• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
    ১১ পৌষ ১৪৩১
    ঢাকা সময়: ০৮:২৫

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : লড়াইয়ে বিশ্বের প্রভাবশালীরা

দেশকন্ঠ ডেস্ক : প্রযুক্তির বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম চ্যাটজিপিটি। যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ওপেন এআইয়ে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) তুমুল জনপ্রিয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে চালু হয় চ্যাটজিপিটি। এরপর এটির জনপ্রিয়তা পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। এখন এই চ্যাটবটের হালনাগাদ ভার্সন জিপিটি-৪ও বাজারে এসেছে। চ্যাটজিপিটিকে যে কোনো প্রশ্নের লিখিত আকারে মানুষের মতো উত্তর দিতে পারে। কোনো কিছুর ব্যাখ্যা দিতে পারে। কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখে দিতে বললে তা লিখে দেয়। কোনো একটা বিষয়ের ওপর নিবন্ধ লিখতে বললেও লিখে দেয়। তবে এটিই একমাত্র এআইচালিত চ্যাটবট নয়। এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গুগলও তাদের নিজস্ব বার্ড চ্যাটবট এনেছে। চ্যাটজিপিটি সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে না জানলেও বার্ডের এই সক্ষমতা রয়েছে। চ্যাটজিপিটি কেবল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেটা সম্পর্কে জানে। কিন্তু এই অ্যাপ নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। একটা দল চায় চ্যাটজিপিটি বন্ধ বা স্থগিত রাখতে। আরেকটি দল এই প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। এদের অনেকেই শীর্ষ ধনীদের তালিকায়।

বিপক্ষের মানুষেরা কী বলছেন

প্রযুক্তি বিশ্বের সুপরিচিত ও প্রভাবশালী উদ্যোক্তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় উত্থানে আশঙ্কা প্রকাশ করে অন্তত ছয় মাস এসব শক্তিশালী প্রযুক্তিগুলোর প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব এআই প্রযুক্তি মানবাজাতির প্রতি হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা আছে। অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক এবং টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কও আশঙ্কা প্রকাশকারীদের তালিকায় এবং তারা চান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ের পর যাতে আর বাড়তে দেওয়া না হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে একটি খোলা চিঠিতে তারা লিখেছেন এই প্রযুক্তিটি তৈরির জন্য যে প্রতিযোগিতা বর্তমানে চলছে, সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার ১ হাজারেরও বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত ঐ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, এআই সিস্টেমে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা সমাজ ও মানব জাতির ওপর গভীর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গত মাসে চিঠিটি লেখা হয়েছে ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউট নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তির চরমপন্থি উত্থান ও জীবনের প্রতি দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করে। ইলন মাস্ক এই প্রতিষ্ঠানটির একজন উপদেষ্টা। প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অতি ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছেন।

পক্ষের মানুষদের কথা

১৯৫৭-১৯৭৪ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার ঘটে। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের মতে, গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের উন্নয়ন। বিল গেটস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মাইক্রোপ্রসেসর, কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন আবিষ্কারের মতোই প্রযুক্তিগত ভিত্তি হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষের কাজ করা, শেখা, ভ্রমণ করা, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া থেকে শুরু করে যোগাযোগ করা পর্যন্ত সবকিছুই পরিবর্তন করে ফেলবে এটি। চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল ব্যবহার করা প্রযুক্তিগুলোকে নিয়েও লিখেছেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি মাইক্রোসফটের কাছ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে, যেখানে বিল গেটস একজন উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন। বিল গেটসকে সমর্থন করেছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই এবং গুগলের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টর রে কুর্জউইল যিনি সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য সুপরিচিত।

সত্যিই উপকারী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৩০ কোটি পূর্ণকালীন চাকরি প্রতিস্থাপন করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। চ্যাটজিপিটি হয়তো একটি নিবন্ধ বা একজন মানুষ সম্পর্কে ভালো কিছু লিখতে পারে। তবে এক ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু লেখার পর দেখা যায় যে, ঐ ব্যক্তি আসলে ঐ সব গুণের বা খারাপ আচরণের অধিকারী নন। যেমন আব্দুল কালাম নামটি অনেকের থাকতে পারে। দেখা যায়, চ্যাটজিপিটি বিখ্যাত কোনো কালামের তথ্য দিয়ে সাধারণ এক কালাম নিয়ে নিবন্ধ লিখে দিয়েছে। বলা হচ্ছে, চ্যাটজিপিটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। এ বিষয়ে ‘হিউম্যান কমপ্যাটিবল : এআই অ্যান্ড দি প্রবলেম অব কন্ট্রোল’ নামের একটি বইয়ে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টুর্ট রাসেল বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এআই ঠিক করল যে, এটা করার সবচেয়ে সহজ উপায় পৃথিবী থেকে সব মানুষকে সরিয়ে ফেলা, কারণ পৃথিবীতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের দিক থেকে মানুষই সবচেয়ে এগিয়ে। তাকে হয়তো বলা হবে, তুমি যা চাও সবকিছুই করতে পারবে, শুধু মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না। তখন ঐ সিস্টেম কী করবে? এটি তখন আমাদের সন্তান কম নেওয়ার ব্যাপারে প্রভাবিত করবে, যতক্ষণ না পৃথিবী থেকে মানুষ শেষ হয়ে যায়। তার মতে, এসব যন্ত্রের জন্য নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এগুলো এতটাই দক্ষ হয়ে উঠছে যে, হয়তো দুর্ঘটনাবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের ভুল কোনো কাজে লাগানোর মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।
দেশকন্ঠ/এআর
 

  মন্তব্য করুন
আরও সংবাদ
×

পথরেখা : আমাদের কথা

আমাদের পোর্টালের নাম— pathorekha.com; পথরোখা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রতিদিনের সত্য-সংবাদের পথরেখা হিসেবে প্রমাণ করতে চাই। পথরেখা সারাদেশের পাঠকদের জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং মতামত প্রকাশ করবে। পথরোখা নিউজ পোর্টাল হিসেবে ২০২৩ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করলো। অচিরেই পথরেখা অনলাইন মিডিয়া হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। পথরোখা  দেশ কমিউনিকেশনস-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
 
পথরোখা জাতীয় সংবাদের উপর তো বটেই এর সঙ্গে রাজনীতি, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা, কৃষি, বিনোদন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিভাগকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা এবং চৌকস ফটোগ্রাফিকে বিশেষ বিবেচনায় রাখে।
 
পথরোখা’র সম্পাদক আরিফ সোহেল এই সেক্টরে একজন খুব পরিচিত ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিক হিসেবে তার দীর্ঘ ৩০ বছর কর্মজীবনে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, আজকের কাগজ, রিপোর্ট২৪ ডটকম প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সরকারী ক্রীড়া পাক্ষিক ‘ক্রীড়া জগত’ ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিক অপ্সরা নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় অনলাইন দেশকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
পথরেখা দেশের মৌলিক মূল্যবোধ, বিশেষ করে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়াও, এটি দেশের নাগরিকের মানবিক ও নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলবে। ন্যায়পরায়ণতা, নির্ভুলতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি যে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। পথরেখা রাজনৈতিক ইস্যুতে নির্দলীয় অবস্থান বজায় রাখবে। একটি নিরপক্ষ অনলাইন হিসেবে আমরা নিজেদের কর্মকাণ্ডে প্রমাণ করার শতভাগ প্রছেষ্টা করব। তবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেও কিছু ভুল হতেই পারে। যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রাখছি সব মহলেই। সততা পথে অবিচল; আলোর পথে অবিরাম যাত্রায় আমাদের পাশে থাকুন; আমরা থাকব আপনাদের পাশে।
 
উল্লেখ্য, পথরেখা হিসেবে একটি প্রকাশনী দীর্ঘদিন থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হলো অনলাইন অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রকাশ করার।