তু বেচাবিক্রি নেই।’
জেলার সব কটি হিমাগার ভরে যাওয়ায় এবং চাহিদার তুলনায় এবার বেশি উৎপাদন হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাটের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায়। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি করছি যেন দাম আরও না পড়ে যায়। সেই সঙ্গে রফতানিরও চেষ্টা করছি।’ এমন পরিস্থিতি নিরসনে আগামী বছর আলুর আবাদ কমিয়ে সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধের কথা জানিয়েছেন জয়পুরহাটের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রাহেলা পারভীন।
উল্লেখ্য, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলায় চলতি বছর ৩৮ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে ৯ লাখ ২৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে।
দেশকন্ঠ/রাসু