- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
দেশকন্ঠ ডেস্ক : প্রযুক্তির বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম চ্যাটজিপিটি। যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ওপেন এআইয়ে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) তুমুল জনপ্রিয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে চালু হয় চ্যাটজিপিটি। এরপর এটির জনপ্রিয়তা পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। এখন এই চ্যাটবটের হালনাগাদ ভার্সন জিপিটি-৪ও বাজারে এসেছে। চ্যাটজিপিটিকে যে কোনো প্রশ্নের লিখিত আকারে মানুষের মতো উত্তর দিতে পারে। কোনো কিছুর ব্যাখ্যা দিতে পারে। কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখে দিতে বললে তা লিখে দেয়। কোনো একটা বিষয়ের ওপর নিবন্ধ লিখতে বললেও লিখে দেয়। তবে এটিই একমাত্র এআইচালিত চ্যাটবট নয়। এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গুগলও তাদের নিজস্ব বার্ড চ্যাটবট এনেছে। চ্যাটজিপিটি সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে না জানলেও বার্ডের এই সক্ষমতা রয়েছে। চ্যাটজিপিটি কেবল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেটা সম্পর্কে জানে। কিন্তু এই অ্যাপ নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। একটা দল চায় চ্যাটজিপিটি বন্ধ বা স্থগিত রাখতে। আরেকটি দল এই প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। এদের অনেকেই শীর্ষ ধনীদের তালিকায়।
বিপক্ষের মানুষেরা কী বলছেন
প্রযুক্তি বিশ্বের সুপরিচিত ও প্রভাবশালী উদ্যোক্তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় উত্থানে আশঙ্কা প্রকাশ করে অন্তত ছয় মাস এসব শক্তিশালী প্রযুক্তিগুলোর প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব এআই প্রযুক্তি মানবাজাতির প্রতি হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা আছে। অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক এবং টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কও আশঙ্কা প্রকাশকারীদের তালিকায় এবং তারা চান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ের পর যাতে আর বাড়তে দেওয়া না হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে একটি খোলা চিঠিতে তারা লিখেছেন এই প্রযুক্তিটি তৈরির জন্য যে প্রতিযোগিতা বর্তমানে চলছে, সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার ১ হাজারেরও বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত ঐ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, এআই সিস্টেমে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা সমাজ ও মানব জাতির ওপর গভীর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গত মাসে চিঠিটি লেখা হয়েছে ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউট নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তির চরমপন্থি উত্থান ও জীবনের প্রতি দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করে। ইলন মাস্ক এই প্রতিষ্ঠানটির একজন উপদেষ্টা। প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অতি ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছেন।
পক্ষের মানুষদের কথা
১৯৫৭-১৯৭৪ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার ঘটে। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের মতে, গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের উন্নয়ন। বিল গেটস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মাইক্রোপ্রসেসর, কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন আবিষ্কারের মতোই প্রযুক্তিগত ভিত্তি হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষের কাজ করা, শেখা, ভ্রমণ করা, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া থেকে শুরু করে যোগাযোগ করা পর্যন্ত সবকিছুই পরিবর্তন করে ফেলবে এটি। চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল ব্যবহার করা প্রযুক্তিগুলোকে নিয়েও লিখেছেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি মাইক্রোসফটের কাছ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে, যেখানে বিল গেটস একজন উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন। বিল গেটসকে সমর্থন করেছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই এবং গুগলের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টর রে কুর্জউইল যিনি সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য সুপরিচিত।
সত্যিই উপকারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?
বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৩০ কোটি পূর্ণকালীন চাকরি প্রতিস্থাপন করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। চ্যাটজিপিটি হয়তো একটি নিবন্ধ বা একজন মানুষ সম্পর্কে ভালো কিছু লিখতে পারে। তবে এক ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু লেখার পর দেখা যায় যে, ঐ ব্যক্তি আসলে ঐ সব গুণের বা খারাপ আচরণের অধিকারী নন। যেমন আব্দুল কালাম নামটি অনেকের থাকতে পারে। দেখা যায়, চ্যাটজিপিটি বিখ্যাত কোনো কালামের তথ্য দিয়ে সাধারণ এক কালাম নিয়ে নিবন্ধ লিখে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, চ্যাটজিপিটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। এ বিষয়ে ‘হিউম্যান কমপ্যাটিবল : এআই অ্যান্ড দি প্রবলেম অব কন্ট্রোল’ নামের একটি বইয়ে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টুর্ট রাসেল বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এআই ঠিক করল যে, এটা করার সবচেয়ে সহজ উপায় পৃথিবী থেকে সব মানুষকে সরিয়ে ফেলা, কারণ পৃথিবীতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের দিক থেকে মানুষই সবচেয়ে এগিয়ে। তাকে হয়তো বলা হবে, তুমি যা চাও সবকিছুই করতে পারবে, শুধু মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না। তখন ঐ সিস্টেম কী করবে? এটি তখন আমাদের সন্তান কম নেওয়ার ব্যাপারে প্রভাবিত করবে, যতক্ষণ না পৃথিবী থেকে মানুষ শেষ হয়ে যায়। তার মতে, এসব যন্ত্রের জন্য নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এগুলো এতটাই দক্ষ হয়ে উঠছে যে, হয়তো দুর্ঘটনাবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের ভুল কোনো কাজে লাগানোর মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।
দেশকন্ঠ/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা