- |
- |
- জাতীয় |
- আন্তর্জাতিক |
- বিনোদন |
- ক্রীড়া |
- মত-দ্বিমত |
- শিক্ষা-স্বাস্থ্য |
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি |
- কৃষি বার্তা |
- অর্থ-বাণিজ্য-উন্নয়ন |
- সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংগঠন |
- সারাদেশ |
দেশকন্ঠ ডেস্ক : সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়নের পর, স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে সরকার প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষকদেরও আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পাঠদান পদ্ধতির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৩৩ হাজার ২৮৫টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১১ হাজার ৩০৭টি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে ৬৪ হাজার ৯২৫ টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং ১২ হাজার ল্যাব স্থাপন করা হবে। আলাপকালে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুই) প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার ওপর বেশি গুরুত্ব¡ দিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ” এর সফল বাস্তবায়ন সরকারকে উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে উৎসাহিত করেছে, যা বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য ‘ভিশন-২০৪১’ এর সাথে মিলে যায়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশকালে বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য বিজ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিভিত্তিক, দক্ষতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতা-সমর্থক শিক্ষা প্রদান করা, যা সেবা প্রদানের চেতনা এবং তাদের বিবেককে জাগ্রত করবে।” তিনি উল্লেখ করেন, “আজকের শিশুরাই আমাদের উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবে। তাই, আমরা ছাত্রদের প্রধানত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামনের দিকে অগ্রসর হওয়াসহ সমস্ত আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম করতে চাই।”
এটুআই’র তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রায় ৮০০ কর্মকর্তাকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ১ লাখেরও বেশি প্রাথমিক শিক্ষককে ডিজিটাল সামগ্রী তৈরির জন্য হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই শিক্ষকরা ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন। ফলে শ্রেণীকক্ষের অধ্যয়ন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এবং শিশুরা ক্লাসে আরও মনোযোগী হচ্ছে। প্রাথমিক স্তরের ২১টি পাঠ্য পুস্তকের ডিজিটাল বিষয়বস্তুু এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৬টি পাঠ্যপুস্তকের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল পাঠ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের জন্য ৫০ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগসহ মোট ৫৯ হাজার ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং সাউন্ড সিস্টেম প্রদান করা হয়েছে। ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর ৬টি পাঠ্যপুস্তকের ই-লার্নিং মডিউল এবং ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর জন্য ৬টি পাঠ্য পুস্তকের ই-লার্নিং উপাদান তৈরি ও আপলোড করা হয়েছে। নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ৭১০টি আইসিটি শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়ছে। ২০০৯ সাল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষককে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
৬ষ্ঠ এবং ৭ম শ্রেণীতে ৫২ টি বিষয়ের শ্রেণীকক্ষের কার্যক্রমের উপর শিক্ষকদের জন্য অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রশিক্ষণ সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে এবং সমস্ত শিক্ষককে খোলা পাঠের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ২৫৫ জন আইসিটি শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সরকারি কলেজে সেসব পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহ্যান্সমেন্ট’ প্রজেক্টে’র অধীনে সারা দেশে গণিত, ইংরেজি এবং বিজ্ঞানের ৩৭ লাখেরও বেশি অতিরিক্ত ক্লাস পরিচালিত হয়েছে। একই কর্মসূচির আওতায় গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদানের জন্য ১০ হাজার ৪৪৭ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে ২০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান-শিক্ষা উপকরণ এবং ৩০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে। ৩১ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অবকাঠামো ও জমির যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও অনলাইনে সংরক্ষণ করা হয়েছে । মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মোট ১৩৮টি নাগরিক সনদ সেবা অনলাইনে চালু করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যে কোনো নাগরিক যে কোনো স্থান থেকে অনলাইনে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। মাঠ অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম অ্যাপের আওতায় আনা হয়েছে। জিটুপি-এর অধীনে ছাত্রদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বৃত্তি পাঠানো হচ্ছে। আমরা পর্যায়ক্রমে আরও পদক্ষেপ নেব, যাতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়।
‘তারুণ্যের শক্তি’কে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির উৎস হিসেবে বিবেচনা করে, সরকার এই শক্তিকে সর্বোচ্চ করে তোলার জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এটি ২০২২ সালে কারিগরি শিক্ষায় তালিকাভুক্তির হারে স্পষ্ট, যা ২০১০ সালে মাত্র ১ শতাংশের তুলনায় ১৭.২ শতাংশ। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি হার ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকার মেধাবী, দরিদ্র এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের অধীনে সমন্বিত বৃত্তি কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও টিউশন ফি প্রদান এবং গবেষকদের ফেলোশিপ ও বৃত্তি প্রদান করছে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক কাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকার ট্রাস্টের অধীনে মাধ্যমিক পর্যায়ে বার্ষিক ৪৪ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা উপবৃত্তি দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে সরকার ট্রাস্টের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু স্কলার’ অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম বছরে ১৩ জন শিক্ষার্থীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
দেশকন্ঠ/এআর
পথরেখা : আমাদের কথা