- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
দেশকন্ঠ প্রতিবেদক : বীরঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা জাহেরা খাতুনের সঙ্গে প্রতারণা করে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় এবিএম গোলাম কাদিরকে (জিকে বাবুল) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন গোলাম কাদির। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মোমেন বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত ২ মার্চ বীরঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা জাহেরা খাতুনের মেয়ে জুমি আক্তার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী একজন বীরাঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান। বাদীর মা একজন বীরাঙ্গনা যার বীরাঙ্গনা গেজেট নাম্বার ৪০৮ এবং মুক্তিযোদ্ধা নাম্বার ০১৮০০০৫৮৬২। বাদীর মা একজন দুস্থ নারী। বাদী এবং তার মার সঙ্গে আসামির পরিচয়ের সূত্র ধরিয়া আসামি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় এবং জাতীয় সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের মহাসচিব হিসেবে আসামি বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত উত্তর আবাসিক প্রকল্পে ফ্লাট পায়ে দেয়ার ক্ষমতা আছে মর্মে দাবি করেন। আসামির কথা বিশ্বাস স্থাপন করিয়া ফ্লাট পাওয়ার বিষয়ে বাদীর মাসহ বাদির পরিবারের সবাই উদ্বুদ্ধ করিয়া আসামি বাদী নিকট উক্ত ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেতে ৫ লাখ টাকা লাগবে বলে জানায় এবং আসামি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার একটি কাটিং বাদি এবং তার মাকে দেখিয়ে বলেন যে, গৃহঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আমার অভাধ ক্ষমতা রয়েছে। বাদী এবং তাহার পরিবার এতে আশান্বিত হয়।
আরও জানা যায়, বাদী এবং তাহার মা আসামির কথামতো ৫ লাখ টাকা জোগাড় করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঋণ ৮ লাখ টাকা উত্তোলন করেন এবং উক্ত ৮ লাখ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা ওই দিনই বিকেলে নরসিংদী থেকে ট্রেনে রওনা দিয়ে বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে গত বছরের ১০ মার্চ আসামির অফিসে এসে রাত অনুমান ৮ ঘটিকায় দিকে বাদী এবং তাহার মাতা ও বাদীর মেয়ে জামাই এবং সাক্ষী কাজী আব্দুল মুকিম সন্টু বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিতিতে আসামিকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। আসামি উক্ত টাকা পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা স্বনির্ভর পরিকল্পনা সংক্রান্ত ফরম নিজ হাতে পূরণ করেন যাহা বাদী স্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে আসামি তাহার কথামতো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেয়ে যাবেন মর্মে জানান। এরই প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও আসামির কথামতো কোনরকম ফ্ল্যাট বরাদ্দ না পাওয়ায় বাদী এবং তাহার মাতা আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করিলে আসামি আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে কালক্ষেপণ করিতে থাকে।
তারই ধারাবাহিকতায় ১০-১১ মাস অতিবাহিত হলেও বাদীর মায়ের নামে কোন ফ্লাট বরাদ্দ না হওয়া আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়া ফ্ল্যাট বরাদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামি কোন সদুত্তর দেয় না বরং বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা করিতে থাকে। এদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের কারণে প্রতি মাসে বাদী মাতার প্রাপ্ত ভাতার প্রায় অর্ধেকের বেশি টাকা কর্তন করা হয় যাহাতে অবশিষ্ট সামান্য টাকা দিয়ে বাদীর মাতার চিকিৎসাসহ সমগ্র পরিবারের ভরণপোষণ নির্বাহে অবর্ণনীয় কষ্টে পতিত হতে হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে বাদী জানতে পারেন যে, আসামি জাতীয় সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব থেকে তাহার মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেবামূলক কাজ করেন মর্মে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে আসামি উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে তাহার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন বীর মুক্তিযোদ্ধা/বীরঙ্গনাদের প্রলুদ্ধ করিয়া বিভিন্ন কৌশলে সরকারি জমি/ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন। সর্বশেষ বাদী এবং তার মা আসামির নিকট তাদের দেয়া টাকা ফেরত চাইলে আসামি বাদীকে বলেন যে, উক্ত ফ্ল্যাট বরাদ্দ পেতে হলে বর্তমানে আসামিকে আরও ১ লাখ টাকা দেয়া লাগবে না হলে ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া যাবে না। তখন বাদী এবং তার মা আর টাকা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় এবং আসামির নিকট তাদের পাওনা ৫ লাখ টাকা ফেরত চায়। তখন আসামি টাকা ফেরত দিবেনা বলে জানিয়ে দেয় এবং আসামি আরও বলে যে, তোর মায়ের দেয়া টাকা কখনোই পাবি না। আর টাকা ফেরত না দিলে তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। পারলে কিছু করিস এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর গুষ্টিশুদ্ধ শেষ করে দেব মর্মে হুমকি দেয়।
দেশকন্ঠ/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা